আমার সংবাদ ডেস্ক
আগস্ট ১৮, ২০২৫, ০১:১৬ পিএম
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
আজ ট্রাইব্যুনালে তিনজন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দেবেন। তারা হলেন- শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল, প্রত্যক্ষদর্শী জসিম ও জুলাই যোদ্ধা এনাম।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনও আসামি হিসেবে রয়েছেন। এর মধ্যে নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন মামুন। বাকিরা এখনও পলাতক।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন ৯ জন। ১৭ আগস্ট চারজন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দেন। তারা হলেন- সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাদের জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
ওই দিন বেলা ১১টার পর থেকে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত চলে। তবে মাঝে বিরতি দেওয়া হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, প্রসিকিউটর মঈনুল করিম, প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা।
এদিকে, আজ সকালেও এ মামলার আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।
এর আগে, ৬ আগস্ট তৃতীয় দিনের সাক্ষ্য-জেরা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সেদিন দুজন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দেন। এর মধ্যে একজন রিনা মুর্মু ও আরেকজন একেএম মঈনুল হক।
গত ৪ আগস্ট এ মামলায় দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা হয়। ওই দিন সাক্ষী দেন পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও দিনমজুর চোখ হারানো পারভীন। তারা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিজেদের করুণ অবস্থার জন্য শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছেন। ৩ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ।
এর আগে, ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।
গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এই অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই শেষে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জমা দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
জেএইচআর