ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ঝিনাইদহে জলাবদ্ধতায় সাপের প্রাদুর্ভাব, এন্টিভেনম সংকট

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

আগস্ট ২, ২০২৫, ০৬:১০ পিএম

ঝিনাইদহে জলাবদ্ধতায় সাপের প্রাদুর্ভাব, এন্টিভেনম সংকট

শ্রাবণের অতিবৃষ্টিতে ঝিনাইদহের ফসলি জমি, খানা-খন্দ ও বসতবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ায় বেড়েছে সাপের উপদ্রব। ফলে সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। 

জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডুতে প্রতিদিনই একাধিক সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে আসছেন।

তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিভেনম না থাকায় এবং অসচেতনতার কারণে অনেক রোগী সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। অনেকেই এখনও সাপে কাটা রোগীকে ওঝার কাছে নিয়ে যাচ্ছেন, এতে মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে।
প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে

গত বুধবার কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর মাঠপাড়ার মাহতাব উদ্দিনের স্ত্রী নাসিমা বেগম (৪৫) সাপে কেটে মারা যান।

এর আগের দিন শৈলকুপা উপজেলার গাংকুল গ্রামের ঘুঘু বিশ্বাসের ছেলে তোয়াজ আলীকে সাপে কামড় দিলে দ্রুত হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তবে ১২ জুলাই শৈলকুপা উপজেলার ব্রহ্মপুর গ্রামে অপু বিশ্বাস নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাপে কেটে মারা যান। জানা যায়, তাকে প্রথমে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং হাসপাতালে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় তার মৃত্যু ঘটে।

এন্টিভেনম সংকট

জেলা সদর হাসপাতাল ও শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অল্প পরিমাণে এন্টিভেনম থাকলেও, অন্য উপজেলা হাসপাতালগুলোতে তা প্রায় নেই বললেই চলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীর স্বজনদের নিজ খরচে এন্টিভেনম কিনে আনতে হচ্ছে, যার মূল্য ১০ ভায়েলের জন্য ১২,৬০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত।

শৈলকুপা উপজেলার কৃপালপুর গ্রামের এক নারী সাপে কাটা অবস্থায় সাপটিকেও ধরে নিয়ে হাসপাতালে হাজির হন। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রতিদিনই গড়ে একজন বা দুজন রোগী আসছেন সাপে কাটার কারণে।
শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন বলেন, "প্রতিদিনই দু-একজন করে সাপে কাটা রোগী আসছেন। অনেকেই খরচ বহন করতে পারেন না। এখনো এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের নিজস্ব উদ্যোগে দেওয়া ৭০টি ভায়েল মজুত আছে, যা সাতজনকে দেওয়া যাবে।"

তিনি আরও জানান, “চারদিকে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় সাপ মানুষের ঘরবাড়িতেই ঢুকে পড়ছে। তাই সাপে কাটা রোগী বেশি আসছে। এ অবস্থায় বাসাবাড়িতে কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি।”

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন জানান, “এখানেও মাঝে মাঝে সাপে কাটা রোগী আসছেন। আমাদের কাছে এখনো ১০টি ভায়েল মজুত আছে এবং নতুন করে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। জুলাই মাসে ছয়জন রোগীকে এন্টিভেনম দেওয়া হয়েছে।”

ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সরকারিভাবে এন্টিভেনম সরবরাহের একটি প্রকল্প ছিল, যা গত অর্থবছর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। জুন মাসে আমাদের ৩০টি ভায়েল দেওয়া হয়েছিল, যা তিনজনের শরীরে দেওয়া সম্ভব। আমরা হাসপাতালের নিজস্ব তহবিল থেকে অতিরিক্ত ৪০টি ভায়েল কিনেছিলাম, যা ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।”

তিনি আরও বলেন, “সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সর্বোচ্চ ৫০টি ভায়েল পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারি। অথচ চাহিদা অনেক বেশি। সরকারিভাবে এন্টিভেনম সরবরাহ না করলে রোগীদের দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।”

গত দুই মাসে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুন মাসে ২২ জন ও জুলাই মাসে ৩৩ জন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

হরিণাকুণ্ডুতে জুনে ১২ জন এবং জুলাইয়ে ১১ জন রোগী আসেন। এদের মধ্যে একজন হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান।

ভুক্তভোগীদের মতে, শুধু ওঝার প্রতি নির্ভরশীলতা নয়, হাসপাতালগুলোতে সরকারি সহায়তায় পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ না থাকায় দরিদ্ররা সঠিক সময়ে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। 

তারা মনে করেন, প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে এন্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি।

ইএইচ

Link copied!