শরীফুজ্জামান, বাসাইল (টাঙ্গাইল)
জুলাই ১৩, ২০২৫, ০২:৪০ পিএম
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১,৯৬১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৩৭ জন ফেল করেছে। উত্তীর্ণ হয়েছে ১,০২৪ জন শিক্ষার্থী, যার মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৪০ জন।
শনিবার প্রকাশিত ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে।
উপজেলার ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১,৬০৭ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ৮০৯ জন পাস করেছে এবং ফেল করেছে ৭৯৮ জন। দশটি বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ জন। এ পর্যায়ে মোট পাসের হার ৫০.৩৪ শতাংশ।
অপরদিকে দাখিল (সমমান) পরীক্ষায় ৩৫৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২১৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ১৩৯ জন ফেল করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন। পাসের হার ৬০.৭৩ শতাংশ।
ভোকেশনাল শাখায় তুলনামূলক ভালো ফলাফল
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ভোকেশনাল শাখায় তিনটি প্রতিষ্ঠানের মোট ১০৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ৮ জন ফেল করেছে। এখান থেকে ২১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
ফলাফল বিপর্যয়ে সমালোচনার ঝড়
এতো সংখ্যক শিক্ষার্থীর অকৃতকার্য হওয়ার ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
সচেতন মহল মনে করছেন, মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি, বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি, কিশোর গ্যাংয়ের প্রভাব এবং কিছু শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদাসীনতাই এই ফলাফল বিপর্যয়ের পেছনে মূল কারণ।
প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ফলাফল পর্যালোচনা
বাসাইল গোবিন্দ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৫ জনের মধ্যে ৪৪ জন পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন।
বাসাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৫০ জনের মধ্যে ১০০ জন পাস, ৯ জনের জিপিএ-৫।
হাজী মালিক মাজেদা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯৩ জনের মধ্যে পাস করেছে মাত্র ১১ জন।
মিরিকপুর গঙ্গাচরণ তপশিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৬ জনের মধ্যে পাস করেছে ২৯ জন।
পূর্ব পৌলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০১ জনের মধ্যে পাস করেছে ২৪ জন।
কাঞ্চনপুর কে.জি.আর.কে. উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৭ জনের মধ্যে পাস করেছে ৩২ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন।
দাখিল মাদ্রাসার ফলাফল
সুন্না সম্মিলিত আলিম মাদরাসায় ৪৫ জনের মধ্যে ২৯ জন পাস করেছে।
কাঞ্চনপুর এলাহিয়া ফাজিল মাদরাসায় ৩৫ জনের মধ্যে পাস করেছে ২৬ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন।
হাবলা টেংগুরিয়া পাড়া ফাজিল মাদরাসায় ৪২ জনের মধ্যে ৩৩ জন পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন।
ভোকেশনাল ফলাফল (প্রতিষ্ঠানভিত্তিক)
বাসাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫০ জনের মধ্যে ৪৫ জন পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬ জন।
সিংগার ডাক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৩ জনের মধ্যে ৪১ জন পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন।
বাথুলীসাদী লাইলী বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ জনের মধ্যে ৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।
বাসাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান বলেন, “ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে বের করতে দ্রুত প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, অতিরিক্ত অনলাইন ব্যবহারসহ একাধিক কারণে পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে। এসব বিষয় চিহ্নিত করে শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপ করে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।”
ইএইচ