Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫,

অর্থপাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে পারে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ১২, ২০২৫, ০২:৪২ পিএম


অর্থপাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে পারে সরকার

বিদেশে অর্থপাচারে অভিযুক্ত ধনকুবেরদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতায় যেতে পারে বাংলাদেশ সরকার। পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনার এ উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব তথ্য জানান।

আহসান মনসুর বলেন, অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে দেওয়ানি মামলার মাধ্যমে সমঝোতা হতে পারে। তবে কারা এ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হবেন, সে বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি।

বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মামলা পরিচালনার জন্য প্রায় ১০ কোটি ডলারের একটি তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। এই তহবিলের মাধ্যমে আগামীর বিচারিক লড়াই চালানো হবে বলে জানান গভর্নর।

গত আগস্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দাবি করেছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে সরকারঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা কয়েকশ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছেন। ইতোমধ্যে ইউনূস সরকার উচ্চ অগ্রাধিকারভুক্ত ১১টি দুর্নীতির মামলার তদন্ত শুরু করেছে, যার বেশিরভাগই শেখ হাসিনা ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের বিরুদ্ধে।

একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের পাশাপাশি, বিদেশি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার কাজ চলছে।

গভর্নর মনসুর বলেন, সাবেক শাসকগোষ্ঠী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ দখল করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে এবং সরকারি অবকাঠামো প্রকল্পে দুর্নীতির পথেই এই বিপুল অর্থ বিদেশে সরিয়ে নিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে সরকার বিদেশি লিটিগেশন ফান্ডিং সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করছে, যারা আইনগত খরচ বহন করে এবং মামলায় জয়ী হলে ক্ষতিপূরণের একটি অংশ লাভ করে।

অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক লিটিগেশন ফান্ডার অম্নি ব্রিজওয়ে জানায়, চলতি বছরের প্রথমার্ধে তাদের প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসে গভর্নর আহসান মনসুর এবং দেশের ১৬টির বেশি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

সংস্থাটির এনফোর্সমেন্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভিয়েগার উইলিঙ্গা বলেন, “বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে এবং অনাদায়ী ঋণ পুনরুদ্ধারে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ ব্যাংকিং খাতের পাশে থাকতে প্রস্তুত।”

ইতোমধ্যে ইউনূস সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং আগামী বছরের এপ্রিল মাসে জাতীয় নির্বাচনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। 

এদিকে, সমালোচকদের দাবি—দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের আড়ালে রাজনৈতিক প্রতিশোধ চলছে।

তবে গভর্নর আহসান মনসুর জোর দিয়ে বলেন, এই প্রচেষ্টা পুরোপুরি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে পরিচালিত হবে, এবং জাতীয় স্বার্থে বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনাই এর মূল লক্ষ্য।

ইএইচ

Link copied!