Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

দৌলতপুরে রাস্তার বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরমে

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)প্রতিনিধি

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩, ০৪:০১ পিএম


দৌলতপুরে রাস্তার বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরমে

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আল্লারদর্গা বাজারের মধ্যে দিয়ে সরু রাস্তাা। সেই রাস্তার দু’পাশ ঘেঁষে দখল করে বসানো হয়েছে নানা পণ্যের দোকান। যানবাহন দাঁড়ানো তো দুরের কথা যাত্রী ওঠানামার জায়গাটুকু নেই। ফলে পুরো বাজারজুড়েই তীব্র যানজটে জনদুর্ভোগ চরমে।

সারাদিন যানজটে নাকাল থাকতে হচ্ছে মানুষজনকে। বছরের পর বছর ধরে একই চিত্র কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়কের আল্লারদর্গা বাজারের। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খানাখন্দে ভরা চলাচলের অযোগ্য রাস্তা। রাস্তা সংস্কারের বছর না পেরোতেই রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙাচোরা এই রাস্তা পার হতে গিয়ে প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সব মিলিয়ে বাজারের প্রায় ৫০০ মিটার পার হওয়া যেন যাত্রী ও যানবাহন চালকদের জন্য যুদ্ধের মত অবস্থা।

জেলা সদরসহ দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে দৌলতপুর উপজেলার সংযোগের প্রধান সড়কটির আল্লারদর্গা বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার দুই ধারে অবৈধ দখলদাররা দোকান স্থাপন করে পণ্যের পসরা নিয়ে বসে থাকায় দুই ধারে তিল ধরার জায়গাটুকুও নেই।

রাস্তার দৈর্ঘের তুলনায় যানবাহনের পরিমাণ বেশি হওয়ায় তীব্র যানজট লেগেই থাকে। বাজার পাড়ি দিতে কোন কোন সময় এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। বাজারের দুই পাশে একটি প্রাথমিক ও দুই পাশে তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকায় বাজার পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার সময় শিক্ষার্থীদেরও নাকাল হতে হয়। সড়কটিতে জরুরি বলে কোনো কথা নেই। দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকায় এম্বুলেন্সের মধ্যেই অনেক রোগী মারা যাওয়ার ঘটনার ঘটছে অহরহ। এ অবস্থা নিত্যদিনের।

যানজটের দুর্ভোগের সঙ্গে নতুন মাত্র যুক্ত হয়েছে খানাখন্দে ভরা চলাচলের অযোগ্য সড়ক। আল্লারদর্গা বাজারের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার মাঝখান ডুবে যায়। ফলে এবারের বর্ষায় বাজারের পুরো অংশ জুড়েই সড়ক ভেঙে গেছে। কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের মাটি সরে গিয়ে কোনো কোনো জায়গায় এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত গর্ত হয়েছে।

গর্তসহ ভেঙে পড়া অংশে কাদা পানি জমে থাকায় প্রতিনিয়ত এসব গর্তে পড়ে গাড়ি উল্টে যাচ্ছে, ঘটছে দুর্ঘটনা। বড় গাড়িগুলো কোন মতে পার হতে পারলেও পণ্যবোঝাই ট্রাক, পিকাআপ, ব্যাটারিচালিত আটোরিকশা, ইজিবাইক, ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়ক সংস্কারের বছর না গড়াতেই খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়কের বাসচালক রতন বলেন, ‘আমরা সময়সূচি অনুযায়ী গাড়ি চালাই। সারা রাস্তা ভালোভাবে আসলেও এই বাজারে এসে কষ্ট হয়। এই বাজারে গাড়িতে যাত্রী ওঠা-নামার জায়গাটুকুও নেই। যানজট ও ভাঙা রাস্তার কারণে বাজার পার হতে অনেক সময় এক ঘণ্টা লেগে যায়। এতে যাত্রীরা বিরক্ত হয়। যানজটের পাশপাশি ভাঙাচোরা রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা জালাল উদ্দীন বলেন, ‘বাজারের দুই ধারে পর্যাপ্ত পরিমাণ রাস্তার জায়গা রয়েছে। কিন্তু এসব জায়গা দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রাখা হয়েছে। রাস্তার দুই ধারের জায়গা দখলমুক্ত হলে যানজট সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। বছরের পর বছর ধরে এই বাজার পারাপারে দুর্ভোগ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদাসীন।’

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওবাইদল্লাহ বলেন,‘এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় রাস্তার দুই পাশে দখলমুক্ত করার জন্য তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সেলিম আজাদ খান বলেন, ‘এত দ্রুত কিভাবে রাস্তা নষ্ট হলো সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি ভেঙে যাওয়া অংশটি দ্রুত সংস্কারের জন্য তাদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ভাঙা অংশটি সংস্কারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

এইচআর

Link copied!