Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫,

ভরা গ্রীষ্মেও শীতকালীন বাঁধাকপি চাষে বাজিমাত দৌলতপুরের কৃষকদের

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

মে ৩০, ২০২৫, ০৩:১৫ পিএম


ভরা গ্রীষ্মেও শীতকালীন বাঁধাকপি চাষে বাজিমাত দৌলতপুরের কৃষকদের

প্রচণ্ড গ্রীষ্মের মাঝেও শীতকালীন সবজি বাঁধাকপি চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার একদল অগ্রণী কৃষক। আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ও গ্রীষ্মকালীন উপযোগী নতুন জাতের বাঁধাকপি ব্যবহার করে তাঁরা সফলভাবে এই মৌসুমি ফসল উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, সঠিক পরিচর্যা, পর্যাপ্ত সেচ, এবং কৃষি দপ্তরের পরামর্শ ও সহায়তায় তাঁরা এই পরীক্ষামূলক চাষে ভালো ফলন ও লাভ পেয়েছেন। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে এই বাঁধাকপি পাঠানো হচ্ছে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায়।

প্রতি বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায়, কখনো কখনো তা ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। ফলে কৃষকরা প্রতিবিঘা জমিতে ২০-৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভের মুখ দেখছেন।

তবে সাম্প্রতিক বাজারমূল্য কিছুটা কমে যাওয়ায় কিছু কৃষক হতাশাও প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ এখনও বাঁধাকপি মজুদ করে রেখেছেন, দাম বাড়ার অপেক্ষায় আছেন।

ধর্মদহ গ্রামের কৃষক ওবাইদুল ইসলাম জানান, তিনি ১২ বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রতি বিঘায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। তাঁর প্রত্যাশা, প্রতি বিঘা থেকে অন্তত ৩০-৩৫ হাজার টাকা লাভ হবে।

আরেক চাষি আজাদ হোসেন বলেন, তিনি ৩৬ শতাংশ জমিতে বাঁধাকপি চাষ করে খরচ করেছেন ৩০ হাজার টাকা, আর বিক্রি করেছেন ৮৫ হাজার টাকায়।

একই গ্রামের লালন হোসেন জানান, তিনি দেড় বিঘা জমির বাঁধাকপি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন। তবে সাম্প্রতিক বৈরি আবহাওয়ায় বাজারমূল্য কমে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী পুরো অর্থ দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন।

এ প্রসঙ্গে এক ব্যবসায়ী জানান, ঢাকায় বাঁধাকপি নিতে পরিবহন খরচ পড়ে ৩০-৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে ঢাকায় পাইকারি বাজারে প্রতি পিচ বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। বাজারমূল্য কম থাকায় লাভের পরিমাণও কমে গেছে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাইউম মিলন বলেন, “মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম জানান, “গ্রীষ্মকালেও বাঁধাকপি চাষের এই সফলতা অন্য কৃষকদের উৎসাহিত করছে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, সঠিক জাত নির্বাচন এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শীতকালীন ফসল গ্রীষ্মকালেও চাষ সম্ভব। এবছর দৌলতপুরে ৭০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষ হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, কৃষকদের চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ স্থানীয় কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইএইচ

Link copied!