Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

ফিরে দেখা ২০২২

রিজার্ভ থেকে বিক্রি ১২ বিলিয়ন ডলার

রেদওয়ানুল হক

রেদওয়ানুল হক

ডিসেম্বর ২৬, ২০২২, ০৯:২২ পিএম


রিজার্ভ থেকে বিক্রি ১২ বিলিয়ন ডলার

চলতি ২০২২ সালে রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে ১২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ভয়াবহ ধস নেমেছে। ফলে নজীরবিহীন আর্থিক সংকটে পড়েছে দেশ। 
বছরজুড়ে আমদানির আড়ালে বিপুল অর্থপাচারের কারণে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি তৈরী হয়। একই সাথে বড় ধাক্কা আসে রেমিট্যান্স প্রবাহে। এতে দেশে তীব্র ডলার সংকট দেখা দেয়। ফলস্বরুপ রেকর্ড পতন ঘটে দেশীয় মুদ্রা টাকার দামে; বিপরীতে সীমাহীন বাড়তে থাকে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যবহৃত প্রধান মুদ্রা মার্কিন ডলারের দাম।

এলসি জটিলতায় পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে শিল্পখাত। অন্যদিকে বাজারে দেখা দেয় আমদানি পণ্যের হাহাকার। সবমিলিয়ে ২০২২ সালে ইতিহাসের এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেছে দেশের অর্থনীতি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়,  ডলারের দামে অস্থিরতা কাটাতে আমদানী এলসিতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। বিলাসী পণ্যসহ বেশ কিছু পণ্যে শতভাগ মার্জিন নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর বাজার স্বাভাবিক রাখতে ও জরুরী পণ্যের যোগান দিতে ব্যাংকগুলোর কাছে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বছরের আগস্টে বিক্রি শুরু হলেও মূলত চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডলার বিক্রির পরিমাণ বাড়তে থাকে। বছর শেষে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ডলার বিক্রি হয় রিজার্ভ থেকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর সময়ে রিজার্ভ থেকে বিক্রি করা ডলারের পরিমাণ প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) বিক্রি হয় ৫ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। পরের মাসগুলোতে ডলার বিক্রির পরিমাণ আরও বাড়তে থাকে। প্রতিমাসে ১ বিলিয়নের বেশি বিক্রি হওয়ায় ডিসেম্বর শেষ না হতেই এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ প্রতিমাসে এক বিলিয়ন করে ১২ মাসে বার বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়।

অব্যাহত ডলার বিক্রির ফলে চাপ পরে রিজার্ভে। এক বছরের ব্যবধানে ৪৬ বিলিয়ন থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে রিজার্ভ। বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ ও ধার দেওয়া আরও ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে নীট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার।

গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট ৭ বিলিয়ন ডলার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার প্রথম ছয়মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’২১) বিক্রি হয়েছে। বাকি ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন’২২) বিক্রি হয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’২২) বিক্রি হয়েছে আরও ৭ বিলিয়ন ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলার বিক্রির ফলে রিজার্ভ ধারাবাহিক কমছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিকল্প উপায় নেই। জরুরী পণ্য ও জ্বালানী কিনতে ডলার সরবরাহ করতে হচ্ছে। তবে আমদানি রপ্তানিতে ভারসাম্য সৃষ্টিতে গৃহীত বেশ কিছু পদক্ষেপ কাজে দিয়েছে। দ্রুতই বাজারে এর প্রভাব পড়বে বলে আশাবাদী কর্মকর্তারা।

কেএস

Link copied!