ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

সিজারিয়ান অপারেশন কমিয়ে আনতে কাজ করছে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতাল

মো. শরিফ শেখ (সাভার)

মো. শরিফ শেখ (সাভার)

নভেম্বর ১৮, ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম

সিজারিয়ান অপারেশন কমিয়ে আনতে কাজ করছে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতাল

বাংলাদেশে মায়েদের স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের তুলনায় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের হার অনেক বেশী। অত্যন্ত আশঙ্কাজনকভাবে এই হার বাড়ছে এবং সাধারণ মানুষ অনেক আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও তার খরচ বহন করছেন।

২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট এর তথ্যে জানা যায়, বাংলাদেশে ফ্যাসিরিটি বেইজড সিজারিয়ান সেকশনের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ ৬৭ শতাংশ। ক্রমাগত এই হার বেড়েই চলেছে। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও ধরে নেয়া যায় এই হার বর্তমানে ৮০ শতাংশের বেশি।

ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় নারী ও শিশু হাসপাতাল একটি সম্পূর্ণ অলাভজনক হাসপাতাল। এই হাসপাতালটি দীর্ঘদিন যাবত হত দরিদ্র নারী ও শিশুদের অত্যন্ত কম খরচে বিভিন্ন প্রকার চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। প্রখ্যাত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ন্যাশনাল বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. এম কিউ কে তালুকদার প্রতিষ্ঠানটির ট্রাষ্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান।

হাসপাতালটি সিজারিয়ান অপারেশন কমিয়ে আনার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে যাচ্ছে। বছরে গড়ে প্রায় ২ হাজার ডেলিভারির মধ্যে বিগত ২০১৭ সাল পর্যন্ত সিজারিয়ান ডেলিভারির হার ছিল ৫৮ শতাংশ-৭৩ শতাংশ পর্যন্ত। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে হাসপাতালের নিজস্ব স্টাডি প্রটোকলে ১১ টি ইটারভেনশান, প্রসূতি চিকিৎসক ও নার্সদের বিশেষ প্রশিক্ষণ ও মায়েদের কাউন্সিলিং-এর মাধ্যমে ২০১৬ সালের ৬৮ শতাংশ থেকে ২০১৮ সালে ৪২ শতাংশে নেমে আসে। এই পরিসংখ্যানের ২০২৪ সালের তথ্য মতে ৩৭ শতাংশে নেমে আসছে। বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন কে অনুপ্রাণিত করে। তাই এই সিজারিয়ান অপারেশন হারকে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এই হাসপাতালটিকে প্রধান পার্টনার করে ২ বছর মেয়াদি একটি রিসার্চ প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন যা ২০২১ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয়েছিল।

আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালের সাথে আরও ৭টি হাসপাতালকে সহ-পার্টনার হিসাবে সংযুক্ত করে মোট ৮ টি হাসপাতাল গত বছর আগষ্ট মাস থেকে প্রজেক্টটির কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এর প্রকল্পটি ১৩ টি ইনটারভেনশান নিয়ে কাজ করছে।

নরমাল ডেলিভারি প্রাকৃতিক ও পরীক্ষিত পদ্ধতি:

স্বাভাবিক প্রসবপ্রক্রিয়া প্রাকৃতিক ও পরীক্ষিত পদ্ধতি। এটি বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে এবং এর সুবিধা সুস্পষ্ট। নরমাল ডেলিভারির ফলে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি কম থাকে। এ ছাড়া শিশু ও মায়ের দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমায়। নারীদের জন্য স্বাভাবিক প্রসবের সুবিধাগুলো হলো স্তন্যদান তাড়াতাড়ি শুরু করা যায়।

নরমাল ডেলিভারিতে প্রসববেদনা বেশি হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কোনো কাটাকাটির ঝামেলা থাকে না বলে প্রসব–পরবর্তী সময়ে মা খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে পারেন। স্বাভাবিক প্রসবের পর মাত্র ১ দিন হাসপাতালে থাকতে হয় এবং মায়ের প্রসব–পরবর্তী যেমন মৃত প্রসব ও গর্ভপাতের আশঙ্কা কম থাকে। যত্নও অল্প সময়ের জন্য নেওয়া লাগে। ডেলিভারির পর বাড়তি সাহায্যকারী কম লাগে। ওষুধ ও ব্লাড ট্রান্সফিউশন বা রক্ত দিতে হয় কম। ফলে খরচও কম।

জরায়ুর পেশি ও যোনিপথ একসঙ্গে কাজ করে, যাতে শিশুকে নিচে ও বাইরে যেতে সাহায্য করে। নরমাল ডেলিভারিতে সক্ষম নারীরা সিজারিয়ানদের থেকে বেশি কর্মক্ষম হন।

গত এক বছরের কার্যক্রমে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবকে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং প্রায় সবগুলি পার্টনার হাসপাতালেই সিজারিয়ান অপারেশনের প্রবণতা নিম্নমুখী দেখা যাচ্ছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সিজারিয়ান অপারেশনের হার বর্তমানে ৩৭ শতাংশ। যা সামনের দিনগুলোতে এই হার ৩০ শতাংশের ও নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিষ্ঠানটির শতাধিক চিকিৎসক জানান প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৯০০ জন রোগীকে বহিঃবিভাগে সেবা দেন, যাদের মধ্যে বেশীর ভাগই গার্মেন্টস কর্মী।

সিজারিয়ান বা অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি:

স্বাভাবিক প্রসবের তুলনায় সিজারিয়ান করা মায়েদের মৃত্যুঝুঁকি তিন গুণ বেশি। সিজারিয়ান শিশু মায়ের দুধপানে বেশি সমস্যার মুখে পড়ে। সিজারিয়ান অপারেশনে মাকে অস্ত্রোপচারের জন্য যেসব চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়, তা নবজাতকের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বুকের দুধপানে বাধা তৈরি করে।

সি-সেকশনে জন্ম নেওয়া শিশুদের প্রাইমারি পালমোনারি উচ্চ রক্তচাপ পাঁচ গুণ বেশি। সিজারিয়ান শিশুর রক্তে সংক্রমণের হার বেশি, এমনকি থাকে জন্ডিস দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সি-সেকশনে জন্ম নেওয়া শিশু পরবর্তী সময়ে সিজোফ্রেনিয়ার মতো গুরুতর মানসিক রোগে ভোগার ঝুঁকিতে থাকে। সিজারিয়ান শিশুদের মধ্যে অ্যালার্জি ও হাঁপানির প্রবণতা বেশি থাকে। এ ছাড়া ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি ৪৬ গুণ বেশি থাকে।

প্রখ্যাত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ন্যাশনাল বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. এম কিউ কে তালুকদার প্রতিষ্ঠানটির ট্রাষ্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এ হাসপাতালের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হল শিশুদের জন্মের পরপরই মায়ের দুধ খাওয়ানো নিশ্চিত করা। আমরা মনে করি এটা করলে শিশু মূত্যু এবং অসংক্রামক ব্যাধি, যা বর্তমানে বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করছে তা কমানো যাবে। এখানকার সেবার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী যারা সেবার মূল্য পরিশোধ করতে অপারগ তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। প্রায় দুই দশকের সময়কালে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কাউকে সেবামুল্য দিতে না পারার কারণে ফেরত দেয়া হয়নি। এ হাসপাতাল কম খরচে উঁচু মানের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

বিআরইউ
 

Link copied!