ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

প্রতিবন্ধী রুবেল হোসেন রোজগার করে বাঁচতে চান

ফয়সাল হাওলাদার, মেহেন্দিগঞ্জ

ফয়সাল হাওলাদার, মেহেন্দিগঞ্জ

জুলাই ৯, ২০২৫, ০৫:১০ পিএম

প্রতিবন্ধী রুবেল হোসেন রোজগার করে বাঁচতে চান

দুই হাত ও পায়ের ভর দিয়ে ‘উবু’ হয়ে হাঁটতে হয় রুবেল হোসেনকে (৩৫)। কারও চোখে এই দৃশ্য হয়তো কষ্টদায়ক মনে হতে পারে, কিন্তু রুবেলের জন্য এটাই বাস্তবতা। বরং এই ভঙ্গিতে চলাফেরা করেও তিনি স্বনির্ভর হতে চান—ভিক্ষা নয়, নিজের পরিশ্রমেই চালাতে চান জীবন।

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আলীমাবাদ ইউনিয়নের গাগুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা রুবেল শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হলেও মানসিকভাবে দুর্দান্ত শক্ত একজন মানুষ। সমাজকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন—ভিক্ষা এক অপমানজনক পথ, আর শ্রমই সম্মানের উপার্জন।

হাতের উপর ভর করে হাঁটেন, হাতে জুতা পরেন। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে তিনি বটতলা বাজারে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান চালান। অনেক দিন না খেয়ে কিংবা আধপেটা খেয়ে সকালেই ছুটে যান দোকানে। দৈনিক গড়ে ৪-৫ শত টাকার বিক্রিতে আয় হয় মাত্র ৬০-৭০ টাকা। তাতেই চলে ছয় সদস্যের পরিবারের খরচ—অনাহারে-অর্ধাহারে।

স্ত্রী অভাব সহ্য না করতে পেরে দুই সন্তান রেখে সংসার ত্যাগ করেছেন। রুবেল বলেন, “ছয় বছর বয়সে সানিপাতিক জ্বরে পঙ্গু হই। এরপর থেকে ২৮ বছর এভাবেই চলছি। ভিক্ষা করবো না—এটা আমার নীতি। দরকার হলে মরে যাব, তবুও কারও কাছে হাত পাতবো না। আমি শুধু একটু সাহায্য চাই, যেন দোকানে মাল তুলতে পারি, ঘরটা মেরামত করতে পারি।”

রুবেলের বাবা দিদারুল ইসলাম মোল্লা বলেন, “আমার ছেলে ৬ বছর বয়সে প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। অনেক চিকিৎসা করিয়েছি, লাভ হয়নি। বিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু অভাবের কারণে স্ত্রী সন্তান রেখে চলে গেছে। ছেলেকে বলেছিলাম ভিক্ষা করতে, সে বলে—‘প্রয়োজনে মরব, তবুও হাত পাতব না।’ তার জন্যই কষ্ট করে দোকান করে দিয়েছি।”

রুবেলের মা নিলুফা বেগম জানান, তাদের আরও এক সন্তান প্রতিবন্ধী। “আমরা দুশ্চিন্তায় থাকি—আমরা মারা গেলে ওদের কী হবে? রুবেল ভিক্ষা করবে না, বলে প্রয়োজনে না খেয়ে মরবে। এখন দোকানে মাল তুলতেও পারি না।”

রুবেলের মেয়ে সুমাইয়া, ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ে। সে জানায়,
“স্কুলে যাই কম, বাবার পাশে থাকতে হয়। বাবা ছাড়া কিছুই পারে না। বাবাকে সাহায্য করলেও কষ্ট লাগে না।”

স্থানীয় সমাজকর্মী জাকির খান বলেন, “রুবেল হোসেন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, পরিশ্রম করে বাঁচার চেষ্টাই আসল বেঁচে থাকা। তাকে সমাজের বিত্তবান ও সরকারের পাশে দাঁড়ানো উচিত।”

ইউপি সদস্য মো. ইব্রাহিম খান বলেন, “রুবেল হোসেন একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যদি সবাই তার মতো চিন্তা করত, তাহলে দেশ থেকে ভিক্ষাবৃত্তি কমে যেত।”

এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজুর রহমান বলেন, “আমি রুবেলের কথা শুনে আবেগাপ্লুত হয়েছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার ঘর নির্মাণের জন্য টিন ও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। তার দোকানে মালামালও তুলে দেওয়া হবে, যাতে সে আয় বাড়িয়ে পরিবার চালাতে পারে।”

ইএইচ

Link copied!