আবু হানিফ, সুনামগঞ্জ
মে ১৬, ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম
আবু হানিফ, সুনামগঞ্জ
মে ১৬, ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের টুকেরগাঁও এলাকায় প্রতিবন্ধী এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় ভিডিও ধারণকারী ও তার বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৩ মার্চ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়—টুকেরগাঁও গ্রামের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক মানিক মিয়াকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করছেন একদল ব্যক্তি। ঘটনাটি দেখে স্থানীয় হাফিজ মাওলানা রুহুল আমিন মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তা ফেসবুকে পোস্ট করেন এবং জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত মানিক মিয়াকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে পার্শ্ববর্তী জগাইরগাঁও এলাকার মো. আইয়ুব আলী ও সুজাত মিয়াকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।
তবে পরবর্তীতে ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। অভিযুক্ত মো. আইয়ুব আলী আদালতে মামলা করেন, যাতে ভিডিও ধারণকারী হাফিজ মাওলানা রুহুল আমিনকে ১ নম্বর আসামি এবং তার পিতা কলমদর আলীকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়। এতে হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
টুকেরগাঁওয়ের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পঞ্চায়েত সদস্যরা একমত হয়ে বলেন—হাফিজ রুহুল আমিন কোনো অপরাধ করেননি; বরং তিনি একজন প্রতিবন্ধীকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। যারা অন্যায় করেছে, তারাই উল্টো নিরীহ মানুষকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে।
স্থানীয়রা বলেন, “এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে কেউ আর সমাজে অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে না, পুলিশের কাছেও সঠিক তথ্য দিতে ভয় পাবে।”
এ বিষয়ে হাফিজ রুহুল আমিনের পিতা কলমদর আলী জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নিরীহদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ জানান, "সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাউকে যেন হয়রানি করা না হয়, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি থাকবে।"
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে টুকেরবাজার এলাকার সাধারণ মানুষ, পঞ্চায়েত ও বিভিন্ন মহল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
ইএইচ