নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া
আগস্ট ৭, ২০২৫, ০৫:২১ পিএম
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সন্ত্রাসীদের প্রহরায় পদ্মা নদী থেকে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন চলছে।
স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতা এবং প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় দীর্ঘদিন ধরেই নদী থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজায় ড্রেজার ও বলগেট দিয়ে নিয়মিতভাবে চলছে এই অবৈধ উত্তোলন।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, প্রতিবাদ করলেই সন্ত্রাসীদের হুমকি এবং গুলির মুখে পড়তে হচ্ছে। ইতোমধ্যে নদীর ভাঙনে অনেকেই বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। ঝুঁকিতে পড়েছে ফিলিপনগর-মরিচা স্থায়ী বাঁধ।
স্থানীয় কোলদিয়াড় গ্রামের বাসিন্দা আতর আলী ফরাজী বলেন,“প্রতিদিন ৫০–৬০টা বালুবাহী বলগেট যাতায়াত করে। আমাদের বাড়িঘর এখন একেবারে পদ্মার কিনারায় চলে এসেছে। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।”
জানা গেছে, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মেসার্স সরকার ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান তাদের ইজারাকৃত এলাকার সীমা ছাড়িয়ে দৌলতপুরের ভেতরে বালু উত্তোলন করছে।
যদিও ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক এস.এম. একলাস আহমেদ জানান,“আমাদের ইজারা রাজশাহীর মধ্যে সীমিত। দৌলতপুরে কেউ উত্তোলন করলে তা বেআইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”
গত ১১ জুলাই ভেড়ামারা উপজেলার ফয়জুল্লাপুর ঘাটে সন্ত্রাসীরা স্পিডবোটে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে স্থানীয় এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
বালু উত্তোলনের বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন,“ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন,“অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমাদের জানা আছে। অভিযান চালানো হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। শিগগিরই বাঘা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও পদ্মা নদীতে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণেই সন্ত্রাসীদের দাপটে জীবন, জমি ও নিরাপত্তা—সবকিছুই আজ হুমকির মুখে।
ইএইচ