ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

বিজয়ে মুখে হাসি-বঙ্গবন্ধু নেই তাই চোখে জল

নূর হোসাইন

নূর হোসাইন

ডিসেম্বর ২৭, ২০২২, ০৫:৫৮ পিএম

বিজয়ে মুখে হাসি-বঙ্গবন্ধু নেই তাই চোখে জল

সাবেক অবিভক্ত ঢাকা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার ও বর্তমান ঢাকা উত্তর সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ’৭১-এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা মো. মজিবর রহমান, ছোট বেলায় স্বপ্ন দেখে প্রথমে আর্মিতে চাকরি নিবে তারপর পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়বে এবং বাঙাডল জাতির পক্ষে কাজ করবে। এমন স্বপ্ন নিয়ে এইচএসসি পাস করেই ১৯৬৮ সালে আর্মিতে তিনি তার স্বপ্ন অনুযায়ী চাকরি পেয়ে যান এবং এর আগে টাঙ্গাইল করটিয়া কলেজ এ ছাত্রলীগ নেতা থাকা অবস্থায় ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা আন্দোলনের ডাকে সারা দিয়েই তিনি প্রথম বঙ্গবন্ধুর সহযোগী হিসেবে আন্দোলন শুরু করেন। আর আর্মিতে থাকা অবস্থায় কুমিল্লা ময়নামতি ফোর বেঙ্গল থেকে ২৫ মার্চ বের হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ওয়াপদা মাঠে ২৭ মার্চ সকাল সাড়ে আটটায় জনাব খালেদ মোশারফ, মেজর সাফায়েত, ক্যাপ্টেন মতিন ও ক্যাপ্টেন গাফফারসহ অনেকের নেতৃত্বে তারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হলে বিজয়ের সময় মুখে হাসি ফুটে কিন্তু যখন বঙ্গবন্ধু হত্যার শিকার হন তারপর থেকে যত বিজয় দিবস আসে মুখে হাসি ফোটে কিন্তু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কথা মনে পড়লে চোখে জল এসে যায়, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলতে গিয়ে তিনি এমনটিই উক্তি করেন।

তিনি বলেন, আজ আমরা স্বাধীনভাবে এ দেশে বসবাস করি আমরা আর পরাধীন নই কিন্তু যার ডাকে এ দেশ স্বাধীন হলো তাকে আমার দেশের কিছু ঘাতক হত্যা করল যদিও স্বাধীনতার পক্ষের সরকার ক্ষমতায় আসায় আমরা তাদের বিচার করতে পেরেছি কিন্তু অনেকেই আবার পালিয়ে আছে দেশের বাইরে তাই তাদের বিচার কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হবে না।

সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আজ নেই তাই বিজয় দিবস আসলে মুখে হাসি ফুটলেও চোখে জল এসে যায়। তিনি তার মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলতে গিয়ে বলেন, যখন জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো এবং জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যা করা হলো তখন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো সংগঠনগুলো কোথায় ছিল। আজ বাংলাদেশে সামান্য কিছু হতে না হতেই তাদের বিভিন্ন বিবৃতি দিতে দেখা যায় এটা কাম্য নয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সে মুহূর্তে একটি মহল দেশে বিদেশে নানা ষড়যন্ত্রের জাল পেতে এ দেশের উন্নয়নের দ্বারা বাধাগ্রস্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে যা কখনই বাংলার মানুষ হতে দিবে না এবং আরো বলেন এখনো মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে আছে তাই তারা সঠিক ইতিহাস জানেন যা জনগণের মাঝে তুলে ধরবেন আর সঠিক ইতিহাস বর্তমান প্রজন্ম জানলে তাদের ষড়যন্ত্রে নতুন প্রজন্ম কখনোই তাল মিলাবে না এ জন্যই আমি সাংবাদিকের মাধ্যমে সঠিক ইতিহাস গণমাধ্যমে তুলে ধরার ইচ্ছা পোষণ করি অনেক আগে থেকেই। তবে এমন কোনো সুযোগ না পাওয়ায় এতদিন বুকে চাপা দিয়ে রাখতে হয়েছে আমার না বলা ইতিহাস আজ আপনাকে পেয়ে আমার সে আশা পূরণ হলো, মৃত্যুর আগেও হলে আমি আমার বাস্তব ইতিহাস আপনার মাধ্যমে জাতির কাছে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এখন মৃত্যু হলেও আমি শান্তি পাবো।

তিনি বলেন, আমার মতো এরকম কোনো মুক্তিযোদ্ধা যদি তার বাস্তবতার গল্প বলতে চায় আপনি তার আশা পূরণ করবেন ইনশা আল্লাহ। এই কথা বলে তিনি মূল গল্পে এসে বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ৬ দফা আন্দোলনের ডাক দেন তখন থেকেই আমি আন্দোলনে যোগ দেই। তিনি বলেন, বিশ্বে আমরাই একমাত্র জাতি যারা মাত্র নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরছি। ৩০ লাখ তাজা প্রাণ ও ২ লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ও তাদের আত্মত্যাগের ফলেই আমাদের বিজয় অর্জন সম্ভব হয়। আমাদের স্বাধীনতা তাই অনেক ত্যাগ ও দাম দিয়ে কেনা। এই বিশেষ দিবসে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ ও সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে রয়েছে কয়েকটি জাতীয় দিবস। ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অর্জনের ও আত্মগৌরবের একটি দিন ১৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাঙালি বিজয় ছিনিয়ে আনে। সেই থেকেই পৃথিবীর মানচিত্রে জায়গা করে নিই নতুন একটি দেশ বাংলাদেশ। আর সেই থেকেই দেশপ্রেমের সৃষ্টি। দেশপ্রেম হলো দেশের প্রতি ভালোবাসা। দেশের প্রতি অনুগত থাকা। ডিসেম্বর মাস বাংলাদেশ তথা বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক মাস। একটি বিজয়ের মাস। একটি গৌরবের মাস। ডিসেম্বর আমাদের প্রেরণার মাস। ডিসেম্বর আমাদের আনন্দ ও বেদনার মাস। ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে আমরা অনুভব করি ডিসেম্বর কেন বেদনার ছিল, কেনই বা অনুপ্রেরণার হল? বিজয়ের কথা যখন অনুভব করি তখন আমরা আনন্দে আত্মহারা হই।

তাই ইতিহাসকে জানতে হবে, জানাতে হবে নতুন প্রজন্মকে। বিজয়ের প্রেরণা লালন করতে হবে সবাইকে। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের হাত থেকে ভারতীয় উপমহাদেশ স্বাধীন হলেও এই ভূখণ্ডের বাঙালির স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আসেনি। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভক্ত হয় এবং পূর্ব বাংলাকে নিয়ে পাকিস্তান নামে একটি অসম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। তখন থেকেই পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বাঙালির ওপর চেপে বসে এবং শাসন, শোষণ ও নির্যাতনের স্টিম রোলার চালায়। শুধু ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্র গঠন হলেও হয়নি ভাগ্যের উন্নয়ন। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতিকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় উজ্জীবিত করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। ‘৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ‘৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, ‘৫৬-এর সংবিধান প্রণয়নের আন্দোলন, ‘৫৮-এর মার্শাল ‘ল বিরোধী আন্দোলন, ‘৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ‘৬৬-এর বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফার আন্দোলন, ৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ‘৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ৬-দফাভিত্তিক ‘৭০-এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন মুক্তিযুদ্ধকে অবধারিত করে তোলে।

এসব আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। চৌকশ নেতৃত্বেই কাল হলো বঙ্গবন্ধুর। ছক করা হলো তাকে দাবিয়ে দেয়ার। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাঙালি জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। এরই প্রেক্ষাপটে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুরু হয় রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রাখা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতেই তাকে রাষ্ট্রপতি করে গঠিত বাংলাদেশের সরকারের অধীনে পরিচালিত দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন, তাই ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস, হাসি-খুশির মাস তবে বঙ্গবন্ধু নেই তাই মুখে হাসি আসলেও যখন তার কথা মনে পরে তখন চোখে জল এসে যায়। তাই আজ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে জামাত আল বদর আল শামস এদের রাজনীতি ও থাকার কোনো অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না এবং যারা এদিকে সহযোগিতা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করেছে এবং তাদের এমপি মন্ত্রী পর্যন্ত বানিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কিত করেছে তাদের এ দেশে রাজনীতি করা ও থাকার অধিকার নেই।

তাই আজ বাংলার জনগণ তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এ জন্য তাদের বাংলাদেশে কোনো জনপ্রতিনিধিত্ব নেই বললেই চলে। তাই আমার নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান, তারা যেন সঠিক ইতিহাস যেনে আগামীর সঠিক পথ বেচে নিতে পারে এ জন্যই আমার আজ এ গল্প বলা, যাতে নতুন প্রজন্মের বঙ্গবন্ধুর সপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে সহযোগী হয়। সর্বশেষ তিনি জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে তার গল্প সমাপ্তির করেন।

লেখক : সংবাদিক, সাংবাদিকতা বিভাগ, স্টামফোর্ট ইউনিভার্সিটি

Link copied!