জসীম উদ্দিন জয়নাল, পার্বত্যাঞ্চল
জুলাই ৩০, ২০২৫, ১১:৫৪ পিএম
পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে জুলাই মাসজুড়ে উদযাপিত হয়েছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও তারুণ্যের উৎসব’। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল তরুণদের মাঝে ঐতিহাসিক চেতনা জাগ্রত করা, পার্বত্য অঞ্চলের সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং ক্রীড়ার মাধ্যমে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করা।
বুধবার ‘জুলাই পুনর্জাগরণ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা।
পুরো জুলাই মাসজুড়ে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান এই তিনটি জেলায় পৃথক তিনটি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জেলার বিভিন্ন যুব দল এতে অংশ নেয়, যা স্থানীয় তরুণদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি করে।
ফুটবল টুর্নামেন্ট কেবল প্রতিযোগিতামূলক ছিল না; এটি পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত তারুণ্যের উৎসবে, যেখানে ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সামাজিক সম্প্রীতির এক অপূর্ব সম্মিলন ঘটে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল বাঙালির আত্মপরিচয়, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই অভ্যুত্থানে শহিদদের আত্মত্যাগ জাতিকে চিরকাল প্রেরণা জোগাবে।” তিনি আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান এবং পার্বত্য অঞ্চলে এই ধরনের ইতিবাচক উদ্যোগ আরও বেশি নেওয়ার আহ্বান জানান।
টুর্নামেন্টের ফাইনাল পর্বে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা।
তারা নিজ নিজ জেলার টুর্নামেন্ট পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং তরুণদের উৎসাহ দিতে মাঠে উপস্থিত থাকেন।
এই উৎসব ও টুর্নামেন্টে স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর সক্রিয় উপস্থিতিও ছিল প্রশংসনীয়। রিজিয়ন কমান্ডার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা উৎসবের বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণ করেন, যা পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের বার্তা বহন করে।
উৎসব ও খেলা উপভোগ করেন তিন জেলার প্রায় পঞ্চাশ হাজার নারী-পুরুষ দর্শক, যারা মাঠে উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেন এবং উৎসবের আনন্দে সামিল হন। এই বিপুল দর্শকসংখ্যা প্রমাণ করে যে, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ ক্রীড়া ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর আগ্রহী এবং ঐক্যবদ্ধ।
‘জুলাই পুনর্জাগরণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও তরুণ প্রজন্মের শক্তিকে একত্রিত করে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই আয়োজন ভবিষ্যতে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন, শান্তি ও সম্প্রীতির পথে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।
ইএইচ