ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অভিযোজন: ক্ষতি রক্ষার হাতিয়ার

সৈয়দ মাহবুব আহসান শিমুল

সৈয়দ মাহবুব আহসান শিমুল

জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ১১:০৯ এএম

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অভিযোজন: ক্ষতি রক্ষার হাতিয়ার

জলবায়ু পরিবর্তন আজ বৈশ্বিক সংকট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এর প্রভাবে বাড়ছে তাপমাত্রা, পরিবর্তিত হচ্ছে বৃষ্টিপাতের ধরন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাড়ছে চরম আবহাওয়ার ঘটনা। এসবের ফলে মানবসমাজ, প্রকৃতি এবং অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাব মোকাবিলায় অ্যাডাপটেশন বা অভিযোজন একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে কাজ করে। কিন্তু এই অভিযোজন কীভাবে কাজ করে এবং এটি কীভাবে ক্ষয়ক্ষতি রোধে সাহায্য করে?

অভিযোজন:

অভিযোজন বলতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রাকৃতিক ও মানবিক ব্যবস্থার সমন্বয়ে গৃহীত পদক্ষেপকে বোঝায়। এর মূল লক্ষ্য হলো জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনা এবং সুযোগগুলোকে কাজে লাগানো। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, যা স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়। অ্যাডাপটেশন শব্দের অর্থ হলো অভিযোজন। জীববিদ্যায়, অ্যাডাপটেশন বলতে বোঝায়, কোনো প্রজাতি তার পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া। এটি প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে ঘটে।

অ্যাডাপটেশন শব্দটির আরও কিছু অর্থ:

কোনো পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া।
প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে উদ্ভূত পরিবর্তন।
জৈবিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজাতিগুলোকে তাদের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া।

অভিযোজনকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

১. প্রাকৃতিক অভিযোজন: প্রাকৃতিক পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়। যেমন, উদ্ভিদ ও প্রাণীরা তাদের বাসস্থান ও আচরণ পরিবর্তন করে।

২. মানবিক অভিযোজন: মানুষ বিভিন্ন কৌশল ও প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করে। যেমন, ফসলের জাত উন্নয়ন, বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা ইত্যাদি।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় পদক্ষেপগুলো:

১. ঝুঁকি মূল্যায়ন: প্রথমে জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাব ও ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়। যেমন, কোন অঞ্চলে বন্যার ঝুঁকি বেশি, কোথায় খরার সম্ভাবনা রয়েছে ইত্যাদি।

২. পরিকল্পনা প্রণয়ন: ঝুঁকি চিহ্নিত করার পর তা মোকাবিলার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। যেমন, উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যা প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণ, কৃষিতে সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদি।

৩. প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সমাধান ব্যবহার করা হয়। যেমন, খরা সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন, সোলার প্যানেলের মাধ্যমে জ্বালানি সাশ্রয় ইত্যাদি।

৪. সামাজিক সচেতনতা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো এবং স্থানীয় সম্প্রদায়কে অভিযোজন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা। যেমন, কৃষকদের নতুন পদ্ধতিতে চাষাবাদ শেখানো।

৫. নীতি ও আইনি কাঠামো: সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নীতি ও আইনি কাঠামো তৈরি করে অভিযোজন প্রক্রিয়াকে সহজ করা। যেমন, জলবায়ু তহবিল বরাদ্দ, পরিবেশবান্ধব নীতি প্রণয়ন ইত্যাদি।

অভিযোজনের বেশ কিছু উদাহরণ:

ভাসমান কৃষি: বন্যাকবলিত অঞ্চলে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করা হয়।
লবণাক্ততা সহনশীল ফসল: উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা সহনশীল ধান ও অন্যান্য ফসলের চাষ করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র: উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

অভিযোজন প্রক্রিয়ায় কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা, প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাব এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের ঘাটতি। তবে সঠিক পরিকল্পনা, গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব।

জলবায়ু পরিবর্তন একটি বাস্তবতা, যা থেকে রক্ষা পেতে অভিযোজন অপরিহার্য। এটি শুধু ক্ষতি কমায় না, বরং নতুন সম্ভাবনার দ্বারও উন্মোচন করে। তাই স্থানীয়, জাতীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে অভিযোজন কৌশলকে শক্তিশালী করতে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের এই যুদ্ধে অভিযোজনই হতে পারে আমাদের প্রধান হাতিয়ার।

 

লেখক—

পাবলিক রিলেশন এন্ড মার্কেটিং স্পেশালিস্ট

ক্রিলিক-এলজিইডি, ঢাকা।

Link copied!