Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫,

ভিটেমাটি রক্ষা ও বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ৭ কিলোমিটারজুড়ে মানববন্ধন

আশিকুর রহমান হৃদয়, শরীয়তপুর

আশিকুর রহমান হৃদয়, শরীয়তপুর

মে ৩, ২০২৫, ০৪:৫৫ পিএম


ভিটেমাটি রক্ষা ও বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ৭ কিলোমিটারজুড়ে মানববন্ধন

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নে পদ্মা নদীর তীরে বালুমহাল ইজারার উদ্যোগের প্রতিবাদে এবং নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে ৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিশাল মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।

শনিবার বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দা, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। তারা জানান, পদ্মা নদীতে বালুমহাল ইজারা দেয়া হলে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

জানা গেছে, কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পদ্মা নদী দ্বারা বেষ্টিত এবং এখানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। ইতোমধ্যে বহুবার নদীভাঙনের কবলে পড়ে অনেকেই তাদের সহায়-সম্বল হারিয়েছেন। জেলা প্রশাসন সম্প্রতি পদ্মা নদীর উত্তর-পূর্ব পাশে ২২.৬৩ একর জমি বালুমহাল হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ইজারার উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে সমীক্ষার জন্য পত্রও প্রেরণ করে।

জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত এলাকায় প্রচুর পরিমাণে বালু রয়েছে এবং সরকারিভাবে বালু অপসারণ করা হলে নদীভাঙন রোধে সহায়ক হতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, যদি বালু উত্তোলনের ফলে স্থানীয়দের কোনো ক্ষতি না হয়, তবে সেভাবেই প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ইজারা দেয়া হলে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বেপরোয়া বালু উত্তোলন হবে, যার ফলে নদীভাঙন আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে মোস্তফা কামাল নামের এক বাসিন্দা বলেন, "আমি নিজে দুইবার নদীভাঙনে বাড়ি হারিয়েছি। এবার যদি আবার বালু তোলা হয়, তাহলে আমরা সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে যাবো।"

সালেহা বেগম বলেন, "আমরা এখন আর কোথাও যাওয়ার জায়গা পাই না। অনুরোধ করছি, আমাদের ভিটেমাটি রক্ষায় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক।"

এ বিষয়ে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, “জেলা প্রশাসন প্রস্তাবিত জায়গা নির্ধারণ করেছে, আমরা তা সরেজমিনে পরিদর্শন করবো। স্থানীয়দের ক্ষতি না হলে তবেই বালু উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।”

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য মন্ডল বলেন, “এলাকাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ বালু রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে অপসারণ করা হলে ভাঙন কিছুটা কমতে পারে।”

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, “বালুমহাল ইজারা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বিভিন্ন দপ্তরের রিপোর্ট পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ইএইচ

Link copied!