ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

৫ শিক্ষক দিয়ে চলছে দুই বিভাগ

রাব্বি হোসেন

রাব্বি হোসেন

মে ২৪, ২০২২, ০৭:০২ পিএম

৫ শিক্ষক দিয়ে চলছে  দুই বিভাগ

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ। শিক্ষার্থী সংখ্যা অধিক হলেও র্দীঘদিন ধরে কলেজটির দুইটি বিভাগে রয়েছে তীব্র শিক্ষক সংকট। বিভাগ দুইটি হলো পরিসংখ্যান ও মনোবিজ্ঞান । বিভাগ দুইটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০০ জন যার বিপরীতে শিক্ষক সংখ্যা মাত্র ৫জন। যার ফলে পড়াশোনা করাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষকদের। র্দীঘদিন যাবৎ নিয়োগ না হওয়ার কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ব্যাঘাত ঘটছে পড়াশোনার পরিবেশেও। জানা যায়, শিক্ষক সংকট সমাধানে কলেজ প্রশাসন বিভিন্ন সময় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে আবেদন জানালেও এর সমাধান হচ্ছে না। উক্ত বিভাগগুলোতে নিয়োগ পদ সৃষ্টি না হওয়ার কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেও জানান শিক্ষকরা।

কলেজটির বিভাগ দুটোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরিসংখ্যান বিভাগে ৩জন শিক্ষক ও মনোবিজ্ঞানে রয়েছে মাত্র ২ জন শিক্ষক।এছাড়া গেস্ট শিক্ষক এনে ক্লাস করাতেও পোহাতে হচ্ছে বেগ।সময় মতো পাওয়া যায় না গেস্ট শিক্ষকও। দুটো বিভাগে অনার্স প্রতি বর্ষে ৭০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রতিবছরই যুক্ত হচ্ছে কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।

২০১৫ সালে তৎকালিন কলেজটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবু হায়দার আহমেদ নাছের দায়িত্বে থাকাকালিন সময়ে চালু হয়েছিলো পরিসংখ্যান বিভাগ। প্রথম দুই বছরে দুই দফায় যথাক্রমে ৫০ ও ৭০ শিক্ষার্থী অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন। তখন পরিসংখ্যান ও মনোবিজ্ঞান বিভাগ দুটো চালাতেন একজন করে মাত্র দুই জন সংযুক্ত শিক্ষক। র্দীঘ ৭বছর পেরিয়ে গেছে, দুই মেয়াদে অধ্যক্ষ পরিবর্তন হয়েছে তবুও রয়ে গেছে শিক্ষক সংকট।

সরকারি নীতিমালা অনুসারে, একটি অনার্স-মাস্টার্স মহাবিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে কমপক্ষে ১২ জন শিক্ষক থাকা উচিত, আর অন্তত ন্যূনতম আটজন থাকতেই হবে। তাদের মধ্যে কমপক্ষে একজন অধ্যাপক, দু'জন সহযোগী অধ্যাপক, দু'জন সহকারী অধ্যাপক ও তিনজন প্রভাষক থাকবেন। কিন্তু এই দুটো বিভাগের মধ্যে মনোবিজ্ঞানে শুধু মাত্র দুই জন সহযোগী অধ্যাপক সংযুক্ত রয়েছেন। আর পরিসংখ্যান বিভাগে দুইজন সহযোগী অধ্যাপক ও একজন সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সংযুক্ত রয়েছেন। এছাড়া বেশির ভাগ বিভাগেরই প্রভাষক পদ রয়েছে শূণ্য।

তিতুমীর কলেজ ঢাবি অধিভুক্ত হওয়ায় একাডেমিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণ করেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়। যার ফলে বিভাগগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের একক ক্ষমতা রয়েছে মন্ত্রনালয়ের।কলেজ থেকে বারবার আবেদন করা হলেও নিয়োগ দেয়ার হচ্ছে না শিক্ষক। তবে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জানা যায় উক্ত বিভাগে পদ সৃষ্টি করা বা শিক্ষক নিয়োগের কোনো লিখিত আবেদন করা হয়নি।

যা বলছেন শিক্ষার্থীরা:

এ বিষয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী তাসফিয়া আক্তার আমারসংবাদকে বলেন বলেন, আমাদের বিভাগের মাত্র তিন জন শিক্ষক। তিন জন শিক্ষক দিয়ে আসলে কিছুই হয়না। প্রায় সময়ই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া পরিসংখ্যান যেহেতু ম্যাথ নির্ভর বিষয় সেক্ষেত্রে শিক্ষক বেশি থাকলে সুবিধা। কিন্তু এখানে হয়েছে উল্টো। শিক্ষার্থী আছে শিক্ষক নেই। আমাদের মান সম্মত পড়াশোনা হচ্ছে না।

শুধু তাসফিয়াই নন, উষ্মা প্রকাশ করেছেন আরও অনেক শিক্ষার্থী।

যা বলছেন কলেজ প্রশাসন:

এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর তালাত সুলতানা বলেন, আমরা কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের আবেদনও করেছি। নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। তবে শিক্ষক সংকট সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় আমরা করছি। কিন্তু নিয়োগ হচ্ছে না। কলেজের পূর্বের অধ্যক্ষগণও চেষ্টা করেছেন এ বিষয়ে।

এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (সংযুক্ত) সাজিয়া আফরিন খান আমার সংবাদকে বলেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের সর্বমোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা আড়াইশো জনের মতো। কিন্তু শিক্ষক মাত্র দুই জন। মাঝে মাঝে গেস্ট শিক্ষক দিয়ে চালাতে হয়। কিন্তু সব সময় শিক্ষকও পাওয়া যায় না। অল্প বেতনে কেউ পড়াতেও আসতে চায় না। এত জন শিক্ষার্থীকে দুই জন শিক্ষক দিয়ে মানসম্মত পড়াশোনা করানো যাচ্ছে না। নিয়মিত ক্লাস ছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষাও থাকে তখন ক্লাস করানোই কষ্টকর হয়ে যায়।বিজ্ঞানের বিষয় হওয়ার কারণে আরও বেশি হিমশিম খেতে হয়।

তিনি আরও বলেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক বা প্রভাষক পদে নিয়োগ নিতে অনেকেই আগ্রহী। কিন্তু এই পদের বিপরীতে কোনো পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে না। যার ফলে আগ্রহী হয়েও কেউ আসতে পারছেন না। দেখা গেছে দেশের অনেক কলেজে এই বিভাগে শিক্ষার্থী নেই কিন্তু সেখানে শিক্ষক রয়েছেন। আর আমাদের শিক্ষার্থী আছে কিন্তু শিক্ষক সংকট। আমি মনে করি পদ সৃষ্টি না হওয়ার কারণেই এমনটা হয়েছে।

এ বিষয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো: গালিব হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩০০ জনের মতো হবে। কিন্তু শিক্ষক সংখ্যা মাত্র ৩জন। ৩জন শিক্ষক দিয়ে একটা বিভাগ চালানো খুই কষ্টকর। অন্তত ৬জন শিক্ষক প্রয়োজন। মাঝে মাঝে নামমাত্র সম্মানীর বিনিময়ে গেস্ট শিক্ষক এনে পড়ানো হচ্ছে। তাতেও আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিটি বর্ষেই ৮০শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। রেজাল্টও ভালো হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষক সংকট থাকার কারণে চাহিদা মতো পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।

শিক্ষক সংকট হওয়ার কারণে হিসেবে তিনিও অধ্যাপক সাজিয়া আফরিনের সুরে বলেন, এই পদে নিয়োগ নিতে বহু শিক্ষক আগ্রহী। র্দীঘদিন ধরেই এই পদে নিয়োগ হচ্ছে না।

যা বললেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ:

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) জনাব মুঃ ফজলুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমার সংবাদকে বলেন, মন্ত্রনালয়ে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো আবেদন করা হয়নি। কয়জন শিক্ষার্থীর ভর্তির অনুমতি কতজন, তার বিপরীতে কতজন শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা প্রয়োজন তা আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। তবে আমরা যতটুকু জানি সারাবাংলাদেশে এই বিভাগে কোন পদ খালি নেই। উক্ত কলেজ থেকে যদি জানানো হয় যে তাদের পদ খালি রয়েছে বা লিখিতভাবে আবেদন করা হয় শিক্ষক সংকট আমরা নিশ্চয়ই শূণ্য পদে নিয়োগ দিবো। সেটা সারা বাংলাদেশের যেকোন কলেজেই হোক।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক(সাধারণ প্রশাসন) বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পদ সৃষ্টি না হওয়ার পেছনে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। মাউশি কেবল আবেদন গুলো ফরোয়ার্ড করে দেয় । মাউশির কিছুই করতে হয় না। এটা আসলে জটিল কাজ। ৩টা মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত কাজ। মাউশি থেকে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও এরপর জনপ্রশাসন এ আবেদন পাঠাতে হয়। তবে অধ্যক্ষদের এ নিয়ে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। অধ্যক্ষদের আন্তরিকতা থাকলে পদ সৃষ্টি সহজ হয়। 

আমারসংবাদ/আরএইচ

Link copied!