Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪,

জৌলুশ হারাচ্ছে পুরান ঢাকার ঘোড়ার গাড়ি

আবু ছালেহ আতিফ

আবু ছালেহ আতিফ

জানুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০৮:১৯ পিএম


জৌলুশ হারাচ্ছে পুরান ঢাকার ঘোড়ার গাড়ি

পুরনো দিনে ঘোড়ার গাড়ি নিত্যদিনের সঙ্গী হলেও বাস-রিকশা ও বিভিন্ন যানবাহন বাড়ায় এখন আর তেমন যাত্রী দেখা যায় না; নবাবী আমলের ২০০ বছরের সেই ঘোড়ার গাড়িতে।

পুরান ঢাকার সদরঘাটে কলেজিয়েট স্কুলের সামনে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজার পর্যন্ত এখনো অন্যান্য গাড়ির সাথে ঠক-ঠক শব্দে পাল্লা দিয়ে চলছে তেল ইঞ্জিন বিহীন এই ঘোড়ার গাড়ি।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) রাজধানীর সদরঘাট থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় সেই পুরনো সেই জৌলুশ এখন আর নেই ইঞ্জিন বিহীন ঘোড়ার গাড়ির।

স্হানীয়দের কাছে ‍‍`টমটম‍‍` নামে পরিচিত এ গাড়ি ঢাকায় প্রচলন শুরুর সময়ে ‍‍`ঠিকা‍‍` গাড়ি নামে পরিচিত ছিলো।

কোচওয়ান-হেলপারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছয়বার সদরঘাট-গুলিস্তান রুটে আসা -যাওয়া করে। একটি গাড়িতে সর্বোচ্চ ১৪-১৫ জন যাত্রী বসতে পারে। ভাড়া নেওয়া হয় জনপ্রতি ৩০ টাকা। তবে বিশেষ দিনগুলোতে ভাড়া হয়ে যায় ৫০-৬০ টাকা। বর্তমানে এ রুটে ১৫-২০ টি ঘোড়ার গাড়ি চলে।

প্রতিটি গাড়িতে একজন করে কোচওয়ান-হেলপার থাকে। তাদের পারিশ্রমিক ও ঘোড়ার খাদ্য বাবদ খরচ বাদে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয় ঘোড়ার গাড়ির মালিকদের।

শাকিল নামে এক কোচওয়ান জানান, ঢাকাইয়াদের ঐতিহ্য এ গাড়ি এখন সখের বশেই ওঠে বেশী। বিভিন্ন সময় এ গাড়ি অনুষ্ঠান, বিয়ে ও পুজোর জন্য মানুষ ভাড়া নেয় তখন দূরত্ব অনুযায়ী ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত নিয়ে থাকি। তবে, এমন পাই খুব কম।

কোচওয়ান জানান, আগে রাস্তায় ৫০ টির মত এ গাড়ি ছিলো, রিকশা, মোটরসাইকেল বাড়ায় এখন মানুষ আর উঠতে চায়না।আগে দিনে ট্রিপ ও ছিলো বেশি, জ্যামের কারনে কমে গেছে।তবে,ছুটির দিনগুলোতে রাস্তা ফাকা হওয়ায় ৮-৯ টা ট্রিপ দেওয়া যায়।

ঘোড়ার গাড়ির মালিক আজগর আলী অভিযোগ করে বলেন, ঘোড়ার গাড়ির পরিচর্যা করা সম্ভব হচ্ছেনা। ঘোড়ার ভূষি, ঘাস অন্যান্য খাবারের দাম বাড়ায় ঘোড়াকে উপযুক্ত খাবার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

তাছাড়া প্রায়ই ঘোড়া অসুস্থ হলে কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালে গেলে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায় না। তারা শুধু কিছু ওষুধ লিখে দেন কোনো রকম পরিচর্যা ছাড়া।

শখের বসে ওঠা জুবায়ের নামে এক যাত্রী বলেন, গুলিস্তান থেকে সদরঘাট বাসে ভাড়া ১০ টাকা ঘোড়ার গাড়িতে ২০ টাকা বেশি হলেও এটাতেই প্রথমবার যাচ্ছি, খুব ভালো লাগতেছে।

আগেকার দিনের রাজা-বাদশাহ, অভিজাত শ্রেণির মাধ্যমে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার হলেও পরবর্তীতে সাধারণ মানুষ ও এর ব্যবহার শুরু করে। ফলে রাজকীয় এ বাহনটি ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে ২০০ বছর মিশে আছে এখনো।

টিএইচ

Link copied!