আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ
জুন ২২, ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) এলাকায় নেই কোনো আধুনিক কসাইখানা কিংবা নির্ধারিত পশু জবাই কেন্দ্র। ফলে কোনোরকম স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও তদারকি ছাড়াই প্রতিদিন নগরীর অন্তত ১৪টি বাজারে গরু, খাসি, ছাগলসহ বিভিন্ন পশু জবাই ও মাংস বিক্রি হচ্ছে। এতে জনস্বাস্থ্যে তৈরি হচ্ছে মারাত্মক ঝুঁকি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মেছুয়া বাজার, নতুন বাজার, শানকিপাড়া, চরপাড়া, কাঠগোলা, খাগডহর, কেওয়াটখালি, আকুয়া, বাকৃবি, শম্ভুগঞ্জসহ অন্তত ১৪টি বাজারে প্রতিদিনই পশু জবাই হচ্ছে খোলা জায়গায়, গোপনে ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে। এসব পশু কোথা থেকে আনা হচ্ছে, তারা স্বাস্থ্যকর কি না—তা দেখার নেই কোনো নিরীক্ষা টিম বা ভেটেনারি চিকিৎসক।
মসিকের মাস্টার রুলে কর্মরত আব্দুল হালিম জানান, গাঙ্গিনাপাড়, মেছুয়া বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন সকালে গোপনে পশু জবাই হয়। পশু শনাক্ত করে সিল মারার কাজ আমি নিজেই করি। তবে কোনো পশু চিকিৎসক অংশ নেন না।
ফলে অসুস্থ কিংবা গর্ভবতী পশু জবাইয়ের ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষার পাশাপাশি অভিযোগ রয়েছে ওজনে কম দেওয়া, নোংরা পরিবেশে মাংস সংরক্ষণ এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রির।
প্রতিটি পশুতে সিল মারার জন্য আদায় করা হচ্ছে ২০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। অথচ এই অর্থ কোথায় জমা হচ্ছে, সেটি নিয়েও নেই কোনো স্বচ্ছতা।
মসিকের খাদ্য ও স্যানিটেশন পরিদর্শক দীপক মজুমদার বলেন, আমাদের অধীনে এখনো আধুনিক কসাইখানা চালু হয়নি। পশু বিভাগের চিকিৎসকও নেই। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. এইচ.কে. দেবনাথ বলেন, নির্ধারিত পশু চিকিৎসক না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছি না। ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত জনবল পেলে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জবাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া যাবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ জেলার কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, ‘পশু জবাইয়ের আগে ও পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম রয়েছে। সিটি করপোরেশনের ভেটেনারি সার্জনের দায়িত্বে কেউ না থাকায় তারা আমাদের কাছে অতিরিক্ত সেবা চাইলে আমরা সহযোগিতায় প্রস্তুত। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায় বিগত ৮ বছর আগে সিটি করপোরেশন হওয়ার পরও এ বিষয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
এদিকে, স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন যেভাবে পশু জবাই হচ্ছে, তাতে আমরা বুঝে না বুঝে রোগও কিনে নিচ্ছি। দ্রুত আধুনিক কসাইখানা না হলে বড় বিপর্যয় ঘটবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় কমিশনার ও মসিকের প্রশাসক মো. মোখতার আহমেদ বলেন, ‘আমি খোঁজ-খবর নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করব।’
বিআরইউ