Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

জাবিতে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যাক্ষের পদত্যাগ চায় ছাত্রীরা

মোসাদ্দেকুর রহমান, জাবি প্রতিনিধি

মোসাদ্দেকুর রহমান, জাবি প্রতিনিধি

আগস্ট ৫, ২০২২, ০২:২৩ পিএম


জাবিতে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যাক্ষের পদত্যাগ চায় ছাত্রীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাহিদ হকের পদত্যাগের দাবিতে হলের সামনে অবস্থান নিয়েছে ঐ হলের আবাসিক ছাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে ক্যান্টিনে ঝামেলার সূত্রপাত হয়। এরপর ক্যান্টিনে তালা ঝুলিয়ে হলের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রীরা। ঘটনার সাড়ে তিনঘণ্টা পার হলেও হলে উপস্থিত হননি প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক নাহিদ হক। এ অবস্থায় প্রাধ্যাক্ষকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে উল্লেখ করেছেন ছাত্রীরা।

ছাত্রীরা হল প্রাধ্যাক্ষের পদত্যাগ সহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে।

দাবিগুলো হলো- বাজে ক্যান্টিন বন্ধ করে নতুন ক্যান্টিন চালু, ডাইনিংয়ের খাবারের মান বাড়নো, হল সংস্কারের নামে দীর্ঘ সূত্রিতার দ্রুত অবসান ও সংস্কার কার্যক্রম যথাযথ পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা, নতুন নতুন নিয়মের নামে ছাত্রীদের হয়রানি বন্ধ, হল পূর্ণরূপে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করা ও রিডিং রুম নির্মাণ।

এ ব্যাপারে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী মেহের আফরোজ শাওন বলেন, প্রাধ্যাক্ষ ম্যাম কখনোই ফোন রিসিভ করেন না, বারবার কল করলে নাম্বার ব্লক করে দেন। উনি কখনোই হলে আসেন না।‌ সবসময় অসুস্থতার অজুহাত দেন। এই অবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা এমন দায়িত্বহীন প্রাধ্যাক্ষ আর দেখতে চান না। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করছি।

হলের সংস্কার কার্যক্রমের দীর্ঘসূত্রতিতা নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, হলের সংস্কার কাজে পরামর্শক হিসেবে উক্ত হলের সুপারের স্বামীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যেসব লকার ও রুম অনেকটা ঠিকঠাক আছে জোর করেও শুধুমাত্র খাতা-কলমে দেখানোর জন্য সেসব রুম সংস্কার করা হচ্ছে। খরচ বাঁচাতে দুই-তিনজনের বেশি শ্রমিককে কাজে লাগানো হচ্ছে না। এরফলে সংস্কার কাজ শেষ হতে সময় লাগছে। এসব নাটকীয়তার অবসান জরুরি৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী জানান, নতুন নিয়োগ পাওয়া ক্যান্টিনের মালিকের মেয়ে সুইটির আচরণ খুবই খারাপ। তিনি তুই-তুকারি করে কথা বলেন। এছাড়াও হলের সংস্কার কাজে দীর্ঘ সূত্রিতার জন্য শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য হল প্রভোস্টকে আমরা হলে পাই না।

দাবিগুলো সম্পর্কে হলের ওয়ার্ডেন ও পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, দাবিগুলো সম্পর্কে আমরা কিছুদিন আগে অবগত হয়েছি। শুধুমাত্র তিন মাসের জন্য হলের নতুন ক্যান্টিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আর ক্যান্টিন কর্মচারীর খারাপ আচরণের কথা আজই জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে হল প্রাধ্যাক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ হেল কাফী বলেন, যেহেতু তারা প্রাধ্যাক্ষের পদত্যাগ চাচ্ছে বিষয়টি আমরা প্রাধ্যাক্ষকে জানাবো। যদি তিনি পদত্যাগ করেন তাহলে তো প্রথম দাবি পূরণ হয়ে গেলো। নইলে আমরা তাদের বাকি দাবিগুলো পূরণ করার চেষ্টা করবো। শিক্ষার্থীদের কল্যাণ হবে এমন সিদ্ধান্তই আমরা নিবো। আশা করি শিক্ষার্থীরাও তাদের ভালোটাই বুঝবে।

এদিকে রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করতে ব্যর্থ হন। শিক্ষার্থীদের সাথে তার বাকবিতন্ডা চলছে।

উল্লেখ্য, কালু মামার ক্যান্টিন গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনী হলে ছিল। কিন্তু সেখানে পঁচা খাবার পরিবেশন করার অভিযোগে তাদের পরিবর্তন করা হয়। এরপর তারা ফজিলাতুন্নেছা হলে যান। সেখানেও রমজান মাসে পঁচা খাবার পরিবেশন ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করায় সকল শিক্ষার্থীর সম্মতিতে তাদের হল থেকে বের করে দেওয়া হয়।

আমারসংবাদ/এআই 

Link copied!