Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪,

দিনাজপুরে হঠাৎ ঘুর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড আশ্রয়নের ঘরসহ কয়েকশ বাড়ি

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ০৬:৩৩ পিএম


দিনাজপুরে হঠাৎ ঘুর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড আশ্রয়নের ঘরসহ কয়েকশ বাড়ি

দিনাজপুরের বিরামপুর ঘূর্ণিঝড়ে আশ্রয়নসহ প্রায় শতাধিক বাড়ির ঘরের টিন উড়ে গেছে। এতে দুর্বিষহ জীবনযাপন করেছেন ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার, টিন এবং নগদ অর্থ সহায়তার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে এই বাড়িগুলো ক্ষয়ক্ষতি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো মধ্যে বিরামপুর দিওড় এলাকার বাঁশবাড়িয়া আশ্রায়নসহ ২৮টি , নবাবগঞ্জের  বিনোদনগর ও গোলাপগঞ্জ এলাকার শতাধিকের অধিক এবং হাকিমপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া এলাকার ৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যমতে, জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ১৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও রোববার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত এই ধারা অব্যহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন দিনাজপুর আওহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা আসাদুর জামান আসাদ।
সরেজমিনে বিরামপুর উপজেলার দিওড় ইউনিয়নের বাঁশবাড়ি এলকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে জানা যায়, দুপুরে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ করে ঘূর্ণিঝড়ে সেখানকার চারটি আশ্রয়ণের ঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে। কিছু ঘরের সামনের বারান্দার অংশগুলো বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে অবস্থানরত ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত টিনগুলো কুড়িয়ে জমা করছেন।
ওই আশ্রয়নের ঘরে থাকা মমতা বেগম বলেন, বিরামপুর এলাকায় কদিন থেকেই লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে ঘরের মধ্যে বসে আছি। হঠাৎ করে প্রবল বেগে ঝড় শুরু হয়। ঝড়ে আমার ঘরের উপরের টিনগুলো উড়ে যায়। বারান্দার টিনগুলো উড়ে পাশের ঘরে উপরে পড়ে যায়। একপর্যায়ে আমি ঘরে থাকা চকির নিচে শুয়ে পড়ি।
সাইদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, আজ সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল। পরিবারের কয়েকজন একসাথে ঘরের ভিতর ছিলাম। হঠাৎ বাহিরে ঝড় শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার ঘরের চালাগুলো উড়ে যায়। টিনগুলো এলো মেলো ভাবে উড়তে থাকে।
সাইদুল ইসলাম আরো বলেন, আমরা এমনিতেই অসহায়। আমাদের আর কিছু থাকলো না। রাতে কি খাব, কোথায় ঘুমাবো, এটা আমরা জানি না। শুনতেছি আমাদের নাকি সরকারি ভাবে সহায়তা করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাইনি। আমরা এখন অসহায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুপুরে আর্কষিক ঝড়ে নবাবগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়ন এবং হাকিমপুর উপজেলা খট্টা মাধবপাড়া ইউনিয়নের বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত  হয়েছে। 
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে বিরামপুর উপজেলার আশ্রয়নের চারটি বাড়িসহ বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত  হয়েছে। এছাড়াও কিছু এলাকার গাছ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত  বাড়িগুলো পরিদর্শন করে শুকনো খাবার, একবান টিন এবং নগদ অর্থ দেওয়া হবে।
দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, আমার সংসদীয় আসনের তিনটি উপজেলায় হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে অনেক বাড়িঘর, গাছপালা এবং ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে সব ধরণের সহযোগীতা করা হবে। পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও তাদেরকে সহযোগীতা করবো।

Link copied!