Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪,

মাদারীপুরে মুক্তিযোদ্ধার ঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মে ১৫, ২০২৩, ০৯:২০ পিএম


মাদারীপুরে মুক্তিযোদ্ধার ঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ

মাদারীপুরে মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় শত্রুতার সৃষ্টি হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েক জনের সাথে। তার জেরে মুক্তিযোদ্ধার ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে রবিবার রাত ২ টার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের গৌদি গ্রামে। একই জেরে দুদিন আগে ইব্রাহিম সরদারের ঘর পুড়িয়ে দেয় তারা। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত খলিল সরদার ও তার লোকজন গা-ঢাকা দিয়েছে বলে জানা যায়। তদন্ত সাপেক্ষে দোষিদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস পুলিশের।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের গৌদি গ্রামের দীর্ঘদিন থেকে মাদক ব্যবসা করে আসছে খলিল সরদার ও পরিবারের লোকজন। এলাকার যুব সমাজের কথা চিন্তা করে বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাহার সরদার ও আশপাশের কিছু লোক মাদক কারবারে বাধা দেয়। এ ঘটনার পর থেকে শত্রুতার সৃষ্টি হয় মুক্তিযোদ্ধা আজাহার সরদার ও খলিল সরদারের মধ্যে। তারই জেরে গত ৩০ শে এপ্রিল খলিল সরদার ,ইমন সরদার, বাদল সরদার, রোমান সরদার, ফয়সাল জমাদ্দারসহ তাদের লোকজন মুক্তিযোদ্ধা আজাহার সরদার ও ইব্রাহিম সরদারের ঘর ভাঙচুড় করে ও কয়েকজনকে মেরে আহত করে। ওই গ্রামের অহিদ তালুকদারের ছেলে মাসুদ তালুকদারকে কুপিয়ে আহক করে তারা। ছেলেকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় ওই দিন রাতে ১৮ জনকে আসামী করে মামলা করে বাবা অহিদ তালুকদার। ত

বে ওই দিন ইব্রাহিমের ঘর ভাঙচুড় ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা নিলেও মুক্তিযোদ্ধার মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। একই সময়ের ঘটনা বলে দুটি মামলা নিতে রাজি হয়নি বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। তখন যে দুটি ঘর ভাঙচুর করা হয়েছিল সে দুটি ঘরই দুদিনের ব্যবধানে পুড়িয়ে দেয়া হয়। শুক্রবার রাতে ইব্রাহিম সরদারের ঘর ও রবিবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে মুক্তিযোদ্ধার ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়। ঘটনাস্থলে ৩টি পেট্রোল বোমা ও একটি ককটেল বোমা ফেলে গেছে বলেও জানায় ভুক্তভোগীরা। ঘর পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় দোষিদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানায় ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানায় ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীরা আরও জানায় থানা পুলিশ বিভিন্ন কারনে সঠিক তদন্ত করতে পারবে না। তাই সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সিআইডি বা পিবিআইকে তদন্ত দাবি ভুক্তভোগীদের। তবে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস পুলিশের।

স্থানীয়রা জানায়, মাদক কারবার নিয়েই মূলত দ্বন্দ্বের শুরু। এর পরে ঘরবাড়ি ভাঙচুড় ও লুটপাট হয়। এর পরে গত দুদিনে দুটি ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এলাকায় এ দ্বন্দ্বটি একটি বিপদ সংকেত বহন করছে। দ্রুত এর সমাধান ও দোষিদের নিয়ন্ত্রনে না আনতে পারলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। তাই পুলিশের নিরপেক্ষ থেকে কাজ করা উচিৎ। ভুক্তভোগীদের বিচার পেতে সাহায্য করা উচিৎ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাহার সরদার বলেন আমি কোন মারামারি চাইনা আমি শান্তিতে বসবাস করতে চাই কিন্তু খলিল সরদার আমাকে তার সাথে থেকে মারামারিতে জড়াতে বলে। খলিল সরদারের পরিবার মাদক ব্যবসায়ী বলে তার কথায় রাজি হইনি। তাই কিছুদিন আগে একবার ঘরবাড়ি কোপাইছিল আজ দেখেন আমার বসতবাড়ি পোড়াই দিল । স্ত্রীকে নিয়ে তাড়াতাড়ি বের না হতে পারলে দুজনই পুড়ে মরতারম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এর সঠিক বিচার চাই।

ওহিদ তালুকদার বলেন, তার ছেলেকে কুপিয়ে মরাত্বকভাবে আহত করেছে মাদক ব্যবসায়ী খলিল সরদার ও তার লোকজন মিলে। ১৮ জনকে আসামী করে মামলা দিয়েছি। সেদিন মুক্তিযোদ্ধার ঘর কোপানোর ঘটনায় মামলা নিলে আজ পোড়াতে সাহস পেত না। একই সময়ে নাকি দুটি মামলা নেয়া যায় না পুলিশ বলে। আসলে মাদক কারবারিদের সাথে সবাই যোগাযোগ রাখে। তাদের তো কাচা টাকা আছে। নিরহ মানুষের কথা কেউ শুনতে চায় না,তাদের পাশে থাকতে চায় না। সরকারের কাছে দাবি গ্রামে যেন শান্তিতে বসবাস করা যায় তার ব্যবস্থা করে দেন।

 মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতার্ মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, বিগত দিনের ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। ঘর পোড়ার বিষয়টি শুনেছি। ভুক্তভোগী মামলা বা অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দোষিদের ছাড় দেয়া হবে না। 

আরএস
 

Link copied!