Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪,

বিপিএলে প্রথম শিরোপার স্বাদ পেলো বরিশাল

আহমেদ হৃদয়

আহমেদ হৃদয়

মার্চ ১, ২০২৪, ১০:০৪ পিএম


বিপিএলে প্রথম শিরোপার স্বাদ পেলো বরিশাল

এমন আনন্দ-উৎসব এর আগে কখনো করা হয়নি বরিশালের। বিপিএলের ইতিহাসে কখনো শিরোপার স্বাদ পায়নি বরিশালের ফ্র্যাঞ্চাইজি। তবে সেই আক্ষেপ ঘুচলো এবার। মিরপুরের মাঠে প্রথমবারের মতো শিরোপা উৎসবে মেতে উঠলো ফরচুন বরিশাল। দেশসেরা ব্যাটার তামিম ইকবাল যখন দলটির অধিনায়ক, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, সৌম্যদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা যখন বরিশালের হয়ে মাঠে নেমেছেন; সেইসঙ্গে দলে আছেন ডেভিড মিলার ও কাইল মেয়ার্স! তখন শিরোপা হাতছাড়া হয় কীভাবে! অন্যদিকে সবশেষ টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ চারবার শিরোপা ঘরে তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ফাইনালে হারে না কুমিল্লা। এর আগে চারবার ফাইনালে উঠে চারবারই শিরোপা জিতেছে ফ্রাঞ্জাইজিটি। এবার প্রঞ্চমবার ফাইনালে উঠে প্রথমবার হারলো কুমিল্লা। 

শুক্রবার মিরপুর শেরে-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তামিম ইকবাল। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা ভিতেক্টারিয়ান্স। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভাল শুরু এনে দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজ। পাওয়ার প্লে-তেই ৫৯ রান সংগ্রহ করে এই দুই ওপেনার। পরে এক ওভার বাকি থাকতেই ৪ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় ফরচুন বরিশাল। এই জয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তুলে বরিশাল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান আসে কাইল মেয়ার্সের ব্যাট থেকে। ৩৯ রান করেন তামিম ইকবাল। 

১৫৫ রানে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ওভারেই অতিরিক্ত ১১ রান দেন তানভীর ইসলাম। পাওয়ার প্লে-তে এই দুই ওপেনার স্কোরবোর্ডে জমা করেন মোট ৫৯ রান। তাদের ৭৬ রানের জুটি ভাঙেন মঈন আলি। ডাউন দ্যা উইকেটে শট করতে গিয়ে মঈন আলি বল নীচু হয়ে সরাসরি স্ট্যাম্পে আঘাত করে। আউট হওয়ার আগে তামিমে ব্যাট থেকে আসে ২৬ বলে ৩৯ রান। তবে এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও হয়ে যান দেশসেরা এই ওপেনার। এরপর মিরাজও এগোতে পারেননি বেশিদূর। মঈন আলির বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে জনসন চার্লসের হাতে ধরা পড়ে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। ২৬ বলে ২৯ রান আসে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে। ততক্ষণে জয়ের ভীত গড়ে দিয়ে গেছেন তামিম ও মিরাজ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে কাইল মেয়ার্সকে নিয়ে দেখেশুনে এগোতে থাকেন মুশফিকুর রহিম। জয় থেকে যখন মাত্র ১৪ রান দূরে বরিশাল, তখনই কাইল মেয়ার্সের উইকেট হারায় দল। মোস্তাফিজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মঈন আলির হাতে ধরা পড়েন মেয়ার্স। আউট হওয়ার আগে এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে ৩০ বলে ৪৬ রান। এই ওভারেই মুশফিককেও সাজঘরে পাঠান মোস্তাফিজ। তাকে পুল করতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে বদলি ফিল্ডার ম্যাথেও ফোর্ডের ক্যাচ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ডেভিড মিলারকে নিয়ে বাকি বাকি কাজটা সারেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজনে মিলে দলকে চ্যাম্পিয়ন করে মাঠ ছাড়েন। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থাকেন ৭ রানে ও মিলার অপরাজিত থাকেন ৮ রানে। কুমিল্লার হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মঈন আলি ও মোস্তাফিজুর রহমান।      

মিরপুর শেরে-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে কুমিল্লাকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রথম ওভারেই বল তুলে দেন কাইল মেয়ার্সের হাতে। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদানও দেন তিনি। ওভারের পঞ্চম বলেই ক্যাচ তুলে দেন ওপেনার সুনীল নারিন। ম্যাকময় ক্যাচ লুফে নিতে আর ভুল করেননি। ৪ বলে ৫ রান করেই বিদায় নেন এই ওপেনার। চতুর্থ ওভারে টুর্নানেমেন্টের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান তাওহীদ হৃদয়কে সাজঘরে ফেরান জেমস ফুলার। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ১৫ রান। পাওয়ার প্লে-এর শেষ ওভারে বল করতে এসে আবারও উইকেট তুলে নেন ফুলার। শর্ট লেংথের বল কাট করেন লিটন দাস। ডিপ থার্ডম্যান অঞ্চলে থাকা মাহমুদউল্লাহর হাতে ধরা পড়ে সাজঘরে ফেরেন কুমিল্লা অধিনায়ক। ১২ বলে ১৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ওপেনার। পাওয়ার প্লে-তে ৪৯ রান তুলে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় কুমিল্লা। সেখান থেকে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন চার্লস ও মাহিদুল। তবে এই দুই ব্যাটার বেশিদূর যেতে পারেননি। ম্যাকময়রের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড-অফে তামিমের হাতে ধরা পড়েন এই চার্লস। ২৩ বলে ২৩ রানের জুটি গড়েন এই ব্যাটার। চার্লস আউট হন ১৭ বলে ১৫ রান করে। ছয়ে নেমে ইনিংস বড় করতে পারেননি মঈন আলি। মিরাজের থ্রোতে ৩ রান করেই রানআউটে কাটা পড়েন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। ৭৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দল যখন বিপদে, তখন সেখান থেকে দলকে তোলার চেষ্টা করেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও জাকের আলি। এই দুই ব্যাটারের ৩৬ রানের জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। 

১৭তম ওভারে অঙ্কনের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন সাউফুদ্দিন। আউট হওয়ার আগে ৩৫ বলে ৩৮ রান করেন এই ব্যাটার। শেষদিকে দারুণ কামিও ইনিংস খেলেন আন্দ্রে রাসেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটারের সঙ্গে শেষদিকে ২১ বলে ৩৯ রানের জুটি গড়েন জাকের। রাসেলের ১৪ বলে ২৮ রানের ওপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অন্যদিকে ২৩ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন জাকের আলি। বরিশালের হয়ে ২ উইকেট পায় জেমস ফুলার। কাইল মেয়ার্স, সাইফুদ্দিন ও ম্যাকময় নেন একটি করে উইকেট।

হৃদয়/ইএইচ

Link copied!