Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪,

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি: বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির বিক্ষোভ

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুর প্রতিনিধি

অক্টোবর ১৫, ২০২৩, ০৬:০৪ পিএম


বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি: বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির বিক্ষোভ

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের পাতরাপাড়া মোড়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কয়লা উত্তোলনের কারণে পাতরাপাড়া গ্রামের বৈদ্যনাথপুর, শিবকৃষ্ণপুর, মথুরাপুর, বাঁশপুকুর মৌজার ৫টি গ্রামের বসতবাড়ি কম্পনে ফেটে যাওয়ায় ভূমি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির বিক্ষোভ মিছিল ও  মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

রোববার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের পাতরাপাড়া মোড়ে বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির সভাপতি নুর মোহাম্মাদ আবুল কালাম আজাদ নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শেষে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

বৈদ্যনাথপুর, শিবকৃষ্ণপুর, মথুরাপুর, বাঁশপুকুর গ্রামের প্রায় ৫ হাজার পরিবারের নারীপুরুষ বিক্ষোভ মিছিল ও মানবন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভ শেষে দুপুর ১২টায় পাতরাপাড়া মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির সভাপতি নুর মোহাম্মাদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, খনি হওয়ার কারণে এলাকার মানুষ মোনে করেছিল আমাদের পরিবর্তন হবে কিন্তু খনি হওয়ার কারণে এখন আমাদের সব সময় আতংকে থাকতে হচ্ছে। শতশত বসতবাড়ি কম্পনের কারণে ফেটে যাচ্ছে। বাড়ির টিউবয়েলে কোন পানি উঠছে না, পাতরা পাড়া গ্রাম থেকে ফুলবাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটির বেহাল অবস্থা, কৃত্রিম ভূমিকম্পনের কারণে ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকা দায় হয়েছে। সব পরিবারের আতংকে কাটে সময়। খনি কর্তৃপক্ষকে বার বার এই এলাকার সমস্যা নিয়ে কথা বললেও তারা আমাদের কোন কথা কর্ণপাত করেন না।

তিনি মানববন্ধনে আরও বলেন, বাড়ি ঘরের ফাটল সংস্কার, রাস্তার সমস্য, পানির সমস্যা ও শিক্ষিতদেরকে কর্মসংস্থান দিতে হবে। আমাদের এই দাবি বাস্তবায়নের মধ্যে রয়েছে বাড়িঘরগুলি কয়লা তোলার কারণে ফেটে যাচ্ছে, আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে তা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, চলাচলের জন্য প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে, তা দ্রুত পুন:নির্মাণ করতে হবে।

সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফান্ড দিতে হবে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর সাথে সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক বেকারদের চাকরি ও ভূমি অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। খনি কর্তৃপক্ষ সমঝোতা চুক্তি ভঙ্গ করে বহিরাগতদেরকে চাকরি দেওয়া বন্ধ করতে হবে, পূর্বের অধিগ্রহণকৃত মসজিদ কবরস্থানগুলোর বিষয়ে জায়গা অধিগ্রহণ করে মসজিদ ও কবরস্থানের জায়গা নির্ধারণ করে দিতে হবে।

পাতরাপাড়া, বৈদ্যনাথপুর, শিবকৃষ্ণপুর, মথুরাপুর ও বাঁশপুকুর গ্রামে বসবাসরত ৫ হাজার পরিবারের মাঝে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের দাবি বাস্তবায়নে খনি কর্তৃপক্ষ ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সংসদ সদস্যকে অবগত করলেও আজ পর্যন্ত কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছেনা। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে আর কতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই গ্রামগুলিতে বসবাস করব? এই এলাকার ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা তোলার কারণে প্রতিনিয়ত দেবে যাচ্ছে।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কর্মকর্তা কর্মচিারিরা লাভবান হলেও এলাকার গ্রামগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা অতিদ্রুত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমরা আর কতদিন এই সংকটে ভুগব? আমরা এখান থেকে অসুস্থ রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে যাব, রাস্তার বেহাল অবস্থা থাকায় অ্যাম্বুলেন্স্ও এই গ্রামগুলিতে আসতে চায় না। তাহলে আপনারা বোঝেন আমরা কিভাবে জীবনযাপন করছি।

ভুক্তভোগীরা জানান, নলকূপে পানি উঠছে না, এ এলাকায় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, স্কুল কলেজ মাদ্রাসাগুলিতে যাওয়ার রাস্তা থাকলেও বর্ষাকালে চলাচল করা সম্ভব হয়না। সমস্ত রাস্তা খনির কারণে মাটির নিচে তলিয়ে গেছে। নেই কোন মসজিদ, নামাজ পড়ার ঈদগাহ মাঠ এবং ফুটবল খেলার মাঠসহ সব ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা এর প্রতিকার চাই ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

পাতারাপাড়া গ্রামসহ বাকি ৫টি গ্রামের ৫ হাজার নারী-পুরুষ স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।

এআরএস 

Link copied!