দশক পূর্তিতে আর্থিক সহায়তা দিলো এনআরবিসি ব্যাংক

প্রবাসী উদ্যোক্তাদের উদ্যোগে ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে এনআরবিসি ব্যাংক। 

রোববার অনাড়ম্বরভাবে ব্যাংকের এক দশক পূর্তি উদযাপন করছে ব্যাংকটি। এ উপলক্ষ্যে ১০ হাজার হত দরিদ্র মানুষদেরকে সর্বমোট ১ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 

বরিশালের আগৈলঝরা শাখা ও রংপুরের মিঠাপুকুর উপশাখায় দরিদ্রদের সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে অনুদান প্রদান শুরু হয়। এছাড়া ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালের সভাপতিত্বে প্রধান কার্যালয়ে এক দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার স্বার্থে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন করা হয়নি। সাধারণ মানুষের কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এই ১০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হচ্ছে। ব্যাংকের সিএসআর তহবিল থেকে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা করে ১০ হাজার মানুষকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। 

সর্বমোট ১ কোটি টাকা দুুস্থ অসহায় মানুষদের মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রদান করা হবে। অনলাইন প্লাটফর্ম ও অফলাইনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমাম, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, পরিচালক মোহাম্মদ ওলিউর রহমান, মোহাম্মদ নাজিম, এএম সাইদুর রহমান, লকিয়ত উল্ল্যাহ, স্বতন্ত্র পরিচালক এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) আবু এশরার, ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, ড. রাদ মজিব লালন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়াসহ ব্যাংকের উদ্যোক্তা, শেয়ারহোল্ডার ও কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক আমরা শুরু করেছিলাম দশ বছর আগে। কিন্তু এখন এটির মালিক আমানতকারীরা। আমরা পরিচালনা পর্ষদ তাদের সম্পদের কেয়ারটেকার মাত্র। 

তিনি বলেন, পবিত্র মাহে রমজানের প্রতি সম্মান জানিয়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে এক দশক পূর্তি পালন করছি। আমরা সাধারণ মানুষের সেবায় কাজ করছি। সমাজের অসহায় নিপীড়িত মানুষের জন্য আজকের দিনে ১ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। এনআরবিসি ব্যাংকের গ্রামের শাখা-উপশাখাগুলোর মাধ্যমে ১০ হাজার হতদরিদ্র মানুষদের এই অর্থ দেওয়া হবে। 

তিনি আরও বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষকে সেবা দিতে আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের শাখা-উপশাখাসহ ১ হাজার ৬১৬টি সার্ভিস সেন্টার স্থাপন করেছি। এই সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে প্রতিমাসে ১ কোটি মানুষকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে ৫৩ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি করে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যাদের মাধ্যমে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। 

ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু বলেন, আমরা প্রবাসীরা চেয়েছি সাধারণ মানুষের কল্যাণ। আমরা ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবসা করতে আসিনি, মানুষকে সেবা করতে এসেছি। 

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়া বলেন, পরিচালনা পর্ষদের সুদক্ষ পরিচালনা নীতি ও কৌশলের কারণে এনআরবিসি ব্যাংক মাত্র দশ বছরেই ব্যাংক ব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে অন্যতম মাইলফলকে পরিণত হয়েছে। দেশব্যাপী বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যাংকটি সব শ্রেণির মানুষদেরকে নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ব্যাংকটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ১৫ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করে ১৩ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। গত বছরে ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ হাজার ৬০৩ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। প্রবাসীরা ব্যাংকটির মাধ্যমে ১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। 

এমএইচআর