Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২০ মে, ২০২৪,

চৌগাছায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে চলছে অনিয়ম-দুর্নীতি

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি:

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি:

মে ৯, ২০২৪, ০৬:৩৯ পিএম


চৌগাছায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে চলছে অনিয়ম-দুর্নীতি

যশোরের চৌগাছায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে চলছে দুর্নীতি ও অনিয়মের মহোৎসব। দেখার যেন কেউ নেই। এ অফিসে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। একটি দলিল রেজিস্ট্রি করতে অফিসে দফায় দফায় দিতে হয় ঘুষ।

তথ্যঅনুসন্ধানে জানা যায়, দলিলের রেট হিসেবে লাখে ৫০০ টাকা, ওয়ারিশ সূত্রের দলিল প্রতি ২৫০০ টাকা, নাম বা যে কোন প্রত্যায়ন বাবদ দলিলে ১০০০ টাকা, আবাসিক উল্লেখ থাকলে দলিল প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা, ডি আর বাবদ ২০০ টাকা, পরচায় যে কোন সমস্যায় ১০০০ টাকা ও রেজিস্ট্রি শেষে টিপ-সহি নিতে ২০০ টাকা ঘুস দিতে হয়। অভিযোগ উঠেছে এ সকল টাকা রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল ডেলিভারি ম্যান শহিদুল ইসলাম আদায় করে থাকেন।
তিনি রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল ডেলিভারি ম্যান পদে নিয়োগ হলেও বর্তমানে এ অফিসের পেশকারের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। দীর্ঘ দিন এভাবে অফিসকে তুষ্ট করেই দলিল রেজিস্ট্রি করছেন চৌগাছার দলিল লেখকরা। তবে পত্রিকায় তাদের নাম প্রকাশ করলে লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন দলিল লেখকরা।

তারা অভিযোগ করেন, দেখার যেন কেউ নেই। এ অফিসে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। চৌগাছা রেজিস্ট্রি অফিসে ২ মে ২০২৪ বাদল মৃধা নামে একজন ব্যবসায়ী জমি রেজিস্ট্রি করতে গেলে এ সকল ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।

এ সকল অভিযোগ নিশ্চিত হতেই সরেজমিন ও মুঠো ফোনে যশোর সদর ও চৌগাছা উপজেলা রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন নেতা ও একাধিক দলিল লেখকের সাথে কথা বলা হয়।

তারা বললেন, ঘুষের অফিসিয়াল নামই “রেট”। এই রেট আমরা গ্রাহকের কাছ থেকে নিয়ে অফিসকে দিয়ে থাকি। চৌগাছা অফিসের শহিদুল ইসলাম এই সমস্ত টাকা প্রতিটি দলিল লেখকের কাছ থেকে আদায় করেন। দিন শেষে সেই টাকা ভাগাভাগি হয়।

মুঠো ফোনে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ২৫ এপ্রিল একদিনেই ১৫৭ টা দলিল রেজিস্ট্রি হয়েছে। আমরা তো ভাই ভাই। আমার সাথে দেখা করেন। একজন সাংবাদিক আপনার সাথে কেনো দেখা করবে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন ভাই মাথা গরম করেন না। আপনি না আসলে আমি আপনার সাথে দেখা করবো। সর্বশেষ কোনো কথায় রাজি করাতে না পেরে তিনি বলেন আমি কোনো টাকা পয়সা নিইনা। আপনি যা পারেন করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে অভিযোগ করেন, বর্তমানে প্রতি বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রির কাজ চলে আসছে। সাব রেজিস্ট্রার না জানলেও এ একদিনেই শহিদুল ইসলাম অনিয়ম করে প্রায় ৩ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে আদায় করেন। সে হিসেবে গড়ে যদি দলিল প্রতি ৩ হাজার টাকাও দেওয়া লাগে তাহলে একদিনেই আয় ৪ লাখ ৭১ হাজার টাকা। শহিদুল ইসলাম যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে দেখার  কেউ নেই।

এ ব্যাপারে চৌগাছা রেজিস্ট্রি অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব-রেজিস্ট্রার অমায়িক বাবুু বলেন, আপনার এ ধরনের কোনো অভিযোগ থাকলে লিখিত দেন। সাংবাদিক কেনো লিখিত অভিযোগ করবে জানতে চাইলে তিনি কথা ঘুরিয়ে বলেন তাহলে তথ্য চাইলে নিয়ম মেনে দরখাস্ত করেন।

বিআরইউ

Link copied!