ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

বিকিনি পরা কি শিক্ষিকার অপরাধ?

ডয়চে ভেলে বাংলা

আগস্ট ১৪, ২০২২, ১২:২১ পিএম

বিকিনি পরা কি শিক্ষিকার অপরাধ?

কলকাতার প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে নীতিপুলিশির অভিযোগ৷ বিকিনি বিতর্কে অপসারিত করা হয়েছে এক শিক্ষিকাকে৷ প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষাদান করেন বলে কি ব্যক্তিস্বাধীনতা থাকবে না?

পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী ও নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট জেভিয়ার্স৷ এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ৷ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষিকাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে৷ পরে তার অভিযোগ সামনে আশায় শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক৷

বিকিনির জন্য অপসারণ?
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার অভিভাবকের অভিযোগ, শিক্ষিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় সাঁতারের পোশাক পরা ছবি পোস্ট করেছেন৷ এটা একজন শিক্ষিকার পক্ষে কাম্য আচরণ নয়৷ শিক্ষিকার দাবি, এই অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে তলব করেন এবং ইস্তফা দিতে বলা হয়৷ চাপের মুখে পড়ে চাকরি ছেড়ে দেন যাদবপুর ও জেভিয়ার্সের এই প্রাক্তণী৷ একাধিকবার থানায় অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করে লাভ হয়নি বলে তার দাবি৷ অবশেষে অভিযোগ নেয় টেকনোসিটি থানা৷ তারাই এখন বিষয়টা নিয়ে তদন্ত করছে৷ এ ব্যাপারে নীরবই রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ তারা আইনি লড়াই চালাচ্ছেন শিক্ষিকার সঙ্গে৷ প্রতিষ্ঠানের মানহানির অভিযোগে ৯৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে৷

ব্যক্তিস্বাধীনতা ঘিরে প্রশ্ন
ইনস্টাগ্রাম-এর ছবি নিয়ে আপত্তি তুলে শিক্ষিকাকে অপসারণের খবর জানা জানি হতেই হইচই পড়ে যায়৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘মিম‍‍` ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তোপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ রাজ্য মহিলা কমিশনের সাবেক চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সেন্ট জেভিয়ার্স ভারতের বাইরে নয়, আমাদের দেশের ব্যক্তিস্বাধীনতার কথা ভুললে চলবে না৷ একজন অভিভাবকের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে৷ কর্তৃপক্ষ কি অন্য অভিভাবকদের মতামত নিয়েছিলেন?‍‍`‍‍`

শৃঙ্খলার নামে নীতিপুলিশি?
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে নীতিপুলিশির৷ মূল্যবোধের নামে শিক্ষিকাকে সরিয়ে দেওয়া কি ঠিক? সম্প্রতি সাহিত্যিক সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বটতলা‍‍` উপন্যাসটিকে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে একটি জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ৷ এই কাহিনিতে একজন শিক্ষিকাকে অনেকটা এভাবেই স্কুল থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে৷ বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখে বিস্মিত সাহিত্যিক ডয়চে ভেলেকে বলেন,  ‘‘শিক্ষিকা তো বিকিনি পরে ক্লাস করেননি৷ তার একটা ব্যক্তিগত জীবন আছে৷ সেই ছবি দেখিয়ে একজন মহিলার উপর চাপ সৃষ্টি করা অন্যায়৷ দেশের সংবিধান আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ভোগ করার অধিকার দিয়েছে৷‍‍`‍‍`

নেপথ্যে হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা
শিক্ষিকার ভূমিকা নিয়ে যে কেউ প্রশ্ন তুলছেন না, এমনটা নয়৷ তাদের মতে, শিক্ষকতা পেশা হিসেবে চিকিৎসক, আইনজীবী বা অন্যান্য পেশার থেকে আলাদা৷ একজন শিক্ষক ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষাদানের সঙ্গে সঙ্গে তাদের নৈতিক মান গঠন করেন৷ সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেকটা এই মর্মেই আঙুল তুলেছে শিক্ষিকার দিকে৷ প্রশ্ন উঠেছে, ইনস্টাগ্রামে বিকিনি পরা শিক্ষিকার সম্পর্কে ছাত্রদের মধ্যে কী মনোভাব তৈরি হবে? তিনি ক্লাসে এলে পড়ুয়ারা কী চোখে দেখবেন?

যদিও অভিযুক্ত শিক্ষিকার দাবি, তিনি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ওই ছবি শেয়ার করেছেন শুধু বন্ধুদের দেখার জন্য৷ ২৪ ঘণ্টা পর তা দেখতে পাওয়ার কথা নয়৷ হ্যাকিংয়ের সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি৷

তাকে সমর্থন জানিয়ে নারী আন্দোলনের কর্মী ও অধ্যাপিকা শাশ্বতী ঘোষ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শিক্ষিকার দিকে আঙুল তোলার আগে জেভিয়ার্স কর্তৃপক্ষের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ জানানো উচিত ছিল৷ এখন কমবয়সিদের মধ্যে হ্যাকিংয়ের প্রবণতা বাড়ছে৷ তারা অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারে, সেটা হয়েছে কিনা নিশ্চিত হয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া যেতে পারতো শিক্ষিকার কাছে৷‍‍`‍‍`

পুরুষতান্ত্রিকতা
পুরো ব্যাপারটায় পুরুষতান্ত্রিকতার গন্ধও পাচ্ছেন অনেকে৷ শাশ্বতীর মন্তব্য, ‘‘কোনো শিক্ষক যদি সমুদ্রতটে শর্টস পরে ছবি তুলে সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেন, তা হলে সম্ভবত তাকে চাকরি খোয়াতে হতো না৷ কোনো ছাত্রীর অভিভাবক সেই ছবি নিয়ে অভিযোগ করতেন কি?‍‍`‍‍` সুনন্দা মুখোপাধ্যায় মনে করছেন, দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হচ্ছে ক্রমশ৷ তার ভাষায়, ‘‘আগে শিক্ষিকাদের সালোয়ার-কামিজ নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল, প্রতিবাদ হয়েছিল৷ কিন্তু শাড়ি পরে দূর থেকে স্কুলে আসতে সমস্যা হয়, এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ আজ আর সমস্যা নেই৷‍‍`‍‍`

সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘সমাজে যে ট্যাবু এখনো রয়েছে, তার জন্য সমস্যা৷ আশা করা হয় শিক্ষকরা মডেল হয়ে থাকবেন৷ মডেল তো মূর্তি, কিন্তু শিক্ষকও একজন মানুষ৷ তাকে ক্লাসরুমের বাইরে সর্বক্ষণ অনুসরণ করার দরকার কী?‍‍`‍‍`

ইএফ

Link copied!