ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

লাল শাপলার ভীড়ে অতিথি পাখির রাজত্ব

তানভীর ইবনে মোবারক, জাবি

তানভীর ইবনে মোবারক, জাবি

ডিসেম্বর ২২, ২০২২, ০৩:৩১ পিএম

লাল শাপলার ভীড়ে অতিথি পাখির রাজত্ব

হেমন্তের শেষে জাবির লেকগুলোতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে লাল শাপলা। ঋতু শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে অতিথি পাখি প্রতি বছর বেড়াতে আসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিযায়ী পাখিরা লেকগুলোর সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা সৃষ্টি করে। এ যেন লাল শাপলার মাঝে অতিথিদের মিলনমেলা।

প্রতি বছর শীতে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে পাখিরা জাবির লেকগুলোতে আসে। সাধারণত হিমালয়ের উত্তরের দেশ সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপালে প্রচুর তুষারপাত ঘটে। ফলে শীতের এই সময়ে অতিথি পাখিরা তাদের আশ্রয়ের জন্য নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল খোঁজ করে।

এদিকে বাংলাদেশ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল হওয়ায় তারা বেড়াতে চলে আসে। প্রকৃতির নৈসর্গিক ক্যাম্পাস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দূর-দূরান্ত থেকে আসা এসব পরিযায়ীদের স্বাগত জানায়। অস্তমিত সূর্যের সঙ্গে সঙ্গে পাখিরা যেমন নীড়ে ফিরে যায় তেমনিভাবে শীত শেষ হতে হতেই অতিথি পাখিরাও তাদের আপন ঠিকানায় চলে যায়। প্রতি বছর এ সময়ে অতিথিকে স্বাগত জানাতে লেকগুলো যেন নতুন রূপে সাজে। ফুটন্ত লাল শাপলাগুলো যেন অতিথিদের অপেক্ষায় দিন গুনছে। আর পরিযায়ীদের আগমনে যেন লাল শাপলার মাঝে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে জাবির লেকগুলো।

তাদের কলতানে মুখরিত হয় ক্যাম্পাস। দিনভর জলকেলি, উড়ে বেড়ানো ও খুঁনসুটিতে সময় কাঁটে তাদের। যেন জলরঙে আঁকা কোন শিল্পীর তুলির ছোঁয়া। মূহুর্তেই কিচির মিচির শব্দে তাদের একটি ঝাঁক আকাশে উড়ে যায় পরক্ষণেই আরেকটি ঝাঁক এসে ঝাপ দেয় লেকের পানিতে। লাল শাপলার ফাঁকে পাখিদের এই দূরন্তপণার দৃশ্য দেখার জুড়ি নেই।  

পাখিদের দেখতে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুধুমাত্র অতিথি পাখি দেখার জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসেন পাখিপ্রেমীরা। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা ঘুরতে আসেন। অতিথি পাখিদের সঙ্গে সন্তানদের পরিচয় করিয়ে দেন, পাখিদের মাধ্যমে প্রকৃতির সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটে তাদের। পাখিদের কিচির মিচির শব্দে বিমোহিত হয় শিশুরা।

ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অতিথি পাখির এক অকৃত্রিম সম্পর্ক গড়ে উঠে। সকালে পাখির কিচির-মিচির শব্দে ঘুম ভাঙে। বিকালের আকাশে পাখির মুক্ত উড়াউড়িতে মুদ্ধ হন তারা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব অতিথি পাখি আসে, তার মধ্যে অধিকাংশই হাঁস জাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক ও পাতারি অন্যতম। এ ছাড়া অন্য প্রজাতির পাখির মধ্যে আছে মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি প্রভৃতি।

জাবির লেকগুলোতে অতিথি পাখির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতিসহ বিলুপ্ত প্রজাতির পাখিরও দেখা মেলে। সচরাচর যেসব পাখি দেখা যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- জলময়ূর, ডুবুরি, খোঁপা ডুবুরি, ছোট পানকৌড়ি, বড় পানকৌড়ি প্রভৃতি প্রজাতি।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিযায়ী পাখিদের আগমন বিগত বছরে তুলনায় অনেক কম। পাশাপাশি লেকগুলোতে পাখির আগমন ঘটেছে প্রায় দুমাস পরে। এদের সংরক্ষণে প্রশাসনের উচিত কাটা তারের বেড়া দিয়ে বাঁধ দেওয়া।

অতিথি পাখিদের প্রয়োজন নিরিবিলি আবাসস্থল। কিন্তু চৌরঙ্গীর পাশে যে লেকে পাখিরা অবস্থান করে, সেখানে দোকানের পেছনে সর্বদা শিক্ষার্থীরা আড্ডা দেয়, গল্পগুজব করে। যার ফলে পাখিরা খুবই বিরক্তবোধ করে। তাই পাখিরা লেক থেকে চলে যাচ্ছে। এখন ভিন্ন একটি লেকে অতিথি পাখিদের দেখা যায়।

পাখিমেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রতি বছরের মতো এবারও জানুয়ারির ১ম সপ্তাহে পাখি মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (এস্টেট) মো. আ. রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে লেকের সংখ্যা ২৯টি । এর মধ্যে ইজারা মুক্ত চারটি লেকেই প্রতি বছর অতিথি পাখিরা আসে। অতিথি পাখি সংরক্ষণে লেক পরিষ্কার করেছি, লেক ঘিরে দেওয়া হয়েছে লোহার বেষ্টনী। দর্শনার্থীদের জন্য নির্দেশিকা লাগানো হয়েছে যেন তারা পাখিদের বিরক্ত করা ও ঢিল ছোড়া থেকে বিরত থাকে।’

পাখিপ্রেমীদের মতে, এ বছর অতিথি পাখির সংখ্যা বিগত বছর গুলোর তুলনায় অনেক কম। ফলে চিরাচরিত সৌন্দর্য হারাচ্ছে জাবির লেকগুলো। লেকগুলোতে আগের মত নেই পাখির চিরচেনা কলতান। একইসাথে উপযুক্ত পরিবেশের কারণেও কমছে পাখির সংখ্যা।

কেএস 

Link copied!