জাবি প্রতিনিধি:
জুলাই ২৩, ২০২৫, ০১:০৮ পিএম
রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রাণহানির ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বটতলা এলাকায় শেষ হওয়া মিছিলে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘সেনা ঘাঁটি শহরে, শিশুরা কেন কবরে’, ‘মাইলস্টোনে লাশ কেন, ইউনিস জবাব দে’, ‘জবাব তোমায় দিতেই হবে, নইলে গদি ছাড়তে হবে’—সহ নানা প্রতিবাদী ভাষ্য।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তী বলেন, ‘যে শিশুদের আকাশের দিকে তাকিয়ে স্বপ্ন দেখার কথা, তারা আজ লাশ হয়ে ফিরেছে। শিশুদের টিফিনবক্স ফিরেছে, শিশুরা ফেরেনি। এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার নির্মম ফল।’
তিনি আরও বলেন, ‘রানা প্লাজার ধস থেকে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড—সবই ছিল কাঠামোগত অবহেলার দৃষ্টান্ত। আজও সেই চিত্র বদলায়নি। রাষ্ট্র কোনো জবাব দেয়নি, বরং চাপা দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।’
বটতলার আরেকটি মিছিলে ছাত্র সংগঠনের নেতারা আরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘এক বছর ধরে শুধু সংস্কার সংস্কার শুনছি। কিন্তু সেই সংস্কারে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। জনগণের জীবনের কোনো মূল্য নেই এ সরকারের কাছে।’
জাহাঙ্গীরনগর ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার বলছে ২৯ জন নিহত, অথচ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক মিলিয়ে প্রকৃত সংখ্যা দুই শতাধিক হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। এই সংখ্যা গোপন করা মানবতা ও দায়িত্ববোধের চরম অবক্ষয়।’
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘যে প্রশাসনকে আমরা দুই হাজার শহিদের রক্তে বিদায় দিয়েছি, সেই নির্লজ্জতার পুনরাবৃত্তি করবেন না। জনগণ জানে, প্রয়োজন হলে তারা আবারও রাষ্ট্রকে পাল্টে দিতে পারে।’
সমাবেশে বক্তারা নিরপেক্ষ তদন্ত, প্রকৃত নিহতদের তালিকা প্রকাশ, দায়ী সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষের বিচার এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরুর দাবি জানান।
বিআরইউ