Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৮ মে, ২০২৫,

অভিযোগ-বিতর্কে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নবঘোষিত কমিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

বেলাল হোছাইন, দক্ষিণ (চট্টগ্রাম)

বেলাল হোছাইন, দক্ষিণ (চট্টগ্রাম)

মে ৭, ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম


চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নবঘোষিত কমিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার ৫৪ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর থেকে নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কাঙ্ক্ষিত পদপ্রাপ্ত নেতারা ও তাদের অনুসারীরা আনন্দিত হলেও পদবঞ্চিতরা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 
মঙ্গলবার (৬ মে) কেন্দ্রীয় বিএনপির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর ছিল। নবগঠিত কমিটিতে মো. ইদ্রিস মিয়াকে আহ্বায়ক ও লায়ন হেলাল উদ্দিনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন ১ জন আহ্বায়ক, ১ জন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, ৮ জন যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ৪৩ জন সদস্য।

উল্লেখ্য, এর আগে ফেব্রুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন ৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তার আগে ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর গঠিত কমিটি কার্যকর ছিল ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে সর্বশেষ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠিত হয়েছিল ২০০৯ সালে, যা ২০১১ সালে পুনর্গঠিত হয় এবং ২০১৯ সালে ভেঙে দেওয়া হয়।

নবগঠিত কমিটি নিয়ে নানা বিতর্ক ও অভিযোগ উঠেছে। অনেক ত্যাগী, অভিজ্ঞ ও হেভিওয়েট নেতাকে বাদ দিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে কয়েকজন নবাগত ও বিতর্কিত নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

কমিটির ২৯ নম্বর সদস্য রাজিব জাফর চৌধুরীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। অনেকে দাবি করেছেন, তাকে বিএনপির রাজনীতিতে ৫ আগস্টের আগে তেমনভাবে দেখা যায়নি। তাঁর পিতা জাফর আহমদ চৌধুরী ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন এবং মৃত্যুর পর শেখ হাসিনা তার মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছিলেন, যা বর্তমানে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। রাজিবের মা হাসিনা জাফরও ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

এছাড়াও, কমিটির ৪৪ নম্বর সদস্য হেলাল উদ্দিনের একটি ছবি, যেখানে তিনি এক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে রয়েছেন—সেটি ঘিরেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

পটিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও নবনির্বাচিত কমিটির সদস্য এনামুল হক এনাম বলেন, “আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় এমন ১৫ জনের বেশি নেতাকে এই কমিটিতে রাখা হয়নি। বরং আওয়ামী পরিবারের সদস্য ও দোসরদের পুনর্বাসন করা হয়েছে।”

নবগঠিত কমিটিতে স্থান না পাওয়া উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক জেলা আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি গাজী শাহজাহান জুয়েল, সাবেক সাংসদ সরোয়ার জামাল নিজাম, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লেয়াকত আলী, বোয়ালখালীর হাজী ইছহাক চৌধুরী, সদস্য সচিব হামিদুল হক মান্নান, এবং সাবেক মেয়র হাজী আবুল কালাম আবু।

তবে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন বলেন, “আমরা ত্যাগীদেরই মূল্যায়ন করেছি। লেয়াকত আলীকে কয়েকবার দাওয়াত দিলেও তিনি কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেননি, তাই তাকে রাখা হয়নি। রাজিবের পিতা ২০০৭ সালেই আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন এবং হেলাল মক্কা বিএনপির সঙ্গে জড়িত।”

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম আমার সংবাদকে বলেন, “এই কমিটির মাধ্যমে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।”

ইএইচ

Link copied!