Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪,

ফের খড়গ নামছে গ্রাহকের ওপর

মহিউদ্দিন রাব্বানি

মে ১৭, ২০২৩, ০৭:৫৬ এএম


ফের খড়গ নামছে গ্রাহকের ওপর
  • নতুন দাম কার্যকর হলে মাসে বাড়তি আয় হবে ১২৮ কোটি টাকা
  • এক চুলায় ৩৯ শতাংশ এবং ডাবল চুলায় ৪৭ শতাংশের কিছু বেশি

এক চুলায় ৩৯০, দুই চুলায় ৫১২ টাকা বাড়ছে
গ্যাসের দাম বাড়ানো নয় মিটারবিহীন গ্রাহকদের গ্যাসের ব্যবহার পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করা হয়েছে
—হারুনুর রশীদ মোল্লাহ
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তিতাস কর্তৃপক্ষ  

তিতাস মিটারবিহীন গ্রাহককে নামমাত্র গ্যাস দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুণ্ঠন করছে
—অধ্যাপক এম শামসুল আলম
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে বাজারে চলছে অস্থিরতা। মধ্য ও নিম্নবিত্ত হিমশিম খাচ্ছে সংসার চালাতে। এরই মধ্যে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে গ্যাসের বাড়তি বিল। তিতাস গ্রাহকরা একচুলায় ৩৮৯ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৪১১ টাকার অতিরিক্ত বিল গুনতে হবে। তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের প্রতি মাসে গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে একমুখী চুলার এবং দ্বিমুখী চুলার ক্ষেত্রে নির্ধারণ করে দেয়। এতে সর্বশেষ গত বছর একমুখী চুলার এবং দ্বিমুখী চুলার ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৫৫ ঘনমিটার এবং ৬০ ঘনমিটার পুনর্নির্ধারণ করে। তিতাস জনসংযোগ সূত্র আরও জানায়, প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে মিটারবিহীন গ্রাহকরা বেশি গ্যাস ব্যবহার করে। ফলে তিতাস গ্যাসের সিস্টেম লস বৃদ্ধি পায়। গত ২ মে গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণের বিষয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য বিইআরসিকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। গ্যাস বিতরণ সংস্থা তিতাসের মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকরা মাসে যে পরিমাণ বিল দিচ্ছেন তার চেয়ে ৩৯ থেকে ৪৭ শতাংশ বেশি গ্যাস ব্যবহার করছেন দাবি করে কোম্পানিটি ওইসব গ্রাহকদের কাছ থেকে এ হারে বাড়তি বিল নিতে চায়। অতিরিক্ত গ্যাস পোড়ানোর এ হিসাব বিবেচনায় নিয়ে প্রি-পেইড মিটারের বাইরে থাকা ২৫ লাখ ২৫ হাজার আবাসিক গ্রাহকের মাসিক বিল বাড়িয়ে পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে জমা দিয়েছে কোম্পানিটি। এদিকে এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত গ্যাস সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ার পর দাম কিংবা মিটার বৃদ্ধি করা অযৌক্তিক। তারা বলছেন, গ্রাহকরা প্রতি মাসে ৪৫ থেকে ৫০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন, যা বিইআরসি নির্ধারিত পরিমাণের চেয়েও কম। বর্তমানে প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী চার সদস্যের একটি পরিবারে দুই চুলা এক হাজার টাকার গ্যাস দিয়ে গড়ে প্রায় দুই মাস চলে। অন্যদিকে মিটারবিহীন গ্রাহক গ্যাস ব্যবহার করুক বা না করুক, এমনকি কোনো মাসে একদিনও চুলা না জ্বালালেও তাকে দুই চুলার জন্য প্রতি মাসে ১০৮০ টাকা গুনতে হচ্ছে। অনেক গ্রাহকের বাসায় আবার বেশির ভাগ সময়ই গ্যাস থাকে না। থাকলেও চাপ থাকে কম। মাসিক বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে গ্যাসের স্বল্পতার এ বিষয়গুলো কখনোই আমলে নেয়া হয় না। তারা আরও বলেন, তিতাস দীর্ঘদিন ধরেই গ্রাহকের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করে আসছিল। তিতাস বলছে, নতুন আবেদনে সিঙ্গেল বার্নারের জন্য ৭৬ দশমিক ৬৫ ঘনমিটার এবং ডাবল বার্নারের জন্য ৮৮ দশমিক ৪৪ ঘনমিটার বিবেচনা নিয়ে মাসিক বিল নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। তবে গ্যাসের ইউনিট প্রাইস বাড়ানোর কোনো প্রস্তাব করা হয়নি। হিসাব করে দেখা গেছে, এ প্রস্তাব বিবেচনায় নিলে একজন গ্রাহককে সিঙ্গেল বার্নার চুলার জন্য ১৩৭৯ টাকা এবং ডাবল বার্নার চুলার জন্য ১৫৯২ টাকা গুনতে হবে। এতে বিল বাড়বে সিঙ্গেল বার্নারে ৩৯ শতাংশ এবং ডাবল বার্নারে ৪৭ শতাংশের কিছু বেশি। বর্তমানে রান্নার গ্যাসের জন্য দুই চুলার (ডাবল বার্নার) মাসিক বিল ১০৮০ টাকা এবং এক চুলার মাসিক বিল ৯৯০ টাকা করা হয়েছে। সবশেষ ২০২২ সালের ৫ জুন গ্যাসের দাম বাড়ানোর সময় নতুন এ বিল নির্ধারণ করা হয়। আগে যা ছিল যথাক্রমে ৯৭৫ ও ৯২৫ টাকা। বর্তমানে তিতাসের বিতরণ এলাকায় ২৮ লাখ ৫৭ হাজার বৈধ আবাসিক গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ লাখ ২৫ হাজার নন মিটার আবাসিক গ্রাহক এবং তিন লাখ ৩২ হাজার প্রি-পেইড মিটারভিত্তিক আবাসিক গ্রাহক। এর মধ্যে এক লাখ ৫৫ হাজার একমুখী চুলা বা সিঙ্গেল বার্নার এবং ২৩ লাখ সাত হাজার দ্বিমুখী বা ডাবল বার্নার চুলার গ্রাহক রয়েছেন। 
তিতাসের প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, কম-বেশি ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোনো সমীক্ষা/তথ্য বিশ্লেষণ ব্যতিরেকে বিইআরসি এক চুলার ক্ষেত্রে  ৫৫ ঘনমিটার ও দুই চুলার ক্ষেত্রে ৬০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার নির্ধারণ করায় সিস্টেম লস বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে একটি লাভজনক সরকারি প্রতিষ্ঠান আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। আবেদনে বলা হয়, মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহক কর্তৃক গৃহস্থালি রান্নাবান্নার কাজ ব্যতীত পানি বিশুদ্ধকরণের উদ্দেশ্যে পানি ফুটানো এবং বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত এলাকায় কলকারখানার শ্রমিক ও বিভিন্ন আবাসিক
 

Link copied!