ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ভোটের গোপন বুথে ইসির ক্যামেরা ও মৌলিক অধিকারে ছুরিকাঘাত

আমর শাইখ শাকি

আমর শাইখ শাকি

অক্টোবর ১৯, ২০২২, ১২:০৪ পিএম

ভোটের গোপন বুথে ইসির ক্যামেরা ও মৌলিক অধিকারে ছুরিকাঘাত

গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকেই সেখানে সাধারণ ভোটারদের সরব উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত এবং উপস্থিত জনসাধারণ ও গণমাধ্যমেও সেটা স্পষ্ট হয়েছে। উপনির্বাচনে মোট কেন্দ্র ছিল ১৪৫টি। এই ১৪৫টি কেন্দ্রে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত একটি ক্যামেরা প্রত্যেক কেন্দ্রের ব্যালট পেপারে সিল দেওয়ার গোপন বুথেও বসানো ছিলো যা সরাসরি নির্বাচন কমিশন তাদের আগারগাঁও এ অবস্থিত নির্বাচন ভবন থেকে পর্যবেক্ষণ করছিলো।

ডিজিটাল বাংলাদেশে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচনের অবস্থা পর্যবেক্ষণকে জনসাধারণ স্বাগত জানালেও সংকট তৈরি হয় গোপন বুথে ক্যামেরা লাগানো নিয়ে। গাইবান্ধার মত দূরের একটি জেলায় সাধারণ ভোটাররা জানতোই না যে গোপন বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে। পরবর্তীতে সাধারণ ভোটারদের অনেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারেন গোপন বুথেও ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। অনেক ভোটার বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখতে পান তারা গোপন বুথে কি করছিলেন বা কোন মার্কায় ভোট দিচ্ছিলেন। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন হওয়ায় একই সাথে ক্ষুব্ধ ও হতবাক হন তারা।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনদের মতে বাংলাদেশের সংবিধানের ৩২নং অনুচ্ছেদে ব্যক্তি স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার ও গোপনীয়তার রক্ষাকবচ সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে। কাজেই সংবিধানের আলোকেই জনগণকে কাকে ভোট দেবে বা না দেবে সেটি তার ব্যক্তি স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। নির্বাচন কমিশন তা দেখে ফেলে প্রাথমিক ভুল করে এবং সেটি গণমাধ্যম তথা দেশবাসীর সামনেও উপস্থাপন করে। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সংবিধানের ৩২নং অনুচ্ছেদ তথা ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর ছুরিকাঘাত যা মোটেও কাম্য নয়। এর ফলে মানুষের মধ্যে ভোট প্রদানে সংশয়ের সঞ্চার হবে এবং এটি একটি ওপেন সিক্রেটের মত হয়ে যাওয়াতে কেউ আর ভোট কেন্দ্রে যেতে চাইবে না।

অভিযোগ ৪৩ কেন্দ্রের, বাতিল হলো ১৪৫টি কেন্দ্র: নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলেছেন যে ১৪৫ টি কেন্দ্রের মধ্যে নির্বাচন কমিশন মোট ৪৩টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ করেছেন অনিয়মের অভিযোগে। কিন্তু তাদের মতেই বাকী ১০২টি কেন্দ্রে সঠিকভাবেই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। যেখানে দুই তৃতীয়াংশের বেশি কেন্দ্রেই সুষ্ঠু ভোট প্রদান হয়েছে, সেখানে পুরো নির্বাচন বন্ধের কারণ কি? নির্বাচন কমিশনের এহেন সিদ্ধান্ত বিশিষ্টজন এবং দেশবাসীকেও হতাশ করেছে।

মাঠ পর্যায়ের নির্বাচনী কর্মকর্তারা কি তুচ্ছ! নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমেই নিয়োগপ্রাপ্ত হন প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা। তারাই সরেজমিনে একটি নির্বাচনের চাক্ষুষ সাক্ষী হয়ে থাকেন ঠিক যেমনটি হয় ক্রিকেট বা ফুটবল খেলায় রেফারিগণ। গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে ৯৮টি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসাররা লিখিত রিপোর্টের মাধ্যমে জানিয়েছে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের নিয়োগকৃত এই মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিশ্বাস করেনি। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচন কমিশন প্রায় ৩০০ কিলো দূরে থেকে এসি রুমে বসে আর টিভি দেখেই কি একতরফা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করলো? তারা যদি এভাবেই তাদের সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন করে তাহলে এতো প্রচার-প্রচারণা, উৎসাহ প্রদান, কেন্দ্র স্থাপন, প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ তথা ভোট প্রদানেরই বা দরকার কি? ভোটে জনগণের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণের মর্মার্থটা কি?

লেখক: প্রাবন্ধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও গণমাধ্যমকর্মী

Link copied!