ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
আইন অমান্য করে

প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ১৮ কোটি টাকায় বিক্রি

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া

আগস্ট ৬, ২০২২, ১২:৩৪ পিএম

প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ১৮ কোটি টাকায় বিক্রি

অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ অমান্য করে ব্র্যাক ব্যাংক সম্পত্তি নিলাম করায় ব্যাংকের ২৫ কোটি টাকা লোকসান দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনি একটি নিলাম হয়েছে কুষ্টিয়ার আইলচারা ভিআইপি অটো রাইচ মিল। কেন্দ্রীয় ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তারা এই নিলাম করে প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি মাত্র ১৮ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে।

কুষ্টিয়ার আইলচারার ভিআইপ অটো রাইচ মিলের মালিক প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ব্র্যাক ব্যাংক কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বন্ধক রেখে ৪৩ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। উক্ত ঋণের টাকা সময়মত পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে ব্র্যাক ব্যাংক উক্ত অটো রাইচ মিলের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করেন। অর্থঋণ আদালত আইন অনুযায়ী মামলা করতে হলে ঋণ গ্রহীতাকে নোটিশ দেয়ার কথা।

এছাড়া অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ (১) ও (৪) ধারা মোতাবেক আদালত কর্তৃক নিলাম বিজ্ঞপ্তি বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশ করতে হয়। সেই সাথে আদালত থেকে ঢুলি নিয়ে ব্যাংক ঘটনাস্থলে এবং আশপাশে ঢোল পিটিয়ে এবং মাইকিং করে এলাকাবাসী ও সম্পত্তির মালিককে অবগত করতে হয়। এর কিছুই না করে গোপনে উক্ত ১০০ কোটির সম্পত্তি মাত্র ১৮ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে, যা কুষ্টিয়া সহ দেশ জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ মিল মালিক জানায়, কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার আইলচারায় অবস্থিত মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্স এন্ড ভিআইপি রাইচ মিল ব্র্যাক ব্যাংক পোড়া দহ শাখার নিকট থেকে ঋণ চাইলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জমির ভ্যালুয়েশন করে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ব্র্যাক ব্যাংক পোড়াদহ শাখা সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঢাকায় প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ওই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে ৪৩ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করে। ঋণ নেওয়ার পর মিলটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত করার পর কার্যক্রম শুরু করার জন্য মিল মালিকের আরও টাকার প্রয়োজন হয়। তখন মিল মালিক আবারও টাকা ঋণ নেওয়ার জন্য ব্যাংকে আবেদন করলে ব্যাংক তাকে আর ঋণ দেয়নি।

তারপর থেকে একটানা ৩ বছর মহামারী করোনা ভাইরাস সারাদেশে সংক্রমন শুরু  হলে মিলটি সরকারের নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী বন্ধ হয়ে যায়,  যার ফলে ভিআইপি রাইচ মিল সময় মতো ঋণের কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়। ঠিক এই সুযোগে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অতি গোপনে অর্থঋণ আদালত আইন লংঘন করে অখ্যাত কাগজে নিলাম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কুষ্টিয়ার আব্দুর রশিদের মালিকানাধীন রশিদ গ্রুপের নামে মাত্র ১৮ কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি করে দেয়।

ব্যাংক যেখানে ৪৩ কোটি টাকা পাবে। ব্যাংকের হিসাবে ঐ সম্পত্তির মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা,  সেখানে মাত্র ১৮ কোটি টাকায় নিলামের রহস্য কি? বিষয়টি জানতে পেরে মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্স, ভিআইপি রাইচ মিল ও ভিআইপি ফ্লাওয়ার মিলের প্রোপাইটার শফিকুল ইসলাম উচ্চ আদালতে রিট করেন। এছাড়াও যেই পত্রিকাতে নিলাম বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছে সেটি সরকারি মিডিয়া তালিকাভুক্ত নেই এবং তার প্রচার সংখ্য সীমিত বলেও অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী মিল মালিক।

রিটে হাইকোর্ট নিলামের সকল কার্যক্রম স্থগিত করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক শফিকুল ইসলামকে মালিকানা বহাল করে কিস্তি করে দিয়েছেন আদালত বলে জানা গেছে।

হাইকোর্টের আদেশ সুত্রে জানা যায়, মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্স এন্ড ভিআইপি রাইচ মিলের মালিক ব্র্যাক ব্যাংকের কিস্তি দিতে না পারায় চলতি বছরের গত ২৪ মার্চ মিলটি নিলাম করে দেয় ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। নিলামকৃত প্রতিষ্ঠানের মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা হলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ৪৩ কোটি টাকা পান মিল মালিকের কাছে। কিন্তু স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাইস মিল রশিদ গ্রুপের  মালিক রশিদের কাছে গোপন যোগ সাজসে মাত্র ১৮ কোটি টকায় নিলামে বিক্রি করে দেয়।

পরে নিলামের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২ আগস্ট হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন প্রতিষ্ঠানের মালিক শফিকুল ইসলাম, যার রিট পিটিশন নং-৯১০১/২০২২,। রিটটি করেন ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। রিটের আবেদনের শুনানির পর তাদের লর্ডশিপ বিচারপতি আবু তাহের মোঃ সাইফুর রহমান এবং বিচারপতি এ.কে.এম রবিউল হাসান এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি ডিভিশন বেঞ্চ চার সপ্তাহের জন্য রুল নিসি জারি করে সন্তুষ্ট হয়ে উত্তর দাতাদেরকে কারণ দর্শানোর আহ্বান জানিয়ে দৈনিক সংবাদপত্রে গত ২৪ মার্চ কেনো নিলাম প্রক্রিয়া প্রকাশিত হয়েছিল তা জানতে চেয়ে এবং নিলামের সকল কার্যক্রম স্থগিত করে।

এর ফলে শফিকুল ইসলাম মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্স, ভিআইপি রাইচ মিল ও ভিআইপি ফ্লাওয়ার মিলের মালিকানা বহাল থাকে। এরপরেও রশিদ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আধারে শফিকুল ইসলামের সম্পত্তি জবর দখল করে সাইন বোর্ড লাগিয়েছে। শুধু তাই নয় এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রশিদ ব্যাংকে মর্গেজ বাদেও শফিকুল ইসলামের আরও অন্যান্য সম্পত্তি দখল করে চলেছে। ভিআইপি রাইস মিলের সামনে জিকে ক্যানেলের একটি সরকারি জমিও দখল করেছে রশিদ।

এ বিষয়ে রশিদ গ্রুপের মালিক রশিদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্স এন্ড ভিআইপি রাইচ মিলের প্রোপাইটার শফিকুল ইসলাম বলেন, পোড়াদহ শাখার ব্র্যাক ব্যাংক থেকে আমার ঋণ নেওয়া ছিলো। করোনা আসার পর আমি ঋণের অর্থ সময় মত পরিশোধ  করতে না পারায় আমার মিলটি আমাকে না জানিয়েই নিলামে রশিদের কাছে বিক্রয় করে দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। নিলাম বিজ্ঞপ্তি যেই পত্রিকায় ছাপা হয়েছে সেটির প্রচার সংখ্যা অনেক কম এবং সরকারি মিডিয়া তালিকাভুক্ত কিনা তারও ঠিক নেই। এছাড়াও নিলামের আগে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে এবং ঢোল পিটিয়ে সবাইকে অবগত করতে হয়। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গোপনে রশিদের সাথে যোগসাজসে আমার প্রায় ১০০কোটি টাকার সম্পত্তি মাত্র ১৮ কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি করে দিয়েছে।

আমারসংবাদ/এআই

Link copied!