ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

নানা কর্মসূচিতে জুলাই স্মরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ২, ২০২৫, ১২:২৪ এএম

নানা কর্মসূচিতে জুলাই স্মরণ
  • মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
  • বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর নানা কর্মসূচি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। 

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদ?যাপন উপলক্ষে সরকারের উদ্যোগে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালা শুরু হবে ১ জুলাই। মাঝেমধ্যে বিরতি দিয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত এ অনুষ্ঠান চলবে। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘জুলাই স্মৃতি উদ?যাপন অনুষ্ঠানমালা’। 

ঘোষিত অনুষ্ঠানমালা অনুযায়ী ১ জুলাই মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে। এ ছাড়া জুলাই ক্যালেন্ডার দেয়া হবে এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডের খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির সূচনা করা হবে। এটি চলবে আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত। একইভাবে অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া দেশের ছোট বড় রাজনৈতিক দলগুলোও বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। 

ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার থেকে এসব কর্মসূচির বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।

১ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত তাদের ঘোষিত  ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ নামে কর্মসূচি পালন শুরুও হয়েছে। রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টি। 

এ ছাড়া ১৬ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী শহীদ দিবস’ উপলক্ষে দোয়া-মাহফিল ও স্মরণসভা, ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার জুলাই ঘোষণাপত্র ও ইশতেহার পাঠ এবং ৫ আগস্ট ‘ছাত্র-জনতার মুক্তি দিবস’ উদযাপন করবে দলটি। 

অভ্যুত্থানের বর্ষফূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপিও। ৩০ জুন শহীদ মিনারে (রাত) ছাত্রদলের উদ্যোগে আলোয় আলোয় স্মৃতি সমুজ্জলের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়। পরে আলোচনা সভা, রক্তদান, গ্রাফিতি, পথনাটক, ফুটবল টুর্নামেন্ট, শিশু অধিকারবিষয়ক অনুষ্ঠান, ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ ২২টি ভিন্নধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান’কে স্মরণ করবে বিএনপি। ৬ আগস্ট পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে। 

গতকাল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে শহীদ পরিবারের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ‘জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মাসব্যাপী কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীও। 

গতকাল ১ জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদেও জন্য দেশব্যাপী দোয়া কর্মসূচি পালন করে দলটি। এরপর আজ বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত (২ থে?কে ৪ জুলাই) দরিদ্র, অসহায়, দুস্থ ও এতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণ করবে জামায়াত। ৮ থে?কে ১৫ জুলাই শহীদ প?রিবার এবং আহতদের স?ঙ্গে সাক্ষাৎ, মতবিনিময় ও দোয়া করা হবে। ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে রংপুরে আলোচনা সভার আয়োজন করবে জামায়াত। এ ছাড়া ১৯ জুলাই জামায়াতের ৭ দফা বাস্তবায়নে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করা হবে। 

একই দিনে শহীদ পরিবারের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন জামায়াত আমির। এ ছাড়া সভা-সিম্পোজিয়াম, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ একাধিক কর্মসূচি রয়েছে জামায়াতের। ৫ আগস্ট দেশব্যাপী গণমিছিলের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। এ ছাড়া ছাত্রশিবির, আপ বাংলাদেশসহ একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। 

জুলাই স্মৃতি : ঠিক এক বছর আগে, জুলাইয়ের এই দিনগুলোতে কোটা সংস্কার আন্দোলন শক্তিশালী হতে শুরু করে। কে জানতো, সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে একটি সাধারণ আন্দোলন রূপ নেবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থানে। ছাত্র-জনতার ওই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হয়েছিল। বছর ঘুরে আবারও ফিরে এলো সেই মহাকাব্যিক রক্তিম জুলাই। গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলনটি অবশ্য শুরু হয়েছিল তারও আগে। 

সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে যে পরিপত্র জারি করা হয়, ৫ জুন সে পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। রায় ঘোষণার পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বৈঠক করেন এবং রায় বাতিলের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে ৬ জুন কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। একইদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এভাবে কয়েকদিন কর্মসূচি পালনের পর ৩০ জুন পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনকারীরা। ঈদের ছুটির কারণে আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়লেও ১ জুলাই থেকে তা শক্তিশালী হতে থাকে। শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন। 

তারা শাহবাগ থেকে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি দেন এবং ঢাকাসহ সারাদেশ অচল করে দিতে শুরু করেন।  এই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গড়ে ওঠা ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ নামে সংগঠনের অধিকাংশ শীর্ষ নেতা যুক্ত ছিলেন। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল সংগঠন, অ্যাক্টিভিস্ট ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ রাখতে ছাত্রসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের এই প্ল্যাটফর্মের বাইরে রাখা হয়। 

১৪ জুলাই রাতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে বলেন, (কোটা) মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যে ফুঁসে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। তারা মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল বের করেন এবং প্রথম সরাসরি ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘাতে জড়ান। ১৫ জুলাই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত তিনশর বেশি শিক্ষার্থীর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ফেটে যায়। 

এদিন নারীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়।   আন্দোলন ভিন্ন মোড় নেয় ১৬ জুলাই। এদিন পুলিশের গুলিতে প্রথম শহীদ হন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। দুই হাত পেতে দাঁড়িয়ে থাকা নিরস্ত্র সাঈদের বুকে একেবারে সামনে থেকে গুলি করে পুলিশ। যার ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মূলত আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ড পাল্টে দেয় আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি।

Link copied!