Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪,

তরমুজ খেতে সেচ সঙ্কট, কোটি টাকা ক্ষতির শঙ্কা

বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনা প্রতিনিধি

মার্চ ৮, ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম


তরমুজ খেতে সেচ সঙ্কট, কোটি টাকা ক্ষতির শঙ্কা

বরগুনার তালতলীতে তরমুজ খেতে সেচ দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছে শতাধিক কৃষক। এতে করে কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে কয়েক কোটি টাকা।

এ বিষয়ে থানা ও ইউএনও অফিসে অভিযোগ দিলেও বিষয়টির তোয়াক্কা করছেন না এমন অভিযোগ বিএডিসি ম্যানেজার ফারুক মোল্লার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের কবিরাজপাড়া এলাকায় গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সমিতির মাধ্যমে সেচ প্রকল্প চালু করা হয়। সেখানে স্থানীয় ফারুক মোল্লাকে সমিতির ম্যানেজার করা হয়। সেচ প্রকল্পের অধীনে ২০ হেক্টর জমি রয়েছে। তবে ফারুক মোল্লার কৃষকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে পানি দিচ্ছেন না তাদেরকে। যার ফলে কাঙ্ক্ষিত ফসল পাচ্ছেন না কৃষকরা। কারণ প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বোরো, আমন ও তরমুজ চাষিরা। ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেও তারা সমাধান পাচ্ছে না বলে জানান স্থানীয়রা। পরে  স্থানীয় কৃষকরা থানায় অভিযোগ দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হলে পুলিশের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন ফারুক। উপায় না পেয়ে কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফারুক মোল্লাকে শুনানির জন্য নোটিশ করেন ইউএনও।

গত ৩ মার্চ শুনানির তারিখ থাকলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে না আসার কথা জানিয়ে দেন তিনি। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ফারুক মোল্লাকে ইএনও অফিসে নিয়ে আসলে শুনানি হয়। সেখানে ফারুক মোল্লা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুচ ফরাজীর মাধ্যমে তরমুজ চাষের জন্য কৃষকদের সেচের পানি দিবেন বলে অঙ্গীকার করেন। তবে পরের দিনই কৃষকদের পানি না দিয়ে উল্টো কৃষকদের হুমকি দিতে থাকেন।

স্থানীয়দের তরমুজ চাষি নজরুল বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে তরমুজ চাষের সেচের অভাবে কষ্টে আছি। সাবেক ইউএনও কাওসার সাহেব, এস.এম সাদিক তানভীর স্যার বারবার আমাদের পানি দেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং প্রতিবছর অস্থায়ীভাবে সমাধান হয়েছে। নতুন ইউএনও আসলেই নতুনভাবে ঝামেলা করেন ফারুক মোল্লা। সাবেক এক সচিবের প্রভাব দেখিয়ে তিনি আমাদের পানি দিচ্ছেন না।

এ বিষয়ে ফারুক মোল্লার সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি কোন কথা বলতে চান না বলে জানান।

বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী মোসাদ্দেক জানান, সেচ প্রকল্পের দেওয়া হয়েছে জমিতে পানি সরবরাহ করার জন্য। স্থানীয় বিরোধ নিয়ে ওই সেচের ম্যানেজার জমিতে সঠিকভাবে পানি দিচ্ছে না বলে অনেক অভিযোগ আছে আমাদের কাছে। গত তিন চার বছর ধরে এমন অভিযোগ আসছে বলে জানতে পেরেছি। এগুলো অস্থায়ীভাবে সমাধানও হয়েছে। তবুও তিনি প্রতিবছর কৃষকদের সঠিকভাবে পানি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, কবিরাজপাড়া এলাকার বিএডিসি সেচের পানি কৃষকদের না দেওয়ার একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, শুনানি করেছি। সেখানে ফারুক মোল্লা কৃষকদের পানি দিবেন মর্মে স্বীকার করেন। তবে এখন পর্যন্ত তিনি কৃষকদের পানি দিচ্ছে না। বিগত কয়েক বছর যাবত সেচ পানি নিয়ে তার বিরুদ্ধে অত্র কার্যালয়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তখন তাৎক্ষণিক পানি সেচের ব্যবস্থা করা হলেও প্রতিবছরই একই ঝামেলা সৃষ্টি করছেন। এ বিষয়ে উপজেলা সেচ কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্থায়ী সমাধেন ব্যবস্থা করা হবে।

তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জমাদ্দার বলেন, বিষয়টি নিয়ে সামনের মাসিক সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন কাজ করতে দেওয়া হবে না।

ইএইচ

Link copied!