মিরাজ আহমেদ, মাগুরা
আগস্ট ৭, ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রত্যন্ত জনপদগুলোয় যোগাযোগ বিপ্লব ঘটাতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাস্তবায়িত ‘উইকেয়ার’ প্রকল্প।
সড়ক, কালভার্ট এবং বাজার অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে মাগুরা জেলার গ্রামীণ জীবনধারায় আসছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।
সম্প্রতি এই প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে মাগুরায় আসেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) যুগ্ম সচিব এস এম তারিফ।
এলজিইডির মাগুরা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আ. ন. ম. ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে তিনি সদর, শ্রীপুর ও মোহাম্মদপুর উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শন শেষে সন্তোষ প্রকাশ করে যুগ্ম সচিব বলেন, “উইকেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে এলজিইডি যে গুণগতমান বজায় রেখে কাজ করছে, তা দেশের জন্য একটি দৃষ্টান্ত।”
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চলমান এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে তোলা। এর আওতায় ইতোমধ্যে মাগুরায় শতাধিক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং গ্রোথ সেন্টার মার্কেট স্থাপন করা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ ও খামারপাড়ায় দুটি গ্রোথ সেন্টার ও সংলগ্ন ২৩.৭৫ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে।
সদর উপজেলার কাটাখালী, আলমখালী ও আলোকদিয়ায় তিনটি গ্রোথ সেন্টার এবং প্রায় ১৮ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলছে প্রকল্পের প্রথম ধাপে।
মোহাম্মদপুর ও শালিখা উপজেলার বিনোদপুর ও সিংড়ায় আরও দুটি গ্রোথ সেন্টার এবং প্রায় ৩০.৭ কিলোমিটার সংলগ্ন সড়কের উন্নয়নকাজও এগিয়ে চলছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আ. ন. ম. ওয়াহিদুজ্জামান আমার সংবাদকে বলেন, “এই প্রকল্প কেবল অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, এটি মানুষের জীবন ও জীবিকার পথ বদলে দিচ্ছে। আমরা চাই প্রতিটি ইট নির্ভুলভাবে বসুক—এটাই প্রকৌশলীর দায়িত্ব।”
বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আজিজুল হক বলেন, “আগে বর্ষায় রাস্তা একেবারে ভেঙে যেত। এখন পাকা রাস্তায় সহজেই পণ্য বাজারে নিতে পারছি।”
স্কুলছাত্রী পারভিন খাতুন জানান, “বৃষ্টির দিনে স্কুল যাওয়া ছিল খুব কষ্টকর। এখন আর কাদা-পানিতে হাঁটতে হয় না।”
অটো রিকশা চালক নুরুআলী বলেন, “রাস্তাঘাট ঠিক হওয়ার পর যাত্রী বেড়েছে, আয়ও বেড়েছে।”
সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে যেখানে নানা ধরনের সামাজিক ও প্রশাসনিক চাপ থাকে, সেখানে সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছে এলজিইডি’র মাগুরা টিম। নির্বাহী প্রকৌশলী আ. ন. ম. ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রকৌশলীরা গড়ে তুলেছেন একটি সফল দৃষ্টান্ত।
এক প্রকল্প কর্মকর্তা বলেন, “আমরা জানি, প্রতিটি নির্মাণকাজের পেছনে মানুষের স্বপ্ন জড়িয়ে আছে। সেই দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করছি।”
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি এই প্রকল্প শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কৃষিপণ্য পরিবহনে গতি এনেছে। উন্নয়ন এখানে কেবল অবকাঠামোগত পরিবর্তন নয়—এটি মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব তৈরির এক পথ। উইকেয়ার প্রকল্প এবং মাগুরার এলজিইডি প্রকৌশলীরা সেই পরিবর্তনের চালক হয়ে উঠেছেন, যারা আজ জনগণের আস্থার প্রতীক।
ইএইচ