ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

‘ড্রাগনের রাজধানী’ গৌরীনাথপুরে প্রতিদিন ১০ কোটি টাকার বেচাকেনা

সাইফুল ইসলাম, মহেশপুর (ঝিনাইদহ)

সাইফুল ইসলাম, মহেশপুর (ঝিনাইদহ)

জুন ১৬, ২০২৫, ০৩:২৪ পিএম

‘ড্রাগনের রাজধানী’ গৌরীনাথপুরে প্রতিদিন ১০ কোটি টাকার বেচাকেনা

ড্রাগন ফলের নাম শুনলেই এখন অনেকের চোখে ভেসে ওঠে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার গৌরীনাথপুর বাজার। ‘ড্রাগনের রাজধানী’ হিসেবে খ্যাত এই বাজারে প্রতিদিন সকালেই শুরু হয় তুমুল হাকডাক; যেন ফলের সুরে জেগে ওঠে গোটা গ্রাম। প্রতিদিন এখানে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার ড্রাগন ফলের বেচাকেনা হয়। বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি সমৃদ্ধ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি।

চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও ঝিনাইদহ জেলার নানা প্রান্ত থেকে বিক্রেতারা প্রতিদিন ভোরেই হাজির হন গৌরীনাথপুর বাজারে। স্থানীয় ক্রেতাদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যাপারীরাও এখান থেকে ট্রাকে করে ড্রাগন ফল কিনে নিয়ে যান রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বড় শহরগুলোতে। বাজারটিতে বর্তমানে ৭৮টি আড়ৎ রয়েছে এবং প্রতিটি আড়তেই দিনে দিনে লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে।

মাত্র এক দশক আগেও এ অঞ্চলে ড্রাগন ফলের চাষ ছিল না বললেই চলে। এখন মহেশপুর ও আশপাশের প্রায় প্রতিটি গ্রামে রয়েছে ড্রাগনের বাগান। কৃষকরা ধান, পাট বা সবজির পরিবর্তে ঝুঁকেছেন লাভজনক এই ফলের দিকে।

মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, “ড্রাগন ফলের চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। আমরা তাদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনা ও রপ্তানির দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছি, যেন কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পান।”

ড্রাগন ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের পেশা। বাগানের শ্রমিক, পরিবহনকর্মী, আড়ৎদার, ঠেলা চালক—প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এখন অন্তত ২ হাজার মানুষ এই পেশার সঙ্গে জড়িত।

গৌরীনাথপুর গ্রামের চাষি আব্দুল মালেক বলেন, “আগে দুই একর জমিতে ধান চাষ করে যা আয় হতো, এখন এক একর জমিতেই তার দ্বিগুণ আয় হচ্ছে ড্রাগন চাষে। সারাবছর ফল পাওয়া যায়, বাজার কাছে—সব মিলিয়ে আমরা অনেকটাই স্বাবলম্বী।”

চাষিরা এখন উন্নত জাতের ড্রাগন ফল—যেমন হোয়াইট পাল্প, রেড ফ্লেশ ইত্যাদি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। কেউ কেউ অর্গানিক পদ্ধতিতেও চাষ করছেন, বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যে।

তবে সম্ভাবনার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জও রয়েছে। নেই ড্রাগন সংরক্ষণের জন্য হিমাগার, মান নিয়ন্ত্রণের ল্যাব কিংবা প্রশিক্ষিত বাগান ব্যবস্থাপকের পর্যাপ্ততা। এছাড়াও নেই সুসংহত রপ্তানি নীতি।

বাজারের আড়ৎদার মনিরুল ইসলাম বলেন, “চাহিদা অনেক, কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে অনেক সময় ফল নষ্ট হয়ে যায়। সরকার যদি প্রক্রিয়াজাতকরণ সুবিধা ও হিমাগার করে দিত, তাহলে এখান থেকে বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব হতো।”

গৌরীনাথপুর এখন শুধু একটি বাজার নয়—এটি একটি দৃষ্টান্ত। কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের সম্ভাবনার নতুন গল্প লিখছে এই অঞ্চল। ড্রাগন ফলকে ঘিরে এই পরিবর্তন শুধু অর্থনীতির নয়, বদলে দিচ্ছে মানুষের জীবনও। এখন সময় এসেছে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ সমন্বয়ের মাধ্যমে এই সম্ভাবনাকে আরও বিস্তৃত করার।

ইএইচ

Link copied!