Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

নিজের সৎভাইকে গৃহবন্দি রাখার আদেশ দিলেন জর্ডানের বাদশাহ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মে ২১, ২০২২, ০৩:৩০ পিএম


নিজের সৎভাইকে গৃহবন্দি রাখার আদেশ দিলেন জর্ডানের বাদশাহ

অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া রাজপুত্র হামজাকে গৃহবন্দি রাখার আদেশ দিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ ২। সম্পর্কে তিনি প্রিন্স হামজার সৎভাই হন।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ আদেশ দেন বাদশাহ। সেখানে নিজের সৎভাই ‘মানসিকভাবে সুস্থ নন’ উল্লেখ করে আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রিন্স হামজার বিষয়ে একটি ডিক্রি জারি হয়েছে। এই ডিক্রি অনুযায়ী, এখন থেকে তাকে সবসময় ঘরে অবস্থান করতে হবে। বাইরের কারো সঙ্গে যোগাযোগ ও কোথাও যাতায়াত করতে পারবেন না তিনি।’

‘রাজপরিবার বিষয়ক আইন অনুযায়ী গঠিত পরিষদের সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতেই জারি করা হয়েছে এ ডিক্রি,’ বিবৃতিতে বলেন বাদশাহ।

দেশটির একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে জর্ডানের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে অভ্যুত্থান ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিলেন প্রিন্স হামজা। অভুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল বাদশাহ আবদুল্লাহকে ক্ষমতাচ্যুত করা।

তবে সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি; বরং ‘ষড়যন্ত্রে’ যুক্ত থাকার অভিযোগে দুই জন সরকারি কর্মকর্তাকে গত বছর গ্রেপ্তার ও ১৫ বছর করে কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত দুই সরকারি কর্মকর্তা হলেন জর্ডানের রাজকীয় আদালতের সাবেক প্রধান বিচারপতি বাসেম আওয়াদুল্লাহ ও সৌদি আরবে জর্ডানের সাবেক রাষ্ট্রদূত শরিফ হাসান বিন জাইদ। রাজকীয় আদালতে বিচার চলাকালে অপরাধ স্বীকার করায় দু’জনই বর্তমানে কারাগারে আছেন।

তবে প্রিন্স হামজাকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। তার প্রতি বড় ধরনের শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি এতদিন।

তবে গত মাসে জর্ডানের রাজকীয় আদালত একটি বিবৃতি দেন। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, বাদশাহকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন হামজা।

সেই বিবৃতির প্রতিবাদ করে হামজা বলেন, তিনি ‘প্রিন্স’ পদবি ছাড়তে প্রস্তুত আছেন। তার এক মাস পরই তাকে গৃহবন্দি ঘোষণা করা হলো।

বৃহস্পতিবারের বিবৃতিতে বাদশাহ আবদুল্লাহ নিজের সৎভাই সম্পর্কে বলেন, ‘সঠিক পথে নিজেকে নিয়ে আসতে তাকে (প্রিন্স হামজা) প্রচুর সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেসবের প্রত্যেকটিকেই সে ব্যর্থ করেছে।’

‘মানসিকভাবে সে সুস্থ নয়, এক ধরনের বিভ্রান্তিতে ভুগছে এবং এই বিভ্রান্তিও নতুন কোনো ব্যাপার নয়।’

‘সে বরাবরেই জাতীয় স্বার্থের চেয়ে নিজের স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে ভালোবাসে। বছরের পর বছর ধরে যে পথে সে চলছে, তা ভুল। বহুবার সে নিজেকে সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং প্রত্যেকবারই সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।’

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিচারে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মধ্যে জর্ডান বেশ ব্যতিক্রম। এশিয়ার এই অস্থিরতাপূর্ণ অঞ্চলে স্থিতিশীলতার অন্যতম স্তম্ভ মনে করায় জর্ডানকে। দেশটিতে কখনও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা যায়নি।

সেই হিসেবে গত বছর যে অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছিল, সেটি জর্ডানের রাজনৈতিক ইতিহাসে অতি বিরল ঘটনা বলেই মনে করেন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

আমারসংবাদ/আরএইচ

Link copied!