ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

চৌগাছায় যুদ্ধক্ষেত্রের স্মৃতি বিলুপ্তির পথে, বেহাল ঐতিহাসিক সড়ক

এম এ মান্নান, চৌগাছা (যশোর)

এম এ মান্নান, চৌগাছা (যশোর)

জুলাই ১৮, ২০২৫, ০৭:০০ পিএম

চৌগাছায় যুদ্ধক্ষেত্রের স্মৃতি বিলুপ্তির পথে, বেহাল ঐতিহাসিক সড়ক

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত যশোরের চৌগাছা উপজেলার গরীবপুর গ্রামের স্মৃতি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। 

১৯৭১ সালের ২১ ও ২২ নভেম্বর গরীবপুর-জগন্নাথপুর এলাকায় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সঙ্গে পাক হানাদার বাহিনীর মধ্যে তীব্র সম্মুখযুদ্ধ হয়। সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধক্ষেত্র সংলগ্ন গরীবপুর নিউ মার্কেট মোড় থেকে পূর্বপাড়া গোপাল মণ্ডলের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা বর্তমানে বেহাল অবস্থায় রয়েছে।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি কাদায় পরিণত হয়। সৃষ্টি হয় বড় বড় গর্ত ও জলাবদ্ধতা। এতে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন শিশু শিক্ষার্থী, সেবা নিতে আসা রোগী, নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লি ও ভ্যান-ইজিবাইক চালকরা।

স্থানীয় বাসিন্দা রফিউদ্দিন বলেন, “এই রাস্তার পাশ দিয়েই যুদ্ধ হয়েছিল। এই পথেই মুক্তিযোদ্ধারা প্রবেশ করেছিলেন। অথচ এখন শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না, ভ্যানচালকরা বসে থাকে বেকার।”

আরেক বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, “যুদ্ধক্ষেত্রের দুই পাশে স্মৃতি বহনকারী এই রাস্তার দু-এক জায়গায় কিছু সলিং করা হলেও পুকুর ভাঙন ও পানির চাপে তা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য আশিকুর রহমান বলেন, “রাস্তাটিতে পিচঢালাইসহ পূর্ণ সংস্কার, প্যালাসাইড নির্মাণ ও কালভার্ট স্থাপন জরুরি। প্রতিদিন প্রায় এক হাজার মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন, কিন্তু সড়কটি এখন কার্যত অচল।”

মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর ঈদের দিন দুপুর ২টায় পাক হানাদার বাহিনী গরীবপুর-জগন্নাথপুর মাঠে গোলাবর্ষণ শুরু করে। শুরু হয় তীব্র ট্যাংক যুদ্ধ, যা এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়—বাংলাদেশের ইতিহাসে যা এক বিরল ঘটনা। ওই যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী ৭টি ট্যাংক হারিয়ে চৌগাছা এলাকা থেকে পিছু হটে চট্টগ্রামে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের' আহ্বায়ক রাশিদুল ইসলাম রিতম বলেন, “এই রাস্তা শুধু চলাচলের পথ নয়, এটি ইতিহাসের পথে হাঁটার জীবন্ত প্রতীক। তার এই করুণ অবস্থা নতুন প্রজন্মকে ভুল বার্তা দেয়। এটি কেবল উন্নয়নের দাবি নয়, এটি ইতিহাস ও জাতীয় চেতনার প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ববোধ।”

চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী রিয়াসাত ইমতিয়াজ জানান, “গরীবপুর সড়কটি ভিপিপি প্রকল্পে প্রস্তাব আকারে উর্ধ্বতন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে এবং তালিকাভুক্ত হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।”

অঞ্চলবাসী দাবি তুলেছেন, গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবাহী এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি প্যালাসাইড, কালভার্টসহ প্রয়োজনীয় উন্নয়নকাজ হাতে নিতে হবে। কারণ, এটি শুধুই একটি রাস্তা নয়—এটি একটি জাতির আত্মত্যাগ ও সাহসিকতার ইতিহাস বহনকারী প্রতীক।

ইএইচ

Link copied!