Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা চান ব্যবসায়ীরা 

মো. মাসুম বিল্লাহ

মে ৩১, ২০২২, ০৭:৫১ পিএম


ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা চান ব্যবসায়ীরা 

ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে করোনাকালে দেয়া বিশেষ সুবিধা (ঋণ শ্রেণীকরণ না করা) চলতি বছরের (২০২২ সাল) ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ী নেতারা।

মঙ্গলবার (৩১মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ব্যবসায়ীদের এক বৈঠকে এ দাবি জানান তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। 

তিনি বলেন, করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক যে মন্দা চলছে তার সাথে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। আপাত দৃষ্টিতে সব সাভাবিক মনে হলেও বাস্তবে এখনো সমস্যা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। তাই ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ সুবিধা (খেলাপি না করা) চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি। গভর্নর বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। 

জসীম উদ্দীন জানান, আমাদের দেশের ব্যাংকগুলোতে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণের জন্য গভর্নরের কাছে একটি বিশেষ তহবিল গঠন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কারণ ব্যবসার জন্য লংটাইম ফাইন্যান্সিং খুবই জরুরী। তাছাড়া আমরা রেমিট্যান্স প্রণোদনা আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি। একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা দেশের বাইরে থেকে রেমিট্যান্স পাঠাবেন তাকে কিছু সু্যােগ-সুবিধা দিলে উৎসাহিত হন। 

তিনি বলেন, আমাদের দেশে আসলে তাদের সিআইপিসহ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে কিন্তু যারা বিদেশে থেকে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে যাচ্ছে তাদের সেখানে গিয়ে তাদের জন্য কিছু করা দরকার। 
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, এফবিসিসিআই'র বিষয়গুলো আমরা বিবেচনা করে দেখব। তবে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত জানানো যাচ্ছে না। এছাড়া রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একক ভাবে কোন সিদ্ধান্ত নেবে না। এ বিষয়টি সরকারের সাথে সম্পর্কযুক্ত, তাই সরকারের সাথে আলোচনা করে সবদিক বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে, রেমিট্যান্স যারা পাঠাচ্ছেন তাদের জন্য বাৎসরিক একটি বোনাসের ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রিয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে।
 
প্রসঙ্গত, গত বছরের ঋণের কিস্তির ১৫ শতাংশ জমা দিলে খেলাপি না করার নির্দেশনা ছিল, যার মেয়াদ গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মহলের চাপে খেলাপি ঋণ কমানোর এ সুবিধা আরো ২০ দিন মৌখিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছিল। সুবিধা শেষ হয়ে যাওয়ায় বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ঋণ শ্রেণিকরণ করার কথা রয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ঋণ এখনই খেলাপি না করে এ সুবিধা ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চাপ দিচ্ছে। 

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশেষ সুবিধার সুযোগ নিয়ে অনেকেই ইচ্ছাকৃত খেলাপি থাকছে। যা দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত এ সুবিধা আর না বাড়ানো। 

করোনার কারণে ২০২০ সালজুড়ে কোনো টাকা পরিশোধ না করলেও গ্রাহকদের খেলাপি করা যাবে না এমন সুবিধা দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালে বিশেষ সুবিধার নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়।

বলা হয়, ডিসেম্বরের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ পরিশোধ করেই খেলাপি হবেন না গ্রাহক। সবশেষ ১৫ শতাংশ জমা দেয়ার সুযোগ দিয়ে ৩১ ডিসেম্বরের পর আর সময় না বাড়ানোর ঘোষাণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরও অনেকে কিস্তি পরিশোধ না করলে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে মৌখিকভাবে আরও ২০ দিন সময় বাড়ানো হয়েছিল।


রেদওয়ান/ইএফ

Link copied!