Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪,

অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন: আশ্বাসে ৩ বছর পার

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০৪:০৩ পিএম


অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন: আশ্বাসে ৩ বছর পার

একে একে বদলী হয়েছেন অনেক কর্মকর্তা অভিযোগের ভিত্তিতে সকলেই দিয়েছে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস। তবে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে গোমতী নদী থেকে মাটি উত্তোলনের ৩ বছর অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুধু আশ্বাস দেয়া ছাড়া এখনো গ্রহণ করা হয়নি দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা। ফলে প্রশাসনীক কর্মকর্তাদের এমন ভূমিকা নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের কোম্পনীগঞ্জের ত্রিশ এলাকার গোমতী নদী থেকে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে ও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ওই মাটি উত্তোলনের অভিযোগ উপজেলা যুবলীগের নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের অভিযোগ প্রাশাসনকে ম্যনেজ না করে এ কাজ করা সম্ভব না। তা না হলে নদী থেকে কিভাবে ৩ বছর যাবত মাটি উত্তোলন করে আসছে প্রভাবশালীরা। প্রশাসনের লোকজন মাঝেমধ্যে এখানে এসে অভিযান চালিয়ে বলেন ড্রেজারের কাছে কাউকে পাউয়া যায় নি তাই তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। লোক দেখানো এমন অভিযানের ফলে স্থানীয়দের মুখে মুখে এখন চলছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড়।

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম সরকার উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও কোম্পানীগঞ্জ এলাকার ত্রিশ গ্রামের রুপ মিয়ার ছেলে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক ব্যাক্তি জানান, গোমতী নদী থেকে মাটি উত্তোলনের শুরুতে স্থানীয় অনেকেই প্রশাসনের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেছিলো ওই প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। কিছুদিন না যেতেই ওই প্রভাবশালী বাহিনীর অত্যাচারে প্রাণরক্ষার ভয়ে যার যার অভিযোগ তুলে নেয়। তার পর থেকে এখন তাদের ভয়ে আর কেউ অভিযোগ করতে চায় না। সেখানে তারা প্রশাসনের লোকদেরকেই ভয় পায় না, সেখানে আমরা কোন দেশের প্রেসিডেন্ট। তাই মুখ বুঝে এসব অন্যায় অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে আমাদের।

ত্রিশ এলাকার কৃষক আদম আলী, আবু মুছা, ধনু মিয়া ও আব্দুল করিমসহ আরো বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, নদীর তীরে আমাদের নিজস্ব জমিতে আমরা চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। কিন্তু এখন ড্রেজার দিয়ে প্রভাবশালীরা যেভাবে চরের ফসলি জমির মাটি উত্তোলন করে নিচ্ছে তাতে আমাদের সব জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে এবং আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব।

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকার মুঠোফোনে শুরুতে গোমতী নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করলেও পরে আবার তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি গোমতী নদীতে ড্রেজার চালাই না। চলমান ড্রেজার কে চালায় তা ও আমি জানি না।

মুরাদনগর উপজেলার নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ও মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জনী গোমতী নদী থেকে মাটি উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এর আগে আমি নিজে বেশ কয়েকবার মাটি উত্তোলনের কার্যক্রম বন্ধ করেছি। বর্তমানে আবার মাটি উত্তোলন করছে কিনা বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি মাটি উত্তোলন চালু থাকে আবারও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খাঁন মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান গোমতী নদী থেকে ৩ বছর যাবত মাটি কাটার বিষয়টি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিষয়টির খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেএস 

Link copied!