সাজু মিয়া, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)
জুন ২১, ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে দুশ্চিন্তায় ছিলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের বান্দেরকুড়া গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী আলাল হোসেন। তার পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা।
শনিবার দুপুরে তিনি আলাল হোসেনকে রাবিতে ভর্তির জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেন।
ইউএনও জাকিয়া সুলতানা বলেন, “আলাল হোসেন একজন অদম্য মেধাবী ছাত্র। কোনো প্রতিকূলতা তাকে দমাতে পারেনি। রাবিতে ভর্তি হতে না পারার বিষয়টি জানার পরই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও তার যেকোনো প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “আলাল সমাজের জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও হার না মেনে সে কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করেছে।”
আলালের প্রতিবেশী সিফাত বলেন, “তিন ভাই-বোন সারাক্ষণ বই নিয়ে থাকে। অভাব-অনটনের মধ্যেও পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকত। প্রাইভেট পড়ার সুযোগ না থাকলেও নিজ প্রচেষ্টায় রাবিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।”
আলাল জানান, “ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোনো কোচিং বা প্রাইভেট পড়া সম্ভব হয়নি। উপবৃত্তির টাকা দিয়ে বই কিনে নিজে নিজে পড়াশোনা করেছি। ভর্তি পরীক্ষায় ৬৫ নম্বর পেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছি।”
ছোটবেলা থেকেই মেধা ও পরিশ্রমকে সঙ্গী করে অভাবের সঙ্গে লড়াই করে আসা আলাল বলেন, “আমার বাবা সবসময় বলেছেন— যত কষ্টই হোক, স্বপ্নের পেছনে ছুটতে হবে।”
শিয়ালখোওয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মানবিক শাখায় এসএসসিতে জিপিএ ৪.৩৩ এবং নামুড়ী মহাবিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৫০ পেয়েছিলেন আলাল।
আলালের বাবা কাছুম আলী বলেন, “আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে রাবিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু তার ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। প্রয়োজনে ঋণ নিয়ে ছেলেকে ভর্তি করানোর কথা ভাবছিলাম। এমন সময় ইউএনও স্যার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।”
ইএইচ