Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪,

ফ্ল্যাটে মই দিয়ে পারাপার, ভোগান্তিতে ৩০ পরিবার

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

জুন ১২, ২০২৩, ০৮:২৫ পিএম


ফ্ল্যাটে মই দিয়ে পারাপার, ভোগান্তিতে ৩০ পরিবার

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ এলাকার দেওপাড়া গ্রামে সাফওয়ান টাওয়ারে একটি ফ্ল্যাট কিনেন প্রবাসী দেলোয়ার হোসেন নাদিম। ১০ তলা ফ্ল্যাটের মালিকানা বুঝে নেন তিনিসহ ৩০ পরিবার। ফ্ল্যাটের নকশা অনুযায়ী ফ্ল্যাট বিক্রেতা সামছুল আলম মেম্বার ভবনের উন্নয়ন কাজ অবশিষ্ট রেখে ব্যাংকের দায় দেনায় জর্জরিত হয়ে গা’ ঢাকা দেন। এতে বিপাকে পড়েন ফ্ল্যাটের খরিদ সূত্রে মালিক ৩০টি পরিবার। পরে বাধ্য হয়ে সবাই মিলে নকশা অনুযায়ী সীমানা প্রাচীরসহ বেশকিছু উন্নয়ন কাজ করান।

সবকিছু ঠিকমতো চললেও ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের অনুপস্থিতিতে আবদুর রহমান আরজু নামে এক ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে মূল ফটক ভেঙে চলাচলের রাস্তায় গড়ে তুলেছেন দোকানঘর। এতে শান্তির ফ্ল্যাটটিতে এখন যাতায়াত করতে হচ্ছে মই দিয়ে। শুধু নাদিমই নয় ওই ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন ৩০টি পরিবার।

ফ্ল্যাটের কয়েকজন মালিক ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে আরজু ড্রাইভারের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তার লোকজন নাদিমকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে।

এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৪ জনকে আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী নাদিম। তবে ফ্ল্যাটের মালিক অধিকাংশই অন্য জেলার হওয়ায় তাদেরকে কোনভাবেই পাত্তা দিচ্ছেন না স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের লোক হিসেবে পরিচিত আরজু ড্রাইভার।

কথা হলে ভুক্তভোগী নাদিমসহ আরো কয়েকজন জানিয়েছেন, যেস্থানে আরজু ড্রাইভার দোকানঘর তুলেছেন। সেখানে ফ্ল্যাট বিক্রির চুক্তিপত্রে চলাচলের রাস্তা ও পার্কিংয়ের জায়গা হিসেবে উল্লেখ আছে।

এদিকে আব্দুর রহমান আরজুর দাবি, নিচতলার কিছু অংশ তিনি সামছুল আলম মেম্বারের কাছ থেকে কিনে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। চলাচলের রাস্তা ও মূল ফটক ভাঙার মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হয়েছে।

ভুক্তভোগি নাদিম বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানতপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট দ্বীন ইসলামের ছেলে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার দুপুরে মই হাতে ফ্ল্যাটের নিচ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন নাদিম। প্রথমে দেখে মনে হলো আম পাড়তে কিংবা কোনো গাছে উঠতে যাচ্ছেন তিনি। পরে দেখি তিনি ফ্ল্যাটের ভিতরে প্রবেশের জন্য পিছনে মই দিয়ে কোনভাবে নিজ ফ্ল্যাটে প্রবেশ করছেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা পরিবারের অন্য সদস্যরা ওই ফ্ল্যাটে আর প্রবেশ করতে পারেন নি। শুধু তিনিই নন, এভাবে ৩০টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন চলাচলের রাস্তা ও মূল ফটক ভেঙ্গে দোকানঘর নির্মাণ করার কারণে।

অপরদিকে চলাচলের রাস্তা ও মূল ফটক ভাঙার কারণে মামলা করায় জামিনে এসে বাদীসহ ফ্ল্যাটের অন্যান্য মালিকদের উল্টো হুমকি দিচ্ছেন আরজু ড্রাইভারের লোকজন। এমনটাই জানালেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।

স্থানীয় এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, সামছুল আলম মেম্বার তার কাছ থেকে খরিদ সূত্রে মালিক ফ্ল্যাটের গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। ব্যাংকের দায় দেনার কারণে দেউলিয়া হয়ে গ্রাহকদের ফ্লাটের মালিকানা বুঝিয়ে না দিয়ে তিনি পলাতক রয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজ উদ্দিন জানান, মামলা হওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত চলছে।

আলী/এআরএস

Link copied!