ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

চাঁদাবাজি নয়, সাংবাদিক তুহিন হত্যার কারণ জানাল পুলিশ

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

আগস্ট ৮, ২০২৫, ০১:১১ পিএম

চাঁদাবাজি নয়, সাংবাদিক তুহিন হত্যার কারণ জানাল পুলিশ

গাজীপুরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে। হত্যাকাণ্ডের পরপরই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেসব পোস্টে দাবি করা হয় ‘চাঁদাবাজির লাইভ করায়, সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা’।

তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাঁদাবাজি নয়, যুবককে কোপানোর ভিডিও ধারণ করায় দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন সাংবাদিক তুহিন।

বৃহস্পতিবার রাতে মহানগরীর বাসন থানাধীন ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা মোড় এলাকার ঈদগাহ মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আসাদুজ্জামান তুহিন (৩২) ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ওষুধ সরবরাহের কাজ করতেন।

নিহত তুহিনের বন্ধু প্রত্যক্ষদর্শী শামিম বলেন, আমরা এক সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি এক নারী এক ব্যক্তিকে নাজেহাল করছে। ওই ব্যক্তি নারীটিকে আঘাত করার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওই ব্যক্তিকে আঘাত করে। এর পরই ওই ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যায়। সাংবাদিক তুহিন ঘটনাটি দেখে দৌড়ে এগিয়ে গিয়ে ভিডিও করছিল। পরে দুর্বৃত্তরা তুহিনের ভিডিও করা দেখে ওকে ধাওয়া দেয়। তুহিন দৌড়ে পালানোর সময় দুর্বৃত্তরা তাকে ধরে ফেলে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

নিহতের বড় ভাই সেলিম ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন চান্দনা গ্রামের শহীদ রওশন সড়ক এলাকার ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন তুহিন। বুধবার রাতে তিনি চান্দনা চৌরাস্তা থেকে বাসার দিকে রওনা হয়েছিলেন। এ সময় ৬/৭ জন যুবক ধারালো দা ও চাপাতি নিয়ে তাকে জনসম্মুখে ধাওয়া করে। তিনি প্রাণ রক্ষার জন্য দৌড়ে পার্শ্ববর্তী ঈদগাহ মার্কেটের চা-পান বিক্রেতা খায়রুল ইসলামের দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেন। সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে বুকে, গলায়, কাঁধে ও পিঠে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে তার গলার কিছু অংশ কেটে যায়, শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতবিক্ষত হয় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দুর্বৃত্তরা ঘটনার পর সদর্পে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় কলকারখানা ছুটি হওয়ায় আশপাশে বহু লোকজন উপস্থিত ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্রের সামনে তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি।

জিএমপির উপ-কমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয়দের কাছ থেকে তথ্য এবং আশপাশের এলাকা থেকে সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে দেখা যায়, সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাদশা মিয়া নামে এক ব্যক্তি চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ে এক নারীর সঙ্গে বিবাদে জড়ায়। বাদশা মিয়া নারীকে আঘাত কারার পর এক দল দুর্বৃত্ত ওই নারীর পক্ষ নিয়ে ধারালো চাপাতি হাতে বাদশা মিয়াকে আঘাত করে। এসময় বাদশা মিয়া দৌড়ে পালিয়ে যায়। আর এ ঘটনাটি রাস্তার পাশ থেকে মোবাইল ফোনে ভিডিও চিত্র ধারণ করছিলেন সাংবাদিক তুহিন। সন্ত্রাসীরা তুহিনকে দেখে ফেলে ভিডিও মুছে ফেলতে বলে। তুহিন ভিডিও মুছতে অস্বীকার করলে সন্ত্রাসীরা তাকে ধাওয়া দেয়। এক পর্যায়ে তুহিন দৌড়ে পালাতে থাকে। সন্ত্রাসীরাও তুহিনের পিছু নিয়ে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে চান্দনা চৌরাস্তার মসজিদ মার্কেটের সামনে একটি দোকানের কাছে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তুহিনের মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।

পুলিশ জানায়, যে নারীটির সঙ্গে বাদশা মিয়ার বিবাদ হয় সে নারীর নাম গোলাপী। ওই নারী অনৈতিক কাজে জড়িত। সে মানুষের সঙ্গে কৌশলে সম্পর্ক তৈরি করে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে সব লুটে নেয়। এটি কোনো চাঁদাবাজির ঘটনা নয়। নারীঘটিত একটি ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা তুহিনকে কুপিয়ে খুন করে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন খান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড তা জানার এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া ফুটেজ ও ক্লু সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করে খুনিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।

তুহিনের ফেসবুক আইডি ঘেটে দেখা গেছে, চাঁদাবাজি সম্পর্কিত কোনো লাইভ, ভিডিও বা কোনো রিপোর্ট তার আইডিতে নেই। তিনি চান্দানা চৌরাস্তা এলাকার বিভিন্ন সমস্যা ও মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে পোস্ট করতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তিনি চান্দনা চৌরাস্তার এক মিনিট ৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আপলোড করেন। এতে লেখা রয়েছে ‘যেমন খুশি তেমন রাস্তা পার হওয়ার দৃশ্য’। এর কিছু সময় আগে তিনি আরো দুটি ছবি ও ভিডিও আপলোড দেন।

এদিকে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের  খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং হত্যাকারীদের অবিলম্বে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের উদ্যোগে গাজীপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।

Link copied!