Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪,

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জাবি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মানববন্ধন

জাবি প্রতিনিধি

জাবি প্রতিনিধি

জুন ১৪, ২০২৩, ০৫:১৬ পিএম


তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জাবি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মানববন্ধন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরাম নির্দলীয় নিরপক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে বুধবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মানববন্ধন করেছে।

মাবববন্ধনে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিমের সঞ্চালনায় বক্তারা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদ জানান।

এ সময় অফিসার সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান বাবুল বলেন, একটা বিষয় আজ নিশ্চিত৷ এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তারা বিনাভোটে ১৫৫ সিট পেয়ে গেছে৷ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থীও তাদের হাতে লাঞ্চিত হয়েছে। এ দেশের মানুষ তার অধিকার চায়। সারা বাংলাদেশ আজ নির্দলীয় সরকারের দাবিতে জেগে উঠেছে৷ একটা গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সারা বিশ্ব মাথা উচু করে দাঁড়াবে। ভোটাধিকারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের মানুষ একাত্ম হয়েছে।

শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন বলেন, আমরা বেশি কিছু চাই না। আমরা চাই জনগণ স্বাধীনভাবে কেন্দ্রে গিয়ে বাধাহীনভাবে ভোট দিক। আমেরিকার নতুন ভিসানীতিতে বলা হয়েছে সমাবেশে বাধা দিলে, ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে ভিসা দিবে না। আমাদের দেশে কি এমন পরিস্থিতি বিদ্যামন যে কারণে আমেরিকা বাধ্য হলো? সরকার প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে৷ পঞ্চদশ সংশোধনীতে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেছিলেন, আগামী ২টি নির্বাভন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে আপ্রে৷ পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই একজনের ইচ্ছার কারণে তা বাতিল করা হলো। স্বাধীনভাবে নিজের মত প্রকাশ করার অধিকার দিন।‍‍`

গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ নজরুল বলেন, এ সরকারের অধীনে যে নির্বাচনগুলো সেগুলো কতটা ফেয়ার ছিল। ২০১৪, ২০১৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছে তা  ক্যাডারবাহিনী দিয়ে হয়েছে। যে ব্যবস্থায় চারটি সুষ্ঠু নির্বাচন  হয়েছে সে ব্যবস্থা ফিরিয়া আনতে হবে। সরকার সবগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখতে চাইলে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে৷ দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব।

ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম বলেন, ‍‍`বর্তমান শাসক দল বাংলাদেশকে একটি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছি কারণ তারা নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের দলীয় প্লাটফর্মে পরিণত করেছে৷ নির্বাচনী এলাকাকে নিজেদের পছন্দমতো ক্রমানুযায়ী সাজিয়েছে। নির্বাচন কমিশনে এমন কোন ব্যক্তি নেই যারা নিরপেক্ষভাবে একটি নির্বাচন এদেশে উপহার দিতে পেরেছে। আজ আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও ক্রমান্বয়ে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে৷‍‍`

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‍‍`জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট-সিন্ডিকেটে কবে কোন ক্যাটাগরিতে নির্বাচন হয়েছে তা দলিল দস্তাবেজ খুঁজতে হবে। নিজের অধীনে নির্বাচনের জন্য আমরা এখনো উপযুক্ত হইনি। এ নির্বাচন বন্ধ করার জন্য ইইউ পার্লামেন্ট মেম্বাররা কথা বলেছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কথা বলেছে৷ এটা এখন বিশ্বসংকট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সরকার দেশের শিক্ষাখাতে এবারের বরাদ্দ ২.০৮ থেকে ১ এ নামিয়ে এনেছে। আমরা বলছি না রাতারাতি পাল্টে ফেলতে হবে। তবে এখন থেকেই জনগণের এ দাবিকে মেনে নিতে হবে৷‍‍`

সংগঠনের আহ্বায়ক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান বলেন, ‍‍`আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করেছেন। কিন্তু উদাহরণ স্থাপন করতে পারতেন। অথচ বিগত কিয়েকটি নির্বাচনে আপনারা আস্থা হারিয়েছেন। যেখানে আপনারা প্রভাব সৃষ্টি করতে পারছেন সেখানে নির্বাচন দিচ্ছে। কিন্তু যেখানে পারছেন না সেখানে দিচ্ছেন না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু নির্বাচন, সিন্ডিকেট নির্বাচন আস্তে আস্তে ধ্বংস করা হয়েছে৷এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে না পারলে মুক্তি নেই৷‍‍`

এসময় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

তানভীর/এআরএস

Link copied!