কিশোরগঞ্জে স্কুল ভবন নির্মাণে অনিয়ম, তদন্তের আশ্বাস ইউএনওর

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের পিতলগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবনির্মিত তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। 

ভবনটির প্লাস্টার হাতে ধরলেই খসে পড়ে, দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, নির্মাণ কাজে দুর্নীতি ও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের ফলেই ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাকিয়া নূর লিপি। ২০২৩ সালে ‘এস. এন. এন্টারপ্রাইজ’ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ শুরু করে। কাজের শুরু থেকেই নিুমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ উঠতে থাকে।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাথী আক্তার ও স্বর্ণা আক্তার বলেন, “ভবনের প্লাস্টারে ফাটল, আর হাত লাগালেই উঠে আসে। আমরা নিচে যেতে ভয় পাই, জীবন নিয়ে আতঙ্কে থাকি।”

স্থানীয় অভিভাবক মো. বিল্লাল উদ্দিন মণ্ডল বলেন, “আমার দুই ছেলে এখানে পড়ে। ওরা বলে, ভবনের দেয়াল ছুঁলেই প্লাস্টার উঠে আসে। সরেজমিনে এসে দেখি কথাটা সত্যি। মেয়াদোত্তীর্ণ সিমেন্ট ও নিম্নমানের বালু ব্যবহার করা হয়েছে।”

স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, “স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। কয়েকশ’ শিক্ষার্থী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমি চাই, পুরো ভবনের প্লাস্টার খুলে নতুন করে করা হোক।”

সাইট ম্যানেজার মো. ইমন বলেন, “আমি শুধু তদারকি করেছি। ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবেই কাজ করেছি।”

পিআইও কর্মকর্তা বলেন, “ভবনের পাইলিং ও কলামের কাজ ঠিক আছে। তবে লোকাল বালু, মেয়াদোত্তীর্ণ সিমেন্ট ও পানির ঘাটতির কারণে এমন সমস্যা হয়েছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, “ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি এবং সরেজমিনে যাচাই করে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ইএইচ