মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো:
মে ১৪, ২০২৫, ০১:৪০ পিএম
মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো:
মে ১৪, ২০২৫, ০১:৪০ পিএম
চট্টগ্রামের বহু প্রত্যাশিত কালুরঘাট রেল-কাম-সড়ক সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর আজ বুধবার সকালে উন্মোচন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্মারক উন্মোচন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ চট্টগ্রাম দক্ষিণের দুঃখ ঘোচানোর দিন। কালুরঘাট সেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি লাখো মানুষের স্বপ্ন ও যন্ত্রণার সঙ্গে জড়িত। অবশেষে সে স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে।’
কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন এই সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের সঙ্গে বোয়ালখালী ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সংযোগ আরও মজবুত হবে। পুরোনো সেতুটি ১৯৩১ সালে নির্মিত। এর মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে সেটির ওপর ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হয় হাজারো যানবাহন ও মানুষকে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের একটি প্রধান দাবি ছিল নতুন কালুরঘাট সেতু। আজ সেই দাবির বাস্তব রূপ দেখতে পাচ্ছে মানুষ।’
সেতু বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রকল্পটি ২০২৬ সালে শুরু হয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) ও ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটি (ইডিপিএফ) থেকে প্রায় ৮১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ মিলবে।
সেতুর নকশা অনুযায়ী, পুরোনো সেতুর ৭০ মিটার উজানে নির্মিত হবে নতুন সেতু। এর দৈর্ঘ্য হবে ৭০০ মিটার, সঙ্গে প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ভায়াডাক্ট। এতে থাকবে চার লেনের সড়ক ও একলেনে রেল চলাচলের ব্যবস্থা। পানি থেকে সেতুর উচ্চতা হবে ১২ দশমিক ২ মিটার।
রেলওয়ের তথ্যমতে, নতুন সেতু দিয়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে চলবে ২০ জোড়া ট্রেন এবং প্রায় ১৫ হাজার যানবাহন। সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন যেমন সহজ হবে, তেমনি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও আসবে গতি।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যে পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ডিজাইন চূড়ান্ত করার পর দ্রুত কাজ শুরু হবে।
স্মারক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যানসহ সরকারি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
বিআরইউ