আমার সংবাদ ডেস্ক
জুলাই ৩১, ২০২৫, ০২:৩৩ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক সাম্প্রতিক ছাত্র-অভ্যুত্থান নিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের 'নেতৃত্ব' দাবি ও প্রচারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বলেন, “অভ্যুত্থানে শিবিরের কিছু ভূমিকা থাকলেও এটি এককভাবে শিবিরের নির্দেশে হয়নি। তাদের কোনো ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশন ছিল না।”
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভ্যারিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নাহিদ ইসলাম লেখেন, “অভ্যুত্থানে শিবিরের কিছু ভূমিকা ছিল, তবে এটি তাদের একক নেতৃত্বে পরিচালিত হয়নি। শিবির কোনো নির্দেশনা দেয়নি। আমরা সকলে মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সঙ্গে সব পক্ষের যোগাযোগ ছিল— সেটা শিবির হোক বা অন্য কোনো মতাদর্শের সংগঠন। তবে কোনো পক্ষকেই আমরা আমাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করতে দিইনি।”
নাহিদের ভাষ্য অনুযায়ী, আলোচিত ছাত্রসংগঠন ‘ছাত্রশক্তি’ গঠনের প্রক্রিয়াটি ছিল সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং বিভিন্ন মতাদর্শের সম্মিলন। তিনি বলেন, “ছাত্রশক্তির জন্ম হয়েছে ‘গুরুবার আড্ডা পাঠচক্র’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগকারী অংশ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্টাডি সার্কেলের যৌথ প্রচেষ্টায়। এটি কোনোভাবেই শিবির-প্রভাবিত সংগঠন নয়।”
তিনি আরও জানান, “আমরা দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ক্যাম্পাস রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সব রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল। তবে এটিকে শিবিরের অধীনতা বা অনুসারিতা বলা অনুচিত।”
নাহিদ ইসলাম তার পোস্টে সাদিক কায়েমের ভূমিকা নিয়েও কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, “৫ আগস্টের পর থেকে সাদিক কায়েম নিজেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সমন্বয়ক বলে পরিচয় দিচ্ছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “অভ্যুত্থানের সময় কিছু কৌশলগত কারণে সাদিককে একবার প্রেস ব্রিফিংয়ে বসানো হয়েছিল। কিন্তু পরে সে ও তার অনুসারীরা এটিকে নিজের ‘নেতৃত্ব’ হিসেবে প্রচার শুরু করে।”
নাহিদ ইসলাম আরও অভিযোগ করেন, “অভ্যুত্থানের পর একটি চক্র ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা ও গোষ্ঠীস্বার্থে তৎপর হয়ে উঠেছে। কারা এর পেছনে আছে এবং কীভাবে তারা কাজ করছে— সে বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।”
তিনি তার লেখায় পাঠচক্রভিত্তিক বিকল্প ছাত্র রাজনীতির ধারণাও তুলে ধরেন। বলেন, “‘গুরুবার আড্ডা পাঠচক্র’ শুধু একটি তাত্ত্বিক গ্রুপ নয়, এটি একটি আন্দোলনপ্রবণ, চিন্তাশীল ছাত্র রাজনীতির প্ল্যাটফর্ম। নতুন ধারার রাজনীতিতে আমাদের লক্ষ্য ছিল দল-মত নির্বিশেষে পরিবর্তনের পথ খোঁজা।”
নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্য ঢাবি-কেন্দ্রিক সাম্প্রতিক অভ্যুত্থান ও এর নেতৃত্ব নিয়ে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। ফেসবুকে পোস্ট করা এ মন্তব্য ইতোমধ্যে ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ইএইচ