আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মে ৭, ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম
‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চালানো সামরিক অভিযানের পর ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। সরকারি দল থেকে বিরোধী দল—সব পক্ষই সেনাবাহিনীর পদক্ষেপকে নিয়ে মন্তব্য করছেন, কেউ সমর্থন জানাচ্ছেন, কেউ আহ্বান জানাচ্ছেন জাতীয় ঐক্যের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে একটি প্রতীকী ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “বিশ্বের উচিত সন্ত্রাসবাদের প্রতি কোনও সহনশীলতা না দেখানো।” ছবিটিতে ইংরেজি ‘সিন্দুর’ শব্দের ‘O’ অক্ষরের ভেতরে একবাটি লাল সিঁদুরের চিত্র তুলে ধরা হয়—যা হিন্দু বিবাহিত নারীদের ঐতিহ্যগত চিহ্ন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “পহেলগামে আমাদের নিরীহ ভাইদের নির্মম হত্যার প্রতিশোধ নিতেই এই অভিযান চালানো হয়েছে। মোদি সরকার দেশ এবং জনগণের ওপর আক্রমণের উপযুক্ত জবাব দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।” তিনি সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের ব্যাপারে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিজেপি নেতাদের প্রতিক্রিয়া
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং হিন্দি ভাষায় লিখেছেন, “ভারতমাতা কি জয়”, আর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সংক্ষিপ্তভাবে বলেছেন, “জয় হিন্দ, জয় হিন্দ-এর সেনা”।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানও লিখেছেন, “ভারত মাতা কি জয়, জয় হিন্দ-এর সেনা।”
জম্মু-কাশ্মীরের বিজেপি নেতা আলতাফ ঠাকুর সংবাদ সংস্থা ANI-কে বলেন, “নয়টি জায়গায় হামলা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।”
বিরোধী দলগুলোর অবস্থান
বিরোধী দল কংগ্রেসও সেনাবাহিনীর পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছে। লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনীর প্রতি গর্ব হচ্ছে। জয় হিন্দ।”
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, “এই সময়ে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। পহেলগামে হামলার পর থেকেই কংগ্রেস সেনাবাহিনী ও সরকারের যেকোনো পদক্ষেপে পাশে ছিল এবং থাকবে।”
অন্যান্য রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এআইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসি পাকিস্তানের ভেতরের সন্ত্রাসী শিবিরে ভারতের ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’কে স্বাগত জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও `অপারেশন সিন্দুর`-এর প্রশংসা করে লিখেছেন, “জয় হিন্দ, জয় ইন্ডিয়া।”
সাম্প্রতিক হামলার পটভূমি
ভারত সরকার দাবি করেছে, বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের মোট নয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এসব হামলায় পাকিস্তান ২৬ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। পাল্টা হামলায় পাকিস্তান কামান থেকে গোলা নিক্ষেপ করলে তিনজন ভারতীয় নিহত হন। পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার দাবিও করেছে। -বিবিসি
আরএস
