Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৯ অক্টোবর, ২০২৪,

ইউএনও‍‍`র নাম ভাঙিয়ে ৩১ টন চাল আত্মসাতের চেষ্টা

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪, ০৩:৫৬ পিএম


ইউএনও‍‍`র নাম ভাঙিয়ে ৩১ টন চাল আত্মসাতের চেষ্টা

কুষ্টিয়া জেলার  ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকাশ কুমার কুন্ডু‍‍`র নাম ভাঙিয়ে সরকারি গুদাম থেকে ৩১ টন সরকারি চাল বাইরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম নিজেই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে অন্যত্র থেকে সমপরিমাণ চাল কিনে গুদামজাত করা হয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে ভেড়ামারা খাদ্য গুদাম থেকে দুটি ট্রাকে করে ৩১ টন চাল বাহির করা হয়। এ চাল নিয়ে এলাহি নামক এক ব্যক্তির কাছে বিক্রয় করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৎক্ষণাৎ কয়েকজনকে জানিয়েছিলেন, "এগুলো ত্রাণের চাল। ইউএনও সাহেব এ চাল গুলো পাঠানোর জন্য মৌখিক অর্ডার দিয়েছেন।" তারপরও যখন পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছিল এবং ঘটনার অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করার বিষয়টি জানাজানি হয় সেসময় বাধ্য হয়ে ৭ তারিখ দুপুরের পর অন্যত্র থেকে সমপরিমাণ চাল কিনে এনে গুদামে ঢুকিয়ে দেন আবুল কালাম। ভেড়ামারা খাদ্য গুদাম এলাকাটি সিসি ক্যামেরার আওতাধীন হওয়ায় বিষয়টি সঠিক তদন্ত করলে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।

এদিকে ঘটনার দিন বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কয়েকদিন পর তদন্ত কমিটি তদন্ত করে গুদামের সংরক্ষণ করা চালের কোন গড়মিল খুঁজে পাননি। এ সংক্রান্তে নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে অধিকতর তদন্ত করার দাবি উঠেছে।

অন্যদিকে ভেড়ামারা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল কালামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়ার পর তিনি রিসিভ না করায় সরাসরি খাদ্য গুদামে গিয়ে কয়েকঘণ্টা অপেক্ষা করা হলেও তার সাক্ষাৎ মেলেনি। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কখোনোই সাংবাদিক বা অপরিচিত কারোর ফোন রিসিভ করেন না। এমনকি অধিকাংশ সময় তার দপ্তরে গেলেও তার সাথে সাক্ষাৎ করা সম্ভব হয়না। তিনি অধিকাংশ সময় বিভিন্ন অজুহাতে দপ্তরের বাইরে অবস্থান করে থাকেন।

জেলার ভেড়ামারা উপজেলার নির্বাহী অফিসার আকাশ কুমার কুন্ডু জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।

সংশ্লিষ্ট প্রসঙ্গে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মোফাক্ষারুল ইসলাম বলেছেন, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি তদন্তে গিয়ে চালের স্টকে কোন গড়মিল পায়নি। খুব শীঘ্রই তদন্ত রিপোর্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক স্যারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হবে। সেসময় প্রতিবেদক তার কাছে জানতে চান- আপনাদের গুদাম সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্ত হয়েছে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেভাবে তো করে দেখা হয়নি। প্রয়োজনে করা হবে।

সরাসরি সাক্ষাতে কুষ্টিয়া জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল্-ওয়াজিউর রহমান বলেছেন, তারা শুনেছেন ইউএনও‍‍`র নাম করে কেউ একজন চাল দেওয়ার কথা বলছেন। সেজন্য গুদামে চালের পরিমাণ ঠিক আছে কিনা জানতে তৎক্ষণাৎ একটি তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজেই গুদাম থেকে চাল বিক্রি করে দিয়েছেন এমন বিষয়টি তিনি জানতেন না। এখন এ বিষয়টি নিয়েও তদন্ত করা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

আরএস

Link copied!