ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ম্যারাডোনা থেকে যেভাবে বিশ্বজয়ী মেসি

আহমেদ হূদয়

আহমেদ হূদয়

ডিসেম্বর ২০, ২০২২, ০২:৪৯ পিএম

ম্যারাডোনা থেকে যেভাবে বিশ্বজয়ী মেসি

লিওনেল মেসি; তিনিই তো ফুটবলের রাজা; তিনিই কিংবদন্তি। সোনালি ট্রফিটাই যেন মেসিকে কিংবদন্তি হিসেবে পূর্ণতা দিয়েছে। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বিকালেও যে জাদুকরের জাদুতে একটুও ধার কমেনি— মেসি সেটাই প্রমাণ করলেন কাতার বিশ্বকাপে। তার বাঁ পায়ের জাদুতে আরও একবার মোহিত হলো পুরো বিশ্ব। এ যেন রূপকথারই এক গল্প। আর সেই রূপকথার রাজ্যের রাজা হলেন লিওনেল মেসি।

এতদিন যে স্বপ্নটা দেখত পুরো ফুটবল দুনিয়া; সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। ২০১৪ সালেও সোনালি এই ট্রফিটার দিকে কেমন অসহায়ের মতো তাকিয়ে ছিলেন মেসি। কিন্তু ছুঁয়ে দেখার ভাগ্য হয়নি। সেই ১৯৮৬ সাল। কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনার হাত ধরে সেবার দ্বিতীয় শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা।

ম্যারাডোনা অবশ্য জন্মেছিলেন রাজা হয়েই। তিনি মূলত চেয়েছিলেন নেপলসে দরিদ্র শিশুদের আদর্শ হতে। বুয়েন্স এইরেসের ধুলো পায়ে জড়িয়ে শাসন করেছিলেন ফুটবল দুনিয়াকে। যার সবকিছু ছিল মানবীয়। শুধু ওই বাঁ পা ছাড়া। সেটা সম্ভবত কোনো এক ঘুমঘুম রাতে চুরি করে এনেছিলেন ফুটবল ঈশ্বরের কাছ থেকে। সেই পা দিয়ে ফুটবলে ইতিহাস করে ৩৬ বছর আগে জিতেছিলেন বিশ্বকাপ। পরে সেই পাটি রোজারিওর এক ছোট্ট ছেলেকে দিয়েও দিয়েছিলেন।

কে জানে, রূপকথার গল্পের মতো ফুটবল ঈশ্বরও হয়তো অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন, দিয়েগো বেঁচে থাকতে এই পা আর বিশ্বকাপ জিতবে না। ম্যারাডোনাও হয়তো বুঝলেন এবার সেই ছোট্ট ছেলেটির শেষ সুযোগ। তড়িঘড়ি করে তাই চলে গেলেন অন্তরালের দুনিয়ায়। শাপমুক্ত করে দিলেন ছোট্ট রাজকুমারকে। দিয়েগো আড়াল হতেই সেই বাঁ পাও খুঁজে পেল তার আসল শক্তি। শেষবার খেলতে এসে সবচেয়ে বড় মঞ্চে জ্বলে উঠল সবকিছু জেতার লক্ষ্যে। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব কাঁপানো ফুটবলারের হাতে অবশেষে ধরা দিয়েছে সোনার ট্রফি। ২০০৬ সালেই মেসির অভিষেক। আর অভিষেকেই বাজিমাত।

২০০৬ সালের বিশ্বকাপে মাঠে নেমেই গোল করলেন; করালেন। সেখান থেকেই রূপকথার মতো ক্যারিয়ার শুরু মেসির। সেদিন থেকেই সোনালি ট্রফির খোঁজে যাত্রা শুরু। বাভারিয়ানদের দেশ থেকেই ট্রফি খোঁজ করতে শুরু করেন লিওনেল মেসি। জার্মানদের ভূমিতে গিয়েও শূন্য হাতেই ফিরতে হয় তাকে। এরপর ২০১০ সালে সোনালি ট্রফির খোঁজ করতে গেলেন নেলসন ম্যান্ডেলার দেশে।

তবে ম্যান্ডেলার দেশটিও যে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে শূন্য হাতে! চে গুয়েভারার পাড়ার ছেলেটিকে সেদিনও ফিরতে হয়েছিল মন খারাপ করেই। এরপর মেসি গেলেন প্রতিবেশী আমাজনদের দেশে। রূপকথার রাজাকে বর নিয়ে ফিরতে দেননি ব্রাজিলও। মারাকানায় গোটশে নামের এক গোস্ট সব লণ্ডভণ্ড করে দিলেন ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ের একেবারেই শেষদিকে। সেদিন সোনালি ট্রফিটির খুব কাছ থেকেই ফিরতে হলো তাকে। পরেরবার রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।

তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে ‘এমবাপ্পে’ নামক এক ঝড়ের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় সেদিনও। মেসির চোখমুখ বলছিল : এই বুঝি ফুটবলকে বিদায় জানাবেন তিনি। এই বুঝি এক বুক অভিমান নিয়ে আড়ালে চলে যাবেন। কিন্তু না;  তিনি তো রাজা। রাজা তো বিদায় নেবে রাজার মতোই। তাইতো সোনালি ট্রফিতে চুমু আঁকতে নতুন উদ্যমে শুরু মেসিদের। এবার  তাদের নেতা লিওনেল স্কালোনি। 

 ২০০৬ সালে একইসাথে খেলেছেন মেসির সঙ্গে।  ফিরে এলেন কোচ হয়ে। তার হাত ধরেই টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত ছিল আর্জেন্টিনা। স্কালোনির অধীনেই ২০২১ সালে ব্রাজিলকে হারিয়ে আন্তর্জাতিক শিরোপার স্বাদ পান মেসি। এরপর ফিনালিসিমাও জেতেন মেসিরা। এ যেন এক অপ্রতিরোধ্য আর্জেন্টিনা। মেসির অধীনেই এবার সোনালি ট্রফির খোঁজে কাতারে এসেছে আর্জেন্টিনা। কিন্তু এ কী! কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হোঁচট খেয়ে বসে আলবিসেলেস্তেরা।

তাকে কী! পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ায় তারা। একের পর অসাধারণ পারফরম্যান্সে দলকে টেনে নিয়ে গেলেন ফাইনালে। পুরো আসরে একাই করলেন ৭ গোল। ফাইনালেও করলেন জোড়া গোল। স্নায়ুক্ষয়ী ফাইনালে অবশেষে জয়ের দেখা পেলো আর্জেন্টিনা। অধরা সোনালি ট্রফিটি এবার ধরা দিল মেসির হাতে। কিংবদন্তি নামটিও পূর্ণতা পেলো মেসির পাশে।

এদিকে কাতার বিশ্বকাপ জন্ম দিয়েছে নানা অঘটন। শুধু আয়োজনের দিক থেকেই নয়, কাতার বিশ্বকাপ রেকর্ড গড়েছে গোল স্কোরিংয়ের দিক থেকেও। এখনও পর্যন্ত যে ২২টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল হয়েছে এবারের বিশ্বকাপে।

একবার কল্পনা করে দেখুন, অফসাইড টেকনোলজির কারণে কতগুলো গোল বাতিল করা হয়েছিল! গোল করার পর সংশ্লিষ্ট দলগুলো উল্লাসে মেতে ওঠার বেশ কিছুক্ষণ পর টেকনোলজি দিয়ে চেক করে জানা গেছে— না, ওটা ছিল অফসাইড। তবুও কাতার বিশ্বকাপ গোল স্কোরিংয়ের দিক থেকে রেকর্ড গড়ল। সব মিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপে গোল হয়েছে ১৭২টি। এর আগে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ছিল দুই বিশ্বকাপে।

১৭১টি করে গোল হয়েছিল ২০১৪ এবং ১৯৯৮ বিশ্বকাপে। এবার হয়েছে তারচেয়ে একটি বেশি। কাতার বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন দল পাবে রেকর্ড ৪২ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৩৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। রানার্সআপ ফ্রান্স পাচ্ছে ৩০ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বিশ্বকাপের চেয়ে ৬০ লাখ ডলার বাড়ানো হয়েছে এবার।

এদিকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে মেসিদের উষ্ণ সংবর্ধনা দিতে অপেক্ষায় সমর্থকরা। তবে তার আগে কাতারেই ভক্তদের সঙ্গে ট্রফি নিয়ে ছাদখোলা বাসে আনন্দ উদ্যাপনে মাতলেন মেসিরা। আর্জেন্টিনা দলের সঙ্গে উদ্যাপনের জন্য কয়েক লাখ সমর্থক লুসাইল সিটিতে ভিড় জমান। মেসিদের সামনে থেকে একনজর দেখতে তারা অপেক্ষা করতে থাকেন। মধ্যরাতে মেসিদের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন আর্জেন্টিনার সমর্থকসহ স্থানীয়রাও। তাদের হতাশ হতে হয়নি। ছাদখোলা বাসে ট্রফি ট্যুর করেছেন লিওনেল মেসিরা।

সেই বাসের দ্বিতীয় তলায় ট্রফি ও পতাকা নিয়ে আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা সমর্থকদের দিকে হাত নেড়ে পথ চলতে থাকেন। মেসিদের ছাদখোলা বাসের পেছনে ছিল ‘চ্যাম্পিয়ন’ লেখা বাস। সেই বাসও তাদের পেছন পেছন গেছে। ছাদখোলা বাসের পাশাপাশি আতশবাজিও ছিল। সেই আতশবাজিতে লুসাইল সিটি হয়ে ওঠে রঙিন থেকে রঙিনতর।

Link copied!